• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাজেট ২০২৩-২০২৪

সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি আয় হলেই দিতে হবে কর

প্রকাশিত: ১৪:৩০, ২০ মে ২০২৩

আপডেট: ১৪:৩১, ২০ মে ২০২৩

ফন্ট সাইজ
সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি আয় হলেই দিতে হবে কর

উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফলে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি বাজেটে বছরে তিন লাখ টাকার বেশি আয় থাকলেই আয়কর দিতে হতো। কিন্তু আসন্ন (২০২৩-২০২৪) অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত এই আয়ের সীমা বৃদ্ধি করে সাড়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আসছে বাজেটের সারসংক্ষেপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে সাধারণ করদাতাদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমায় ৫০ হাজার টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা। ফলে বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি আয় হলেই কর দিতে হবে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই বাজেট ঘোষণা করবেন। আগামী ১ জুন জাতীয় সংসদে এ বাজেট উপস্থাপন করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, সাধারণ করদাতাদের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। আর ধনীদের ওপর কর আরও বাড়াতে হবে। কেননা, মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে কর আদায়ের ক্ষেত্রে আরও নমনীয় হওয়া প্রয়োজন।

তবে ধনীদের কর আরও বৃদ্ধিসহ গ্রামাঞ্চলে করজাল বিস্তারের প্রস্তাবও রয়েছে বাজেটের সারসংক্ষেপে। যদিও করোনা মহামারি চলাকালে ধনী করদাতাদের আয়কর ৫ শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছিল। এবার সেই ৫ শতাংশের সঙ্গে আরও কর বৃদ্ধির পরিকল্পনা যুক্ত করা হয়েছে আসছে বাজেটে।

রাজস্ব বোর্ড সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণ করতে আগামী তিন অর্থবছরে বাংলাদেশকে রাজস্ব হিসেবে দুই লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা আয় করতে হবে। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরেই রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। ফলে বাজেটে বিদ্যমান সারচার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হবে। যাতে ধনীদের উচ্চ কর দিতে হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে প্রথম ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর কর দিতে হয় না। ৩ লাখ টাকার পরবর্তী ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে মোট আয়ের ওপর ৫ শতাংশ কর দিতে হয়। পরবর্তী ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে আয়ের ওপর ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ এবং পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ কর দিতে হয়। এর বেশি আয় করলে সেক্ষেত্রে করহার ২৫ শতাংশ।

চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে আয়কর খাত থেকে ১ লাখ ২১ হাজার ৯৪ কোটি টাকা রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এ খাত থেকে রাজস্ব এসেছে ৭০ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে আয়কর খাত থেকে ৮৪ হাজার ৫২২ কোটি টাকার রাজস্ব সংগ্রহ করে এনবিআর।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়বে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি এবং দেশের মোট জিডিপির ১০ শতাংশের সমান। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১৬ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।

আগামী অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার ৬০ হাজার কোটি টাকা। আর এনবিআরবহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা ও করবহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা।

এনবিআরের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশীয় শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। আগে টিভি, ফ্রিজ বিলাসী পণ্য ছিল, এখন আর সেটি নেই। এখন এগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এসি আমদানিতে শুল্কহার আগের চেয়েও বাড়ানো হতে পারে। তুলনামূলক একই দামে আমদানি করা এসি পেলে কেউ দেশীয় এসি কিনতে উৎসাহিত হবে না।

আমদানি করা গাড়ি, ফ্রিজ ও এসির মতো পণ্যের দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, কিছু পণ্যের অগ্রিম আয়কর (এআইটি) বাড়ানো হতে পারে। অথবা সব ধরনের সম্পূরক শুল্ক ও হার বাড়ানো হতে পারে।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: