• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বীমা দিবস: নিষ্পত্তি হয়নি সাড়ে ১১ লাখ বীমা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:৪৭, ১ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
বীমা দিবস: নিষ্পত্তি হয়নি সাড়ে ১১ লাখ বীমা দাবি

গ্রাহকদের আপত্তির একটি বড় জায়গা কোম্পানিগুলো বীমা দাবি পূরণে গড়িমসি করা। যদিও বীমা দাবি পূরণের হার বাড়ছে; কিন্তু না করার সংখ্যাও অনেক। ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বীমা খাত; কিন্তু এ খাতে এখনো রয়ে গেছে বিস্তর আস্থার সংকট। 

গত বছর বিভিন্ন কোম্পানিতে উপস্থাপিত ৩০ লাখ ৬২ হাজার ৪৬৮টি বীমা দাবির মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১৯ লাখ ১২ হাজার ৮৬৯টির। বাকি ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৯টির নিষ্পত্তি করা হয়নি। নিষ্পত্তি করার হার ৬২.৪৬ শতাংশ। আর নিষ্পত্তি না করার হার ৩৭.৫৪ শতাংশ।

রাজধানীর মতিঝিলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কার্যালয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী এসব তথ্য জানান। আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরে দেশে বিমা কোম্পানির সংখ্যা এখন ৮১টি। এর মধ্যে লাইফ বিমা কোম্পানি আছে ৩৫টি।

তিনি বলেন, ২০২২ সালের শেষে গ্রস প্রিমিয়ামের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে লাইফ বীমার গ্রস প্রিমিয়াম ১১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর নন-লাইফে এর পরিমাণ পাঁচ হাজার ৪১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যা সংকটের এই সময়ে দেশের ব্যাংকিং খাতে বড় তারল্যের জোগান দিয়েছে। লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কম্পানির অর্জিত প্রিমিয়ামের ওপর একই বছরে সরকার এক হাজার ৩০৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্স পেয়েছে। 

গত বছরে বীমা কোম্পানিগুলোতে লাইফ ৩০ লাখ ২৮ হাজার ৯৩০টি এবং নন-লাইফ ৩৩ হাজার ৫৩৮টি বীমা দাবি করা হয়। এর মধ্যে লাইফ ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৯৯২টি এবং নন-লাইফ ১৯ হাজার ৮৭৭টি বীমা কোম্পানি দাবি নিষ্পত্তি করেছে।

আর্থিক খাতের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল বীমা খাত কেন-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জয়নুল বারী বলেন, ‘এর কারণ কোম্পানি ও আইডিআরএর দোষ। আইডিআরএ প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২০১১ সালে। নতুন একটা প্রতিষ্ঠান দেশে হলে তার জনবল, আইন তৈরি করা হয়। এ জন্য সময় লাগে। আমাদের আগে সক্ষমতা ছিল না। এখন আমরা নতুন লোকবল নিয়োগ দিয়েছি। তাঁরা ট্রেনিং করছেন। সেখান থেকে আমরা ভালো অফিসার পাব। নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই যে দুর্বলতা ছিল তা স্বাভাবিক। সময় বেশি লেগেছে, এই দায় অবশ্যই আমাদের।’

তিনি বলেন, ‘যেসব কোম্পাম্পানির বীমা দাবি আদায়ের হার কম এ ধরনের ছয়টি কোম্পানির বোর্ডের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি।’

বীমা দিবসের শপথ হোক দ্রুত বীমা দাবি পরিশোধ করব আমরা। বীমা দিবস সব বীমা পেশাজীবিদের একটি আনন্দের দিন। ঈদ ও পূজার দিনের মতো আজ প্রতিটি মোবাইলে বীমার গুরুত্বের এসএমএস পাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রী দিবসটি উদ্বোধনের পর প্রতিটি বিভাগে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে র‍্যালি ও আলোচনা সভা হবে। এই কাজটি সকল বীমা কোম্পানি মিলে ১০০ কোটি টাকা খরচ করলেও করা যেত না। যা সরকারের একটি নির্বাহী আদেশে হয়েছে। বীমা দিবসের ফলে জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র বের হচ্ছে। টিভিতে টকশো হচ্ছে ও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক প্রচারণা হচ্ছে।

বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে জাতি বীমার সুফল পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা সব বীমা কোম্পানিকে বিক্রি করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। যে কোম্পানি যত দ্রুত দাবী পরিশোধ করবে সে কোম্পানি আগামী দিনে বীমা খাতের নেতৃত্ব দেবে। বাংলাদেশে গ্রুপ বীমার অপার সম্ভবনা রয়েছে। বছরে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার গ্রুপ বীমাতে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করা সম্ভব। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বীমার জনপ্রিয়তাও বাড়ছে। বর্তমানে দেশ স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কারণে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রিমিয়াম আদায় করা সম্ভব হচ্ছে। একই সঙ্গে বীমা গ্রাহকরা ঘরে বসে ব্যাংকের পাশাপাশি বিইএফটিএন ও মোবাইল ব্যাংকিং যেমন-বিকাশ, রকেট ও নগদে দ্রুত ও সহজে সুবিধা পাওয়ায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিকট দিন দিন গ্রাহক পর্যায়ে অভিযোগ হ্রাস পাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, গ্রুপ বীমাসহ অনলাইনে ইআরপি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ৭ কর্মদিবসে দাবি পরিশোধ করে থাকি। বীমার আস্থা ফিরে আসার জন্য বীমা দাবি পরিশোধের বিষয়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বীমার সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য ৫ম শ্রেনি হতে পাঠ্যসূচিতে বীমা বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: