জামায়াতের মিষ্টি খেয়েছে আওয়ামী লীগ!

পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের নির্বাচনে সবগুলোতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। পাঁচটির মধ্যে তিনটিতে দ্বিতীয় স্থান পেলেও ভোটের ব্যবধান ছিলো অনেক বেশি।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবধান ছিলো গুনাহার ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা জামায়াতের কর্ম পরিষদ সদস্য ও গুনাহার ইউনিয়ন জামায়াতের রোকন নূর মোহাম্মদের কাছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শাহ আব্দুল খালেক ১১ হাজার ৯৯৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। জামায়াত প্রার্থী নূর পেয়েছেন ১৪ হাজার ৯০৭ ভোট।
নির্বাচনের পর শনিবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গুনাহারের স্থানীয় একটি বাজারে পরাজিত প্রার্থী বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, শিক্ষক শাহ আব্দুল খালেককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জামায়াতের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ। এই সময় বার বার আব্দুল খালেক-এর কাঁদে মাথা রাখতে দেখা দেখা গেছে নূরকে। নির্বাচনী মাঠে নিজের এবং নেতাকর্মীদের আচরণের কথা তুলে ক্ষমা চান নতুন চেয়ারম্যান। এসময় সাবেক চেয়ারম্যানকে মিষ্টি খাইয়ে দেন জামায়াতের এই প্রার্থী।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের বিষয়ে সাবেক তিনবারের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, নূরের বাবা আমার ছাত্র ছিলো। নূর আমার এলাকার সন্তান। আমি চাই এই এলাকায় কাজ হোক। গতবারও নূর আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলো। অল্প কিছু ভোটের ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলো। এই নির্বাচনের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’র মতো গুনাহারের মানুষের মন জয় করতে পেরেছেন। এটি নূরের কৃতিত্ব। সে যে দল করে করুক, আমিও যে দল করি করবো। কখনো আমি জামায়াতও চিহ্নিত করিনি। অন্য কোনো দলও চিহ্নিত করিনি।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমার দল আওয়ামী লীগের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের কারণে আমরা হেরে গেছি। যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র দেওয়া আমানতকে নিজের মনে করে সবাই কাজ করতেন তাহলে গুনাহারে আওয়ামী লীগ হারতো না।
নূর মোহাম্মদ বলেন, গতবার নির্বাচনে পরাজিত হয়ে স্যারের সালাম নিয়েছি। আজকেও স্যারের কাছে আসছি। ১৫ বছর তিনি এই ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি আমার বাবাকে পড়িয়েছেন। আমি তাঁর নাতির মতো। নির্বাচনে মাঠে আমার কথা এবং আমার কোনো কর্মীর আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা করবেন। কথা দিচ্ছি, আপনার যে সমৃদ্ধতা তাঁর সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়ে চলবো। স্যারের স্নেহ নিয়ে চলবো।
তিনি বলেন, স্যার চেয়ারম্যান থাকাকালীন আমরা কোনো মামলার সম্মুখীন হই নাই। আমরা স্বাক্ষী দিচ্ছি- স্যারের পাঁচ বছরে আমাদের কেউ ধরে নিয়ে আয়, তুলে নিয়ে আয় কেউ বলেনি।
বিভি/এনএম/রিসি
মন্তব্য করুন: