হিজাব পরায় শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব পরায় এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বড়ুয়ার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ (জেবি) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি
বড়ুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে হিজাব নিষিদ্ধের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। এদিকে প্রধান শিক্ষক পরদিন এক জরুরী বিজ্ঞপ্তিতে হিজাব পরে ক্লাশে আসতে পারবে বলে ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকালে হিজাব পরে বিদ্যালয়ে আসে ওই শিক্ষার্থীসহ আরও তিনজন। বেলা ১১টায় এ্যাসেম্বলি শেষে ক্লাস শুরুর আগে প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বড়ুয়া তাদের ডেকে হিজাব খুলে ফেলতে বাধ্য
করার চেষ্টা করেন। এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হিজাব খুলতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বেত্রাঘাত করে প্রধান শিক্ষক। এরপর মুহুর্তেই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা
স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করে।
এতে কোনো প্রতিকার না পেয়ে ওই ছাত্রী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে অভিভাবক শিক্ষার্থীকে ওই স্কুল থেকে অন্য স্কুলে নিয়ে যেতে প্রধান শিক্ষকের কাছে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট চান। এসময় তিনি কিছুটা নমনিয় হয়ে বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত হিজাব পড়লে অসুবিধা নেই। তবে আগামী বর্ষে আর পারবে না।
শিক্ষার্থী অভিভাবকেদের জানান ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে প্রায়ই প্রধান শিক্ষক হিজাব পড়ে স্কুলে আসলে নানান ঝামেলা করতো। এর আগে আরও কয়েকজন সহপাঠীকে হিজাব না পড়তে বাধ্য করে।
অবশ্য হিজাবের জন্য শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের কথা অস্বীকার করে তুষার কান্তি বড়ুয়া জানান, তিনি মেয়েদের হিজাব নিষিদ্ধ করেননি।
এই বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খান বলেন, জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হিজাব পড়তে বাধা দেওয়ার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ছাত্রীরা যদি হিজাব পড়তে চায়
তাহলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিনহাজুর রহমান জানান, জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে হিজাব পড়তে বাধা দেওয়ার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ড্রেস নির্ধারণ করে
দিতে পারবেন কিন্তু কেউ হিজাব পড়লে তাতে বাধা দিতে পারেন না। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিভি/এনইউটি/এএন
মন্তব্য করুন: