এবার বাস্তবায়নযোগ্য বাজেটের দিকে নজর সরকারের

উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন বা মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন নয়, এবার বাস্তবায়নযোগ্য বাজেটের দিকে নজর সরকারের। সেই লক্ষ্যে প্রতিবারের মতো বড় বাজেট ঘোষণার নীতি বিসর্জন দিয়ে এবার ছোট বাজেটের পথে হাঁটছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। আজ (২ জুন) বিকাল তিনটায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেশের ৫৫ তম বাজেট ঘোষণা করবেন তিনি। নতুন এ বাজেটের আকার সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। 

দেশের আয়-ব্যয়ের দলিল-জাতীয় বাজেট। প্রতিবছর সংসদে নতুন বাজেট উত্থাপন হলেও এবার অধিবেশন না থাকায় জাতির উদ্দ্যেশে ভাষণের মাধ্যমে টেলিভিশনে বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর বা অর্থনীতিবিদ হিসেবে প্রতিবছর এ সময়টাতে বাজেট বিশ্লেষণে ব্যস্ত সময় পার করলেও এবার তার ওপরই দায়িত্ব পড়েছে বাজেট ঘোষণার। তাই বাইরে থেকে এতোদিন যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, তার প্রতিফলন ঘটাতে কতোটা মুন্সিয়ানার পরিচয় দেন সেই প্রতীক্ষায় সাধারণ মানুষ। 

তবে, নতুন বাজেট নিয়ে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে যাচ্ছেন না অর্থ উপদেষ্টা। রাজনৈতিক সরকার না হওয়ায় খুব সহজে মেগা প্রকল্প এড়িয়ে সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব দিচ্ছেন তিনি। যার আকার গতবারের চেয়ে সাত হাজার কোটি টাকা কম।

দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম বাজেট ছোট হলেও রাজস্ব আয়ের টার্গেট বাড়ছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার ৭০ শতাংশ যাচ্ছে পরিবহন ও যোগাযোগসহ বড় ৫টি খাতে। গতবারের চেয়ে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যও কমছে এবার। বাজেটের মূল লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি রাখা। 
 

গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম বাজেট হওয়ায় জুলাইযোদ্ধাদের জন্য কিছু বরাদ্দ রাখবেন অর্থ উপদেষ্টা। কালো টাকা সাদা করার অবাধ সুযোগ বন্ধ হলেও থাকছে জমি ও ফ্ল্যাটে সেসব বিনিয়োগের সুযোগ।

একাত্তরের পর দেশে এ পর্যন্ত ১৪ জন অর্থমন্ত্রী বা উপদেষ্টা ঘোষণা করেছেন ৫৪টি বাজেট। এর মধ্যে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ১২টি করে বাজেট দেন বিএনপির সময়কার অর্থমন্ত্রী প্রয়াত সাইফুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ২০০৭ ও ০৮ সালে সংসদের বাইরে টেলিভিশনে বাজেট ঘোষণা দেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। 

১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের দেওয়া বাজেটের আকার ছিলো ৭৫২ কোটি টাকা, যার তুলনায় এবারের বাজেট প্রায় হাজার গুণ বড়।