• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ২০:০৮, ১ মার্চ ২০২২

আপডেট: ২১:০৩, ১ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স

ফাইল ছবি

সদ্য সমাপ্ত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসী আয়ে বড় ধস হয়েছে। গত কয়েকমাস ধরে প্রবাসীদের পাঠানো আয় রেকর্ড ছাড়ায়। দেশের অর্থনীতিতে যা গুরুত্বপূর্ণ ভ্যালু যোগ করে। এই মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪৯ কোটি ডলার। যা গত ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে পাঠানো প্রবাসী আয়ের এ অংক আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ কম।

মঙ্গলবার (১ মার্চ) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্যে বলছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ১৪৯ কোটি ৬১ লাখ (১.৪৯ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রবাসী আয়ের এ অংক গত বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে ২৮ কোটি ৪৫ লাখ ডলার বা ১৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ কম। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭৮ কোটি ৬ লাখ ডলার। শুধু তাই নয়, ফেব্রুয়ারির রেমিট্যান্সের এ পরিমাণ গত ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের দেশে ১০৯ কোটি ডলার সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বল‌ছেন, কোভিডের কারণে প্রবাসীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে অনেকে জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছিলেন। কেউ চাকরি হারিয়ে অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে সব অর্থ পাঠিয়ে দেশে ফিরেছেন। করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় অবৈধ চ্যানেলগুলো বন্ধ ছিল তাই বাধ্য হয়ে সবাই ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠিয়েছেন। ফলে গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি ছিল।

এখন ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ভ্রমণসহ বিভিন্ন বহির্বিশ্বের সঙ্গে যাতায়াত বাড়ছে। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া জমানো টাকা না পাঠিয়ে অনেকে আবার জমাতে শুরু করেছেন। আবার সশরীরে যাওয়া-আসা শুরু হওয়ায় অনেকে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে আসছেন। ফলে চলতি অর্থবছরে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি ডলার ( প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা)। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯৬ কোটি বা প্রায় ১৮ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৬৪০ কোটি ডলার।

২০২০-২০২১ অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন ছিল। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের ১২ মাসের মধ্যে সাত মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসে দেশে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রবাসী আয়ের গতি কিছুটা বেড়েছিল। তবে ফেব্রুয়ারিতে আবারও ধস নামে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৬১ লাখ ডলার ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩১ কোটি ২৭ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মধ্যে একটিতে এসেছে ২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১৪ কোটি ৯১ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৭৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

প্রতিবারের মতো এবারও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪ কোটি ৪২ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৮ কোটি ৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ২০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ, আগস্টে ১৮১ কোটি, সেপ্টেম্বরে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ, ডিসেম্বরে ১৬৩ কোটি এবং জানুয়ারিতে এসেছে ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।

২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী।

২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত ১ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। ওই দিন থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: