মুন্সীগঞ্জে জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেলো শতাধিক গরু

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন খালে জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে শতাধিক গরু। একের পর এক ভেসে উঠছে মরা গরু। এতে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। ভুক্তভোগীদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে গ্রামের পরিবেশ। শুক্রবার (২৩ মে) বিকেল ৪টার দিকে হোসেন্দী ইউনিয়নের ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন খালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, কৃষক মহসিনের ৪টি, নাহিদের ৩টি, ইয়ানূরের ৩টি, এমার ২টি, মাসুমের ১টি, আবুল হোসেনের ৩টি, শাহজালালের ৩টি, কবির হোসেন খানের ৩টি, শরিফ হোসেনের ৩টি, তরিকুল ইসলামের ২টিসহ শতাধিক গরু পানির তোড়ে ভেসে গেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজকের দিনটি আমাদের গ্রামবাসীর জন্য একটি দুঃখের দিন হয়ে থাকবে। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সবারই গরু রয়েছে। ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন চরে ঘাস খাইয়ে গরুগুলো লালন-পালন করেন সবাই। গ্রাম এবং চরের মধ্যে ছোট একটি খাল আছে। খাল পাড়ি দিয়ে চরে গিয়ে ঘাস খেয়ে প্রতিদিন বিকালে গরুগুলো আবার গোয়ালে ফিরে আসে। শুক্রবার (২৩ মে) বিকেলে খাল পাড় হওয়ার সময় হঠাৎ জোয়ারের পানির তোড়ে এবং কচুরিপানার চাপে শতাধিক গরু ভেসে যায়। এর মধ্যে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ৪১টি মৃত গরু উদ্ধার করা হলেও এখনো পর্যন্ত প্রায় ৬০টির মতো গরু নিখোঁজ। এতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা পাগলপ্রায়।
ভুক্তভোগী কৃষক মহসিন বলেন, এমন ঘটনা জীবনেও ঘটেনি। এমন কিছু ঘটতে পারে তা আমরা চিন্তাও করিনি। আমার ৪টি গরু পানির তোড়ে ভেসে গেছে। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি, পথের ফকির হয়ে গেছি।
ভুক্তভোগী আবু তালেব সুজন খান বলেন, ভাটি বলাকী গ্রামের ২৫/৩০টি পরিবারের ৫ শতাধিক গরু আছে। গরুগুলো গ্রামের পার্শ্ববর্তী চরে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ঘাস খেয়ে চর থেকে গ্রামের দিকে ফেরার পথে তীব্র স্রোতে শতাধিক গরু পানির সঙ্গে ভেসে যায়। এখনো পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত গরুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নেয়ামুল হক বলেন, দেখলাম কচুরিপানার চাপে ও জোয়ারের পানির তোড়ে একের পর এক গরু ভেসে যাচ্ছে। এ রকম অদ্ভুত ঘটনা কখনো দেখিনি আমরা।
এ ব্যাপারে হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, এ রকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আরাফাত বিন ছিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে রয়েছি আমরা। আমাদের অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা তাদের সাহায্য করবো।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: