আগামী এপ্রিলের মধ্যে যশোর-ঢাকা রুটে চালু হচ্ছে আরেকটি ট্রেন

ছবি: সংগৃহীত
নতুন কোচ পাওয়া সাপেক্ষে আগামী বছর এপ্রিলের মধ্যে যশোর-ঢাকা রুটে আরেকটি ট্রেন চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন।
শনিবার (২১ জুন) বিকালে যশোর রেলওয়ে জংশন পরিদর্শন শেষে বৃহত্তর যশোর জেলা রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এর আগে কমিটির নেতৃবৃন্দ ছয় দফা দাবি তুলে ধরে মহাপরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দেন।
আফজাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আগামী জানুয়ারি মাস থেকে পর্যায়ক্রমে ২০০টি নতুন কোচ রেলওয়েতে যুক্ত হবে। এই নতুন কোচ আসা শুরু হলে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন রুটে নতুন নতুন রেল চালু করা সম্ভব হবে। নতুন কোচ আসা সাপেক্ষে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর রুটে নতুন একটি রেল চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যেই এই ট্রেন চালুর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এই ট্রেন চালু হলে যশোরের যাত্রীরা সকালে ঢাকায় গিয়ে আবার রাতে যশোরে ফিরে আসতে পারবে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক জানান, নতুন বছরে রেলওয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য তিনি এই অঞ্চল পরিদর্শন করছেন। রেলওয়ের বিভিন্ন সমস্যা, সংকট চিহ্নিত এবং তা নিরসনের জন্য তিনি এই পরিদর্শন করছেন।
এর আগে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বেনাপোলগামী রূপসী বাংলা এক্সপ্রেসে চড়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন দুপুরে বেনাপোলে পৌঁছান। বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন শেষে একই ট্রেনে চড়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি যশোর রেলওয়ে জংশনে পৌঁছান। এ সময় যশোর জংশনে অবস্থানরত বৃহত্তর যশোর জেলা রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ সকালে যশোর থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য এবং রাতে ফেরার জন্য একটি ট্রেনের দাবিতে স্লোগান দেন। যশোর রেলওয়ে জংশন পরিদর্শন শেষে স্টেশন মাস্টারের কার্যালয়ে তিনি বৃহত্তর যশোর জেলা রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ সময় বৃহত্তর যশোর জেলা রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় হকি দলের ম্যানেজার কাওসার আলী, সদস্যসচিব ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান ভিটু, অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু, ফারাজী সাঈদ আহমেদ বুলবুল, প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক সভাপতি একরাম-উদ-দ্দৌলা, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক তানভিরুল ইসলাম সোহান, যশোর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মোস্তাক হোসেন শিম্বা, সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান মিলন, শিক্ষক সায়েদা বানু শিল্পী, সদস্য সাঈদ আহমদ নাসির শেফার্ড, নওরোজ আলম খান চপল, আলাউদ্দিন, রেল বাজার কমিটির যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময়ের আগে নেতৃবৃন্দ ছয় দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি রেলওয়ের মহাপরিচালকের কাছে হস্তান্তর করেন।
দাবিগুলো হলো- দ্রুততম সময়ে যশোর-ঢাকা-পদ্মা সেতু লিংক প্রজেক্টে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে দুটি ট্রেন চালুসহ দর্শনা-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে দুটি ট্রেন চালু, নিজ শহর থেকে প্রতিদিন ঢাকায় অফিস করার জন্য (সকালে ঢাকায় গিয়ে রাতে ফিরে আসা) ট্রেনের সময়সূচি তৈরি করা, আন্তঃনগর ট্রেনে সুলভ বগী যুক্ত করা, ট্রেনের ভাড়া বাস ভাড়া থেকে কম রাখা, ট্রেনের টিকিট প্রাপ্তির সহজ পদ্ধতি চালু করা, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা।
এছাড়াও যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দও রেলওয়ে মহাপরিচালক বরাবর আরও একটি স্মারকলিপি দেন। এতে যশোরে কন্টেইনার টার্মিনাল স্থাপনসহ আমদানি-রফতানি সহজতর করতে ব্যবসাবান্ধব বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরা হয়।
যশোরে মতবিনিময় শেষে রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন রূপদিয়া, সিংগিয়া ও নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম, অপারেটিভ সুপারিনটেনডেন্ট আনসার আলী ভূইয়া, প্রধান বাণিজ্যিক ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ্বাস, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা গৌতম কুন্ডু প্রমুখ।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: