• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

হাইকোর্টের রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার, অতঃপর...

ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৫৭, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

আপডেট: ২১:৫৮, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

ফন্ট সাইজ
হাইকোর্টের রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার, অতঃপর...

হাইকোর্টের রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি নেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সাবেক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও বর্তমানে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে গ্রেফতার করেছে ঢাকার শাহাবাগ থানা পুলিশ। এ মামলার বাদি হাইকোর্টের কোর্ট কিপার ইউনুস খান। এর আগে তার বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা থেকে বদলি করা হয়।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলাম সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে কর্মরত অবস্থায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির জন্য কোটা সংরক্ষণের দাবিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন ৮৬/২০১৬ দায়ের করেন। বিগত ২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি এ মামলার কিছু অবজার্ভেশনসহ রুলটি ডিসচার্জ হয়, যা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও রয়েছে। মুন্সী রুহুল আসলাম অজ্ঞাত আসামিদের সহযোগিতায় রায়ের একটি জাল কপি প্রস্তুত করে বিচারপতিদের স্বাক্ষর জাল করে নিজেই স্বাক্ষর দেন। তিনি রিট শাখাসহ আরডি শাখার কর্মরত অজ্ঞাত আসামিদের (কর্মচারীদের) সহযোগিতায় মামলার রেকর্ড থেকে মূল রায় সরিয়ে জাল রায় ঢুকিয়ে রাখেন। সংশ্লিষ্ট রিট শাখার অনুলিপি বিভাগ থেকে জাল রায়ের নকল সংগ্রহ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা অধিদফতর থেকে অন্যায় সুবিধা নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

ফেনীর পিটিআই এর ইনসট্রাক্টর (বিজ্ঞান) মো. জাকির হোসেন আগেই রেকর্ড থেকে মূল রায়ের একটি সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। মো. জাকির হোসেন ২০২২ সালের ২১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর মূল রায়ের সার্টিফাইড কপির ফটোকপিসহ এ সংক্রান্ত একটি জালিয়াতির অভিযোগ করেন। বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হয়। প্রধান বিচারপতি এ ঘটনায় বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি জাকির হোসেন ও বিচারপতি জিনাত হকের সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন। এ বেঞ্চ ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রদান করে ৮৬/২০১৬ মামলার রুল ডিসচার্জ করেন। একইসাথে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টারকে অনুসন্ধান করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। এর ফলে শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলাম পেনাল কোডের ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় ফৌজদারী অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল বাদি হয়ে হাইকোর্টের কোর্ট কিপার ইউনুস খান ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত ঢাকার শাহাবাগ থানায় মামলাটি নথিভুক্তর আদেশ দেন। এরপর গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে শাহাবাগ থানা পুলিশ শিবচর থানা পুলিশের সহায়তায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। 

শিবচর থানার ওসি সুব্রত গোলদার জানান, শাহাবাগ থানা পুলিশ শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে গ্রেফতার করেছে। 

শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুন্সি রুহুল আসলামকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার পাল। তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায় জালিয়াতিতে তার সম্পৃক্ততার কথা শুনেছি। তাকে গ্রেফতারের খবরটি সঠিক। পরবর্তীকালে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2