নারী-মদ-জুয়ায় আসক্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী
হাজার কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি ও সম্পদ ফেলে আত্মগোপনে কুজেন্দ্র
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আত্মগোপনে চলে গেছেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। ফেলে গেছেন, বাড়ি, গাড়ি ও রির্সোটসহ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। দখল, প্রতিপক্ষকে নির্যাতন, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ছিল নারী কেলেংকারি,মদ ও জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগ।
কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার এ বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ অর্জনের পিছনে অন্যতম কারিগর ছিলেন ঠিকারদার এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা। এত দিন মুখ না খুললেও কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার শাসন অবসানের পর মুখ খুলতে শুরু করেছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি ভুক্তভোগীদের। সে সাথে পুুলিশও খুঁজছে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে।
খাগড়াছড়ির মূর্তিমান আতংক ছিলেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তার কথায় যেন শেষ কথা। ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বসে সাংবাদিকদের সামনে প্রতিপক্ষকে কিভাবে ঘায়েল করা হবে সে হুংকার দিয়েছিলেন তিনি। এর আগে দিনব্যাপী তার নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি শহরে তাণ্ডব চলে। ভাংচুরের পর আগুন দেওয়া হয় খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাসভবনে।
তার বাহিনীর হামলা থেকে রক্ষা পায়নি বাংলাভিশনের সাংবাদিক এইম প্রফুল্ল ও তার বাসা-অফিস। শহরের শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটেও হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। কিন্তু পরের দিন দুপরের পর খাগড়াছড়ির চিত্র পুরো পাল্টে যায়।
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার বাসা, রিসোর্ট ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী বাসাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে হামলে পড়ে দীর্ঘদিনের নিপীড়িত বিক্ষুব্ধ জনতা।
বিগত ১৫ বছরে বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও শত শত সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন। বাসায় হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছেন। মামলা নেয়নি পুলিশ। বরং উল্টো মিথ্যা মামলায় পালিয়ে ছিলেন। মা-বাবার মৃত্যুতেও জানাযা অংশ নিতে পারেনি। বাবার কবরে মাটি দিতে পারেননি। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ভূক্তভোগিদের। বিচার চান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার। তবে সহযোগী ও সুবিধাবাদীরা এখনো খাগড়াছড়িতে সক্রিয়। এমন কি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার ব্যাংক একাউন্ড এখনো জব্দ করা হয়নি।
ক্ষমতার দাপটে বেপরোয়া ছিলেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এক সময় ছিলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের কর্মচারী। পরবর্তীতে যোগ দেন আওয়ামী লীগে।২০১০ সালে ফ্যাক্স বার্তায় খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের অন্তবর্তীকালীন চেয়ারম্যান ও পরবর্তীতে তিন দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও সর্বশেষ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতার দাম্ভিকতা রেড়ে যায়।
এ সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতি,সরকারী জমি দখল, ট্রেন্ডারবাজী,অর্থের বিনিময়ে সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য, দলের পদ ও কমিটি বাণিজ্য করে কয়েক হাজার টাকার সম্পাদ বানিয়েছেন। খাগড়াছড়ি শহরের খাগড়াপুরে কয়েক কোটি টাকার বাড়ী, আলুটিলা পর্যটন এলাকায় সরকারী জায়গা দখল করে কয়েক কোটি টাকার খাসরাং রির্সোট ও সাজেকে খাসরাং নামে আরো একটি বিলাস বহুল রির্সোবানিয়েছেন। যেখানে নারী দেহের খেলা। ঢাকার অনেক মন্ত্রী, এমপি ও ব্যবসায়ীরা এখানে এসে ফূর্তি করতেন। ঢাকায় রয়েছে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা একাধিক ফ্লাট বাড়ী। কিন্ত এ সব স্থাপনা এখন খালি। বাড়ীতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। একই অবস্থা তার খাগড়াছড়ির আলুটিলার বিলাস বহুল রির্সোটসহ জেলা সদরের তার স্থাপনাগুলে। তবে সাজেকের বিলাস বহুল খাসরাং রিসোর্টটি অক্ষত রয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার ইউপি চেয়ারম্যান শান্তি প্রিয় চাকমা জানান, খাসরাং রির্সোটে জলসা ঘরে নিয়মিত নারী নিয়ে ফূর্তি করতেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। সে সাথে চলতো মদ ও জুয়ার আসর। কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এতই নারী লিপ্সা ছিলেন, চোখে যাকে পছন্দ হতো তাকে ভোগ করার জন্য মরিয়া ছিলেন। ঐ নারী বিবাহিত হলেও রেহাই। এইভাবে অনেক নারীকে বাড়ী বানিয়ে দিয়েছেন। কাউকে দিয়েছেন চাকুরি কিংবা প্রতিষ্ঠানের বসিয়েছেন।
প্রতিবাদী দলীয় নেতা কর্মীদের মামলা দিয়ে হয়রানি অভিযোগ। সরকারি আমলারাও এক ধরনের অসহায় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ক্ষমতার কাছে। কিন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার রামরাজত্ব তছনছ হয়ে গেছে। যারা তাকে ফুলের মালা ও ফুলের পাপড়ি ছিটাতেন তারাও গা-ঢাকা দিয়েছে।
প্রতিবেশী খনি রঞ্জন ত্রিপুরা জানান, এক সময় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (এনএলএফটি’র) পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি খাগড়াছড়ির দীঘিনালা,খাগড়াছড়ির খাগড়াপুর ও পানছড়িতে অবস্থিত এনএলএফটি’র ক্যাম্পে নিয়োমিত যাতায়াত করতেন এবং ঐ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য রসদ সরবরাহ করতে করতেন। এ কারণে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার মনোনয়নপ্রত বাতিল করেছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংসদ।
খাগড়াছড়ি জেলা দুর্নীত প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এডভোকেট জসিম উদ্দিন জানান, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ব্যাপক দুর্নীতির সম্পদের পাহাড় নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কয়েক উদ্যোগ নিলে প্রভাব খাটিয়ে উল্টো তদন্ত কর্মকর্তাকে বদলী করা হয়।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(তদন্ত) ফকরুল ইসলাম জানান,খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়ার বাস ভবনে অগ্নিসংযোগ লুটের অভিযোগে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও তার সহযোগিতদের জেলা একাধিক মামলা হয়েছে। পুলিশও কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও তার সহযোগিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার সম্পদের পাহাড়
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খাগড়াছড়ি আসনে টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন ও পাতানো নির্বাচিতও হন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। সে সময় মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে প্রার্থিতাও বৈধ হয়েছে তার। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তার জমা দেওয়া হলফনামায় আয়ের উৎস বিবরণীতে তিনি লিখেছেন, ব্যবসা খাতে ‘ব্রিক ফিল্ড’ থেকে তার বাৎসরিক আয় ২৫ লাখ টাকা।
তবে খাগড়াছড়ি জেলায় বৈধ কোনো ইটভাটা নেই বলে জানিয়েছে প্রশাসন। এ জেলায় প্রায় চল্লিশটির মতো চালু ইটভাটার মধ্যে একটিরও কোনো লাইসেন্স এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ইটভাটা মালিকরা আইনের তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনের নাকের ডগায় বছরের পর বছর ধরে চালু রেখেছেন তাদের অবৈধ বাণিজ্য। কয়লার পরিবর্তে বনের কাঠ পুড়িয়ে এসব ইটভাটার কর্মযজ্ঞ চলছে দিন-রাত সমানতালে।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের মধ্য বোয়ালখালী এলাকার কেবিএম ব্রিকস এবং ফোরবিএম ব্রিকস নামে দুটি ইটভাটার সঙ্গে এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এর মধ্যে কেবিএম ব্রিকসের সরাসরি ব্যবসায়িক অংশীদার এবং ফোরবিএম ব্রিকসের প্রায় অর্ধেক অংশের ভূমির মালিক তিনি।
ফোরবিএম ব্রিকস পাঁচজনের যৌথ মালিকানায় পরিচালিত। তাদের একজন মো. নুর হোসেন। তিনি বলেন, ‘১৬০ শতক ফসলি জমির ওপর চলছে এই ইটভাটার কার্যক্রম। আর ওই জমির মালিক হলেন স্থানীয় সুমেন চাকমা এবং সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। বার্ষিক ভাড়া হিসেবে জমির মালিকদের সাড়ে ৭ লাখ টাকা দেন তারা। তবে ইটভাটাটির বৈধ কোনো লাইসেন্স কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।’
এ ছাড়া কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার ইটভাটা কেবিএম ব্রিকসের ব্যবসায়িক অংশীদার মো. রাকিব স্বীকার করেছেন তাদেরও বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও। বলেন, ‘এটি অনেক পুরোনো ইটের ভাটা। এমপি সাহেব (কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা) প্রথমে এককভাবে ইটভাটাটি চালু করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে আমরা কয়েকজন অংশীদার হিসেবে যুক্ত হয়েছি। বর্তমানে এমপিসহ এই ইটভাটার অংশীদার রয়েছেন চারজন।’
খাগড়াছড়ির রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, ‘খাগড়াছড়িতে বৈধ কোনো ইটভাটা নেই। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।’
হলফনামায় উল্লেখ করা অবৈধ ইটভাটার আয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সে সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রার্থীর হলফনামায় ইটভাটার আয় উল্লেখ করার বিষয়টি আমার জানা নেই। এটি খতিয়ে দেখা হবে।’কিন্তু পরে আর দেখা হয়নি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) হিল্লোল বিশ্বাস বলেছিলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো ইটভাটার পরিবশগত ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। এসব ইটভাটা অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’কিন্তু বাস্তবে তিনিও আর দেখেননি।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, গত ১০ বছরে তার আয় বেড়েছে প্রায় ১৩ গুণ। কিনেছেন শত একর জমি, বেড়েছে ব্যবসা। সেই সঙ্গে এফডিআরের পরিমাণ, স্বর্ণালংকার, গাড়ি ও বাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তার। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের হলফনামায় কেবল খাগড়াছড়ি সদর ও দীঘিনালায় সম্পত্তি থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও ২০২৩ সালের হলফনামায় রাঙ্গামাটি ও ঢাকায় সম্পত্তির হিসাব দেখানো হয়েছে।
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার হলফনামায় ইটভাটা, কৃষি খামার ও মৎস্য খামার, কাঠ ব্যবসাসহ মৌসুমি ব্যবসার খাত থেকে বাৎসরিক আয় ছিল ৩০ লাখ ৫৭ হাজার ৩৭৫ টাকা। ২০১৮ সালে যেটি দাঁড়ায় ৭৫ লাখ ১৪ হাজার টাকায়। ২০২৩ সালের হলফনামায় এ আয় হয়েছে ৪ কোটি ১৬ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮০ টাকা। আর তার আয়ের সবচেয়ে বড় খাত রাঙামাটির সাজেকে রিসোর্ট ব্যবসা। এখান থেকে তার বছরে আয় হয় ১ কোটি ৩৬ লাখ ৩১ হাজার ২৪৭ টাকা।
দ্বিতীয় আয়ের খাত ইট, বালুসহ বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহ ব্যবসায় ১ কোটি ৩১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৫৪ টাকা। ইটভাটা থেকে আয় ২৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন এফডিআর, সঞ্চয়ী জামানত ও অংশীদারী বিনিয়োগ থেকে আয় দেখানো হয়েছে। নিজের পাশাপাশি স্ত্রীর নামেও রয়েছে কোটি টাকার সম্পদ।
২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে হলফনামায় সম্পদ, আয় ও আর্থিক বিবরণী একইরকম দেখা গেলেও ২০২৩ সালে এসে তা বেড়েছে। ২০২৩ এর হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৮ সালের পর থেকে ২০২৩ পর্যন্ত পাঁচ বছরে আনুমানিক আট কোটি টাকার সমপরিমাণ মূল্যের সম্পত্তি বেড়েছে। যার মধ্যে রাঙামাটির সাজেক ভ্যালির কংলাকে ৪ দশমিক শূন্য ৮ একর ভূমির ওপর খাস্রাং নামে রিসোর্টে বিনিয়োগ করেন ৪ কোটি ৪২ লাখ ১ হাজার টাকা। খাগড়াছড়ি সদরের আলুটিলায় খাস্রাং রেস্টুরেন্ট নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন ২ কোটি ২২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। ঢাকার পূর্বাচলে ভূমি কেনা বাবদ অগ্রীম বিনিয়োগ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ঢাকার উত্তরায় ১ হাজার ৭৮৩ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয় ৪২ লাখ টাকায়। স্ত্রীর ফ্ল্যাটের জন্য অগ্রীম টাকা প্রদান দেখানো হয়েছে ৩০ লাখ টাকা।
খাগড়াছড়িতে কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি:
খাগড়াছড়ি সদরের খাগড়াপুর, খবংপুড়িয়া ও দীঘিনালায় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার বাড়ি রয়েছে তিনটি। হলফনামায় যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৭১ হাজার ৩৬৬ টাকা। শুল্কমুক্ত ল্যান্ডক্রুজার, জিপসহ আছে ২ কোটি ৩ লাখ টাকা মূল্যের কয়েকটি গাড়ি।
দুইবারের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ২০২৩ এর হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তির কলামে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫ হাজার ১৫৬ টাকার এফডিআর, ১৪ লাখ ১৭ হাজার ৮৪১ টাকার ডিপিএস, সংসদ সদস্য ও টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান থেকে বাৎসরিক আয় ২৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া কৃষি খামারের জন্য ১০৭ একর জমির তথ্যও উল্লেখ করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে যার পরিমাণ ছিল ৭০ একর।
বিভি/এজেড




মন্তব্য করুন: