‘উপদেষ্টা আসিফের বাবাকে গ্রেফতার করা হলে সব বেরিয়ে আসবে’

কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়ার বাবা বিল্লাল হোসেনের সম্পৃক্ত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন নিহত রুবি আক্তারের স্বামী মো. খলিলুর রহমান জুয়েল। তিনি বলেছেন তাকে তুলে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ভয় দেখিয়ে বাধ্য করা হয় ভিন্ন বক্তব্য দিতে। সেই বক্তব্য দিয়ে বানানো হয় ডকুমেন্টারি।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই অভিযোগ করেন মো. খলিলুর রহমান জুয়েল।
এর আগে নিহত রুবি আক্তারের মেয়ে রুমা আক্তার প্রথম যখন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন, তিনিও সেই দিন এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। রুমা বলেছিলেন, উপদেষ্টার বাবার নাম বলায় তাদের সঙ্গে ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে। আগে থেকেই তাদের হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে খলিলুর রহমান জুয়েল বলেন, গত রবিবারে এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক পেজে একটি ডকুমেন্টরি প্রচার করেন। সেখানে আমার একটি বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। এই বক্তব্যটি নেওয়া হয়েছিল কয়েকদিন আগে। এর আগে ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলে আমার একটি বক্তব্য প্রচার হয়। সেখানে আমি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবাকে ইঙ্গিত করে একটি বক্তব্য দিয়েছিলাম। এর পরপরই আসিফ মাহমুদের আত্মীয় স্বজন, স্থানীয় সমর্থক ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার ও আমার পরিবারের বেঁচে যাওয়া সদস্যদের উপর ক্ষুব্ধ হন।
তিনি বলেন, গত ৩১ জুলাই একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে আমাকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে যায়। পরে জনমানবশূন্য একটি নির্জন স্থানে নিয়ে আমাকে মারধর করে ভয়ভীতি দেখায়। সেসময় তারা তাদের সাজানো বক্তব্য ক্যামেরার সামনে না বললে আমি ও আমার পরিবারের বাকি সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ফলে প্রাণে বাঁচার জন্য সেসময় তাদের সাজানো বক্তব্য ক্যামেরার সামনে বলতে বাধ্য হই আমি।
রাষ্ট্রের ক্ষমতাশীল উপদেষ্টার ক্ষমতার কাছে আমরা অসহায়- উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলুমের শিকার হয়েও বলতে পারি না, আমরা জুলুমের শিকার। বরং জোরপূর্বক আমাদের বলতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের মিথ্যা, বানোয়াট বক্তব্য। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পরিবারের কাছে আমি ও আমার পরিবার অসহায়। আমাদের জীবন বাঁচাতে দেশের সর্বস্তরের জনগণের কাছে সাহায্য চাচ্ছি। আমি ও আমার পরিবার বিশ্বাস করি দেশের জনগণ যেভাবে দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে রক্ষা করেছে ঠিক তেমনি এই জালিমের কালো হাত ভেঙে দিয়ে আমার পরিবারকে রক্ষা করবে।
এই সংবাদ সম্মেলনে রুমা বলেন, আসিফ মাহমুদের বাবার নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড হয়। আড়াইঘণ্টা আমরা পুলিশের সহায়তা চেয়েছি, ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়েছি, কোনো সহায়তা সেই দিন পাইনি। তাহলে আর কিছু বলতে হবে বলে আমার মনে হয় না।
রুমা বলেন, দুই মাস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো বিচার পাচ্ছি না। মূল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। কিন্তু কেন? তিনি বলেন, উপদেষ্টার বাবাকে গ্রেফতার করা হলে সব বেরিয়ে আসবে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: