• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

উত্তরায় র‍্যাব পরিচয়ে নগদের কোটি টাকা ডাকাতির চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন

প্রকাশিত: ১৮:৩৯, ১৯ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৮:৪০, ১৯ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
উত্তরায় র‍্যাব পরিচয়ে নগদের কোটি টাকা ডাকাতির চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন

রাজধানীর উত্তরায় নগদ কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে র‌্যাব পরিচয়ে ১ কোটি ৮ লাখ ১১ হাজার টাকা ডাকাতির চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) এবং উত্তরা বিভাগ ও উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। একই সঙ্গে নগদ ২২ লাখ ১০ হাজার ৭৮০ টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত ১২ লাখ টাকা ও হাইয়েস গাড়িসহ দুর্ধর্ষ ডাকাত চক্রটির পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

গ্রেফতাররা হলো- মো. হাসান (৩৫), গোলাম মোস্তফা ওরফে শাহিন (৫০), শেখ মো. জালাল উদ্দিন ওরফে রবিউল (৪৩), মো. ইমদাদুল শরীফ (২৮) ও মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে শিপন (২৭)।

বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

উত্তরা পশ্চিম থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জুন সকাল আনুমানিক ৮টা ৫৫ মিনিটে নগদের ডিস্ট্রিবিউটর জনৈক আব্দুল খালেক নয়ন তার উত্তরার ১২নং রোডের ৩৭নং বাসা থেকে প্রতিষ্ঠানের চারজন কর্মচারীসহ চারটি ব্যাগে ১ কোটি ৮ লাখ ১১ হাজার টাকা নিয়ে দুটি মোটরসাইকেল যোগে উত্তরার নগদের অফিসের উদ্দেশে রওনা হয়। পথিমধ্যে উত্তরা ১২ ও ১৩নং রোডের সংযোগস্থলে একটি কালো রঙের হাইয়েস মাইক্রোবাস তাদের গতিরোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে ‘র‌্যাব’ লেখা কালো কটি পরিহিত মুখে কালো কাপড় বাঁধা ৬/৭ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি হাতে অস্ত্র নিয়ে নামে। তাদের কাছে আসতে দেখে নগদের টাকা বহনকারী কর্মচারীরা টাকার ব্যাগ নিয়ে দৌঁড়ানোর চেষ্টা করে। তখন দুষ্কৃতকারীরা তাদের ধাওয়া করে চারটি ব্যাগে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের তিনজনকে মাইক্রোবাসে তুলে হাত-চোখ বেঁধে মারধর করে। ঘটনাস্থল থেকে একজন কর্মচারী পালাতে সক্ষম হন। পরে ডাকাতরা তিনজনকে তুরাগ থানার ১৭নং সেক্টরের বৃন্দাবন এলাকায় ফেলে রেখে টাকা, দুটি অফিসিয়াল মোবাইল ফোন ও তিনটি ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আব্দুর রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়।

থানা সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর উত্তরা বিভাগ ও ডিবি ঘটনার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার ও লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধারে তৎক্ষণাৎ কাজ শুরু করে। উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে উত্তরা বিভাগের এডিসি, এসি, অফিসার ইনচার্জসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে একটি চৌকস দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাস ও চালককে সনাক্ত করে। এরপর বুধবার (১৮ জুন) রাত আনুমানিক ১টা ৪৫ মিনিটে খিলগাঁও থানা এলাকা থেকে মাইক্রোবাসের চালক মো. হাসানকে গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম থানার একটি টিম। এ সময় তার হেফাজত হতে নকল একটি নেমপ্লেট ও নগদ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এরপর গ্রেফতারকৃত হাসানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সবুজবাগ থানার মাদারটেক চৌরাস্তার স্বপন মিয়ার গ্যারেজ থেকে উক্ত ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়।  

ডিবি উত্তরা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ডিবি উত্তরা বিভাগের একটি টিম ঘটনাস্থলসহ আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে। পরে উক্ত ডাকাত চক্রের মূলহোতা গোলাম মোস্তফা ঘরামী ওরফে শাহিনকে বুধবার (১৮ জুন) রাত আনুমানিক ১০টা ৪০ মিনিটে ঢাকার উত্তরা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। অতঃপর গ্রেফতার শাহিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মো. ইমদাদুল শরীফকে রাত আনুমানিক ১১টা ৫০ মিনিটে আদাবর থানাধীন বায়তুল আমান হাউজিং এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয। এ সময় তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৮ লাখ ৪ হাজার ৭৮০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার শাহিন ও শরীফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট শেখ মো. জালাল উদ্দিনকে একই দিন রাতে সবুজবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নগদ ৬৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার জালাল নিজেকে ক্যাপ্টেন জালাল হিসেবে পরিচয় প্রদান করে। জালাল ঘটনার পরদিন লুণ্ঠিত ১২ লাখ টাকা ঢাকা ব্যাংকের নিজ নামীয় অ্যাকাউন্টে জমা করে। উক্ত টাকা জব্দের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। 

ডিবি সূত্র আরও জানায়, পরে গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাত চক্রের অপর সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে শিপনকে বুধবার রাতে এয়ারপোর্ট রেল স্টেশন এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের হেফাজত হতে র‌্যাব ও পুলিশের নকল আইডি কার্ড, লাঠি, সিগনাল লাইট, সেনাবাহিনীর লোগো সম্বলিত মানিব্যাগ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

থানা ও ডিবি সূত্রে জানা যায়, ডাকাত দলের দলনেতা মোস্তফা ওরফে শাহিন একজন চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য এবং শেখ মো. জালাল উদ্দিন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট। এই দলটি দীর্ঘদিন ধরে র‌্যাব ও পুলিশের পরিচয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছে মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। মামলার নিবিড় তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারসহ অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2