ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের নিয়েই চলছে রাবি প্রশাসন: শাখা ছাত্রদল সভাপতি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী তার বক্তব্যে বলেছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের নিয়ে চলছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপাচার্য এখানে অনেক আওয়ামী লীগের শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারী আছেন, আমাদের কাছে তাদের রিপোর্ট আছে। ৫ আগস্টে রাবির সাবেক উপাচার্য তাপুকে স্যারকে কোন গাড়িতে করে কারা ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে গেছেন সেই গাড়ির নাম্বারও আমাদের কাছে আছে। তাদের পক্ষ নিয়ে এমন কোনো বক্তব্য দিবেন না, এমন কোনো মন্তব্য করবেন না যাতে রাবি ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আপনাদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিরোধিতাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শিক্ষকদের বিচারের দাবির প্রেক্ষিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন তিনি।
শাখা ছাত্রদল সভাপতি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসকল আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল তাদেরকে আমরা ভুলে যায়নি। তারেক রহমান বলেছেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার জন্য, নাহলে রাবির ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের শিক্ষকরা কাপড়-চোপড় পড়ে ক্যাম্পাসে হাঁটতে পারতেন না।
এসময় জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অংশগ্রহণ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ জন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকের নামসহ ছবি প্রকাশ করেন ছাত্রদল। তার মধ্যে রাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ বিগত প্রশাসনের অনেকেই আছেন সেই তালিকায়।
এসময় 'স্বৈরাচারের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান', 'সৈরাচারের ঠিকানা, এই রাবিতে হবে না', 'সুপারিশ, স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, এই ক্যাম্পাসে হবে না', 'আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্ৰাম সংগ্ৰাম', 'বছর গেল, আওয়ামীলীগের দোসর কেন', 'প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও' সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের।
এসময় রাবি শাখা ছাত্রদল সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী আরও বলেন, আমরা আগামী রোববার- সোমবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত ও গণস্বাক্ষর নিবো। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের একটি তালিকা প্রকাশ করে তাদেরকে ক্যাম্পাস থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে হবে।
শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সরদার জহরুল-এর সঞ্চালনায় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রদলই মামলা করেছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদেরকে গ্ৰেফতার করা হয়নি, কোনো রকম আইনি প্রক্রিয়া গ্ৰহণ করা হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে আমরা বুঝে নিবো, আপনারা নিজেদের পকেট ভারী করার উদ্দেশ্যে ফ্যাসিবাদী শিক্ষকদেরকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। আমরা আওয়ামী শিক্ষকদের নাম প্রকাশ করেছি আপনারা এখন মামলা করতে পারেন। যদিও তা না করেন তাহলে রাবি ছাত্রদল তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে।
সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিঠু বলেন, জুলাই আন্দোলনে ফ্যাসিস্টদের দোসর শিক্ষকরা এই প্যারিস রোডে ছাত্রদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। তারা ১ আগস্ট বহিরাগত ও পুলিশ দিয়ে ছাত্রদেরকে গ্ৰেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপর তারা হামলা করার পাঁয়তারা করেছিল। ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী শক্তি পালিয়ে গেছে। কিন্তু থেকে গেছে ফ্যাসিবাদের দোসরের শিকড়। এই শিকড়কে নির্মূল করতে না পারলে আবারো তারা গর্জে উঠবে বলে জানান তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাবি শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগ, সহ-সভাপতি তুহিনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহের রহমানসহ বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন হল, অনুষদসহ বিভিন্ন ইউনিটের দুই শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: