মাদককারবারীদের মিথ্যা মামলায় কারাগারে পিকআপ চালক পেয়ার আহাম্মদ

ভুক্তভোগী পিকআপ চালক পেয়ার আহম্মদ মজুমদার
ফেনী জেলা ছাগলনাইয়ার মোকামিয়া সীমান্তে চোরাকারবারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় সীমান্তবাসী অতিষ্ঠ। বিভিন্ন সাজানো মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার পিকআপ চালক পেয়ার আহাম্মদসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষ।
সম্প্রতি বাড়ি থেকে পিকআপ চালক পেয়ার আহাম্মদ মজুমদারকে (৩৫) ডেকে নিয়ে মাদক দিয়ে পুলিশে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে গ্রামজুড়ে আবার ভীত সাধারণ মানুষ। ভুক্তভোগী পেয়ার আহাম্মদের স্ত্রী খালেদা আক্তার গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফেনী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ জানান।
মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বর্তমানে কারাগারে থাকা পেয়ার আহাম্মদ ছাগলনাইয়ার মোকামিয়া গ্রামের মজুমদার বাড়ীর মৃত ফয়েজ আহাম্মদ মজুমদারের ছেলে। গত ২৮ জানুয়ারি রাত সোয়া আটটার দিকে তাকে বাড়ি থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায় চোররাকারবারীর চক্রের সদস্য ইউপি মেম্বার আনোয়ার হোসেন অভি, তুষার চৌধুরী ও মাসুদ রানাসহ আরও বেশ কয়েকজন।
৬ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ৬ জন হলেন- পূর্ব মধুগ্রামের মৃত শরিয়ত উল্যাহর ছেলে আনোয়ার হোসেন অভি (৩৫), একই গ্রামের অজি উল্যাহ চৌধুরীর ছেলে মোঃ নুর আলম প্রকাশ তুষার চৌধুরী (৩০), কোম্পানি বাড়ির মোঃ জসিম উদ্দিনের ছেলে মোঃ মাসুদ রানা (২৬), হোনা মিয়ার ছেলে মোঃ সোহাগ (৩২), দক্ষিণ আধার মানিক গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে আবদুল হালিম (৩৫) এবং একই গ্রামের মোঃ রকি (২৭)। স্থানীয় এলাকায় এরা সবাই চিহ্নিত অপরাধী ও মাদক ব্যবসায়ী।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগীর স্ত্রী বলেন, বিবাদীগণ তার স্বামীকে পিকআপ গাড়ীযোগে মাদক বহনের জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দিয়ে আসছিল। রাজি না হওয়ায় বিবাদীগণ তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। অতঃপর গত ২৮ জানুয়ারি রাতে অনুমান সোয়া ৮টার দিকে তারা বাড়ীতে এসে পিকাপ চালক পিয়ার আহম্মদকে ডেকে নেয়। পরে জঙ্গলমিয়া রাস্তার মাথায় তুষার চৌধুরীর ফার্নিচার দোকানে নিয়ে মারপিট করে এবং মাদক দিয়ে মিথ্যা মাদক মামলায় ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
ছাগলনাইয়া থানার সেই মামলা নং- ২১, তারিখ-২৯/০১/২৩ ইং, ধারা-২০১৮ ইং সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬ (১) এর ১৪ (খ)/১৯ (ক)/২৪ (ক) মূলে কোর্টে চালান দেয়। উল্লেখিত মামলায় স্বাক্ষী হিসাবে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদককারবারী ও অস্ত্র মামলার আসামি (যা বর্তমানেও চলমান) (উল্লেখিত ০৩ নং বিবাদী)কেসহ আরো দুইজন যথাক্রমে- আবদুল হালিম (২৯) ও মোঃ লিটন (৩৮)কে স্বাক্ষী হিসাবে উপস্থাপন করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখিত স্বাক্ষীদ্বয় ০১, ০২ নং বিবাদীর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য। স্থানীয় এলাকার কেউ ওই চক্রের নির্দেশ পালন না করলে তাদেরকে একইভাবে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে থানা পুলিশের নিকটে সোপর্দ করে। সরজমিনে তদন্ত করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলেও ভুক্তভোগীর স্ত্রী উল্লেখ করেন।
পরে মামলা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান। এ বিষয় নিয়ে ছাগলনাইয়া প্রেসক্লাবে গত ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয় গণমাধ্যমেও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে প্রকাশ পেয়েছে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: