চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি, মামলা দিয়ে ব্যবসায়ীকে ফাঁসালেন যুবলীগ কর্মী
পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সাথে যুবলীগ কর্মী শহিদুল্লাহ
৫ আগস্টের পর থেকে চাঁদা না দেয়ায় কারওয়ান বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী ফরাজুল ইসলাম ফরহাদকে উৎখাত ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে শহীদুল্লাহ নামের তেজগাঁও থানার যুবলীগ কর্মী। শুধু হুমকি দিয়ে ক্ষান্ত হননি, যুবলীগের পরিচয় গোপন করে নিজেকে জামায়াত কর্মী দাবি করে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় ওই ব্যবসায়ীকে চাঁদাবাজ সাজিয়ে মামলাও করে শহীদুল্লাহ।
মামলায় তেজগাঁও থানা যুবদল নেতা শাকিল আহমেদ মিন্টু ও ২৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক যুবদল নেতা ইউসুফ হোসেন মিন্টু ও ফারুকসহ মোট ৫ জনকেও আসামি করে শহিদুল্লাহ। মামলার পর শহিদুল্লাহ বর্তমানে বিদেশ আছেন বলে নিশ্চিত করেছে তেজগাঁও থানার তদন্ত কর্মকর্তা।
ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে আমার স্বামী কারওয়ান বাজারের শিশুপার্ক আড়ৎ মার্কেট সংলগ্ন পূর্ব পাশে ফুটপাতের ২নং পজিশনে ব্যবসা করে আসছে। ২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যুবলীগ কর্মী শহিদুল্লাহ ওই পজিশনটি দখলে নেয়। এরপর থেকে আমার স্বামীকে প্রতি মাসে ২৮ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে বাধ্য করে। একই সাথে ২ লাখ টাকা অগ্রীমও নেয় আমার স্বামী থেকে। এরপর থেকেই আমার স্বামী জীবন-জীবিকার তাগিদে তাকে প্রতি মাসে ২৮ হাজার টাকা হারে চাঁদা পরিশোধ করে ব্যবসা চালিয়ে যান। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থী ও সেনাবাহিনীর নির্দেশক্রমে আমার স্বামী চাঁদা দেয়া বন্ধ করলে গত ১৫ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে মুঠোফোনে আমাকে ও আমার স্বামীকে আবারো চাঁদা দেয়ার জন্য হুমকি প্রদান করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমার স্বামীকে কারওয়ান বাজার থেকে উৎখাত ও মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপরই শহীদুল্লাহ নিজের পরিচয় গোপন করে জামায়াত কর্মী পরিচয়ে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এই বিষয়ে ব্যবসায়ী ফরহাদ জানান, ইতোমধ্যে আদালত থেকে জামিনে আছেন তিনি ও যুবদল নেতাসহ মামলার অপর ৪ জন। বর্তমানে যুবলীগ কর্মী শহিদুল্লাহ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা তাকে চাঁদা আদায়ের জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন বলেও জানান ফরাজুল ইসলাম ফরহাদ।
এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন বলেন, যেকেউ মামলা করতে চাইলে আমরা মামলা নিতে বাধ্য। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি। একই সাথে চাঁদাবাজি বন্ধে নিজেদের তৎপরতার কথাও জানান মোবারক হোসেন।
সম্প্রতি এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় শহীদুল্লাহ ও তার ছেলে আবু রায়হানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলাও করেছেন ব্যবসায়ী ফরাজুল ইসলাম ফরহাদের স্ত্রী খাদিজা খাতুন।
মামলার এজহারে আসামিদের শাস্তির পাশাপাশি গত ১৪ বছরে দেয়া চাঁদার আনুমানিক ৪৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করেন ভুক্তভোগী।
বিভি/এসএম/এজেড
মন্তব্য করুন: