অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতীকী ‘গায়েবানা জানাজা’ পড়লেন চুয়েট শিক্ষার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত
প্রকৌশল খাতে বৈষম্য দূরীকরণ ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকাল পাঁচটা থেকে চট্টগ্রামের ২ নং গেট এলাকায় এ কর্মসূচি শুরু করে তারা। কর্মসূচির মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতীকী গায়েবানা জানাজা পড়েন তারা।
জানাজা শেষে সন্ধ্যার দিকে এক ঘণ্টার জন্য অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত রাখেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের আলোচনার সুযোগ করে দিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে নগরের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে নেমে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করায় এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। অফিস ছুটির সময় হওয়ায় সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন অফিস ফেরত মানুষরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও প্রকৌশল খাতে কোটা ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অযোগ্যদের আধিপত্য বজায় আছে। এতে মেধাবী বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাঈদ আফ্রিদি বলেন, ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীরা অবৈধভাবে দশম গ্রেড দখল করেছে। পৃথিবীর কোথাও কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর হাতে এভাবে গ্রেড তুলে দেওয়া হয়নি। অথচ তারা শুধু দশম গ্রেডেই নয়, লবিংয়ের মাধ্যমে নবম গ্রেডেও ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ দখল করে রেখেছে। আমরা চাই ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো কোটা থাকবে না, সকল নিয়োগ মেধার ভিত্তিতে হোক।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাবাবা তামান্না বলেন, যোগ্য বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা পদে বসতে পারছেন না। অথচ অযোগ্যরা গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে দেশের জন্য ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আমরা চাই যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রকৌশলীরা দায়িত্ব পাক, যাতে তারা দেশের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন। এগুলো হলো- যারা কেবল ডিপ্লোমা পাস, তাদের ‘ডিপ্লোমা’ হিসেবেই সম্বোধন করতে হবে, ‘ইঞ্জিনিয়ার’ নয় বিএসসি পরীক্ষা ছাড়া কেউ নবম গ্রেডে যেতে পারবে না এবং সকলের জন্য ১০ গ্রেড উন্মুক্ত করতে হবে ও পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
ভুক্তভোগী কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করুক কিন্তু সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে কেন এই দেশে কী কোনো আইন নেই, নিয়ম নেই। প্রতিবারই দেখা যায় কোনো দাবি আদায়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ভোগান্তিতে ফেলে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে আমরা চরমভাবে বিব্রত।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: