আদালতে ডামি নির্বাচনের কথা স্বীকার করলেন হাবিবুল আউয়াল

২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন হয়েছে বলে আদালতকে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ২০২৪ সালের নির্বাচন ছিল প্রহসনের নির্বাচন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হওয়ার কারণেই ২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে শুনানিতে তার প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল আউয়াল এসব কথা বলেন।
হাবিবুল আউয়ালের কাছ থেকে এমন জবাবের পর আদালত তাকে প্রশ্ন করেন, তিনি পদত্যাগ করলেন না কেন? উত্তরে তিনি বলেন, অতীতে কোনো সিইসি পদত্যাগ করেননি।
এর আগে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে হাবিবুল আউয়ালকে আদালতে এনে হাজতখানায় রাখা হয়। পরে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটের দিকে তাকে আদালতে তোলা হয়। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার তাকে দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, এই আসামির (হাবিবুল আউয়াল) তার আমলে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি এদেশে কলঙ্কজনক একটি নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচন ছিল ডামি নির্বাচন, একতরফা, লোক দেখানো। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিতে পারেননি। আসামির বিরুদ্ধে তৎকালীন সরকারের সঙ্গে আঁতাত করার অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনে থোক বরাদ্দ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা। প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে, একতরফা, ডামি ভোট হয়েছে স্বীকার করি। আমার সময়ে কোনো জালিয়াতি হয়নি নির্বাচনে। নির্বাচনকালীন ভাতা বেশি দেয়া হয়েছে কি না জানা নেই। ভোট কাস্ট করা আমার দায়িত্ব না। ক্ষমতার লোভ ভয়ংকর লোভ, কারও কিছু করার থাকে না। কথা বলার সুযোগ না দিলে গুলি করে মেরে ফেলেন।
তিনি আরও বলেন, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না। মুজিবের সময়ও ভোট সুষ্ঠু হয়নি। ২৭ শতাংশ না ৪০ শতাংশ ভোট পরেছিল গুনে দেখেন। এখনও বাক্সে ব্যালট মজুত আছে।
আধ ঘণ্টার দীর্ঘ শুনানি শেষে হাবিবুল আউয়ালের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন আদালত।
উল্লেখ্য, বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর মগবাজার থেকে হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়। আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে গত ২২ জুন মামলা করে বিএনপি। পরে ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: