• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ঝালকাঠি মুক্ত দিবস আজ 

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ঝালকাঠি মুক্ত দিবস আজ 

ছবি: সংগৃহীত

‎‎আজ ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে রক্তপাতহীন অপারেশনে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে শহরটি মুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা। প্রতি বছর দিনটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়, এবারও মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করার কথা রয়েছে।

‎ঐতিহাসিক দলিল অনুযায়ী, ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঝালকাঠি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে। ২৭ এপ্রিল হেলিকপ্টার থেকে অবিরাম বোমাবর্ষণ এবং গানবোট থেকে গুলিবর্ষণ করে পাকবাহিনী শহরে ঢোকে। তীব্র আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে যেতে বাধ্য হয়। দখল নেওয়ার পর ওই সময় ‘দ্বিতীয় কলকাতা’ খ্যাত ঝালকাঠির বৃহত্তম বাণিজ্য-বন্দর পুড়িয়ে ছাই করে দেয় হানাদাররা—ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোটি টাকার সম্পদ।

এরপর ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সহায়তায় শহরজুড়ে চলে গণহত্যা, লুটপাট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ। শহরের পালবাড়ির একটি ভবনে পাকবাহিনী স্থাপন করে টর্চারসেল। পৌরসভা খেয়াঘাট, পালবাড়ি গোডাউনঘাট, রমানাথপুর মসজিদ সংলগ্ন পুকুরপাড়, দেউলকাঠি, গাবখান ও খেজুরাসহ বিভিন্নস্থানে শত শত নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়।

‎৭ ডিসেম্বর বিকেলে ঝালকাঠির উত্তর অঞ্চলে অভিযান শেষে পাকিস্তানি মিলিশিয়া বাহিনী বরিশালে ফেরার পথে কাঠপট্টি চর এলাকায় ২৭–২৮ জনকে নামিয়ে যায়। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনতা তাদের ঘেরাও করে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করলে শহর কার্যত শত্রুমুক্ত হয়ে যায়।

পরদিন ৮ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাক মিলিশিয়া বাহিনীর অবশিষ্ট সদস্যরাও পালিয়ে যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের অঞ্চলে অবস্থানকারী মুক্তিযোদ্ধারা বিকাল থেকে শহরে প্রবেশ করে। সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সেলিম শাহনেয়াজ এসে থানাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন। পরে পুলিশ বাহিনী অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করলে রক্তপাত ছাড়াই ঝালকাঠি সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়।

‎একই দিন বিকালে সাব-সেক্টর কমান্ডার সেকান্দার আলীর নেতৃত্বেও আরেক দফা থানা অবরোধ পরিচালনা করা হয়। প্রথমদিকে পুলিশ প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ ছাড়া উপায় ছিল না। মুক্তির আনন্দে সেদিন সন্ধ্যায় শহরের রাস্তায় নেমে আসে হাজারো মানুষ, মুখর হয়ে ওঠে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে।

‎ঝালকাঠি হানাদারমুক্ত দিবসকে ঘিরে আজ জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনগুলো বিজয় র‌্যালি ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোস্তফা কামাল মন্টু গণমাধ্যমকে বলেন, ৮ ডিসেম্বর আমাদের জীবনের এক অমর দিন। এই শহরের প্রতিটি ইট-পাথরে শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। তরুণ প্রজন্মকে স্বাধীনতার এই গৌরবময় ইতিহাস জানতে হবে, ধারণ করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ও ইতিহাস রক্ষায় সবাইকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে।

বিভি/এআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2