• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরদের দায়িত্বে বড় ধরনের সংস্কার 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৩৮, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরদের দায়িত্বে বড় ধরনের সংস্কার 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার তার ডেপুটি গভর্নরদের দায়িত্বে বড় ধরনের সংস্কার করেছেন। এতে আলোচিত ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানকে আটটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আবু ফরাহ মো. নাসেরকে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বুদ্ধিবৃত্তিক, পেশাদারিত্ব ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। কিন্তু এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যেই বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই নিজ কর্মস্থলে সংস্কার শুরু করেছেন গভর্নর।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) ডেপুটি গভর্নরদের নতুন দায়িত্ব বন্টন করা হয়েছে। 

জানা গেছে, এক প্রভাবশালী ডেপুটি গভর্নরের বিরুদ্ধে বিশেষ একটি শিল্প গ্রুপকে সহযোগিতা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ঋণ অনিয়মের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সময় তিনি হস্তক্ষেপ করেছেন। ফলে গভর্নরের অনেক পদক্ষেপ বাস্তবায়নে খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যেই বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যেসব বিভাগের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে সেগুলো হলো- ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগ, ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং অ্যাকাডেমি, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-৪, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-৭ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ।

দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের পর কাজী ছাইদুর রহমান এখন ১৪টি বিভাগের দায়িত্ব পালন করবেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-হিউম্যান রিসোর্সেস পার্টমেন্ট-১, হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-২, ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট, ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি ডিপার্টমেন্ট, সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট, ন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন স্ট্যাটেজি (এনএফআইএস) অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ইউনিট, ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর সাপোর্ট অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং ডিপার্টমেন্ট, ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট, এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট-১, এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট-২, আইন বিভাগ ও ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স।

আবু ফরাহ মো. নাসের ১২টি বিভাগের দায়িত্ব পালন করবেন- ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ, এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ, গ্রেডিট গ্যারেন্টি ডিপার্টমেন্ট, ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগ, ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং অ্যাকাডেমি, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-৪, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-৭ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ।

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের দায়িত্বে রয়েছেন চারজন। ৫০টি বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন তারা। ডেপুটি গভর্নর-১ আহমেদ জামালের দায়িত্বে আছে ১৩টি, ডেপুটি গভর্নর-২ কাজী ছাইদুর রহমানের দায়িত্বে ১৪টি, ডেপুটি গভর্নর-৩ একেএম সাজেদুর রহমান খানের দায়িত্বে ১২টি ও ডেপুটি গভর্নর-৪ আবু ফরাহ মো. নাসেরের অধীনে রয়েছে ১১টি বিভাগের দায়িত্ব।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে গণমাধ্যমে নানান সংবাদ প্রকাশের জেরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১০ কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়। বিভিন্ন বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক থেকে শুরু করে নির্বাহী পরিচালক পর্যন্ত কর্মকর্তারা এমন শোকজের মুখোমুখি হন। এদিকে একজন ডেপুটি গভর্নরের বিরুদ্ধে সামনাসামনি ডেকে কর্মকর্তাদের ধমক-ধমকির অভিযোগ রয়েছে আরেক। তাছাড়া তিনি হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের (এইচআর) ডিজি হওয়ায় কর্মকর্তারা আতঙ্কে থাকেন।

ইতোমধ্যে পাঁচ ব্যাংকে সমন্বয়ক বসানো হয়েছে। ব্যাংক পাঁচটি হলো-এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। 

এর আগে পর্যবেক্ষক দেওয়া হয়েছিলো রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে। এসব ব্যাংক উচ্চ খেলাপি ঋণ, মূলধন সংকট, প্রভিশন ঘাটতি ও আমানতের তুলনায় ঋণ বিতরণের সীমা লঙ্ঘন করায় দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সে কারণেই পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক বসানো হয়েছে। নতুন করে অনিয়ম ধরা পড়ায় পর্যবেক্ষক বসেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: