প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষায় শিক্ষক পদ বাতিলের প্রতিবাদ
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষায় শিক্ষক পদ বাতিলের ঘটনার প্রতিবাদ ও পুনর্বহালের দাবিতে কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘চির উন্নত মম শির’ স্মৃতিস্তম্ভে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচির শুরুতে সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা গান গেয়ে একটি প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।
এসময় সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাজিদ বলেন, প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। আমরাও চাই আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে। কিন্তু, যেই প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে সেটির মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতিকে আটকে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করছি।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী শান্ত বর্মন বলেন, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে সংগীত যেভাবে অবদান রেখেছে, তা না হলে বিজয় অর্জন সম্ভব হতো না। সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে, সংস্কৃতির ওপর এভাবে আঘাত মোটেও কাম্য নয়।
শিক্ষার্থী আশিক বলেন, একটি শিশুর বিকাশে সংগীতসহ বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ। ঈদ আসলেই ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গেয়ে উঠি আমরা। অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতেও গজল, সংগীত চর্চা হয়। কাদের ইচ্ছায় এই প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে আমরা জানতে চাই। দেশের এই সম্ভাবনাময় শিল্পী, সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা কিভাবে এগোবে তাহলে।
উদীচীর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম বলেন, বর্তমানে চলা ‘নতুন কুঁড়ি’ অনুষ্ঠানে আমরা দেখতে পাচ্ছি ছোটা বাচ্চারা কিভাবে তাদের গায়কী প্রতিভা তুলো ধরছে। সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদেরকেও অধিকারবঞ্চিত করছে। আমি চাই পুনরায় শিক্ষক পদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
সঙ্গীত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের পরিচিতি বিস্তারে সংগীতের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের সকল যৌক্তিক আন্দোলনে সংগীত প্রাণ সঞ্চার করেছে। আমরা যদি এভাবে নাট্যকলা, সংগীতের মতো বিষয়গুলোকে বাদ দিতে থাকি তাহলে সংস্কৃতি-ঐতিহ্য টিকে থাকবে না। আজকের এই সভা থেকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, এই প্রজ্ঞাপন নিয়ে কর্তৃপক্ষকে বিবেচনা করতে হবে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে আমরা কিন্তু চুপ থাকবো না।
প্রসঙ্গত, সংশোধিত বিধিমালায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া হয়েছে। গত রবিবার (২ নভেম্বর) সংশোধিত বিধিমালা গেজেট প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিভি/পিএইচ




মন্তব্য করুন: