• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বিদেশে ঈদের সময়টা খুবই ভয়ংকর ছিলঃ সিয়াম আহমদে

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ৭ জুলাই ২০২২

আপডেট: ১০:৩৬, ৮ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
বিদেশে ঈদের সময়টা খুবই ভয়ংকর ছিলঃ সিয়াম আহমদে

এই সময় ঢাকাই সিনেমায় নিজের জায়গা শক্ত করে নিয়েছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ। একের পর ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়ে দর্শকদের ভালোবাসা ও প্রযোজক-নির্মাতা সবার আস্থা অর্জন করে নিয়েছেন তিনি। গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছিল তার অভিনীত সিনেমা 'শান'। কিন্তু এই ঈদে নেই তার কোনো সিনেমা। ঈদ ও সিনেমার ব্যস্ততা নিয়ে বাংলাভিশনের সাথে কথা হয় সিয়াম আহমেদের। 

প্রশ্ন- ঈদের ব্যস্ততা কেমন এই মুহুর্তে?

উত্তরঃ ঈদের ব্যস্ততা খুব বেশি নেই এবার। কারণ এই ঈদে কোনো ছবি রিলিজ পাচ্ছে না। তাই এবার ঈদ ফ্যামিলির সাথে কাটাতে পারব ইনশাআল্লাহ।

প্রশ্ন- এবার ঈদে আপনার তো কোন সিনেমা আসছে না সেক্ষেত্রে ঈদে ফ্যামিলিকে  নিয়ে পরিকল্পনা করছেন? 

উত্তরঃ এটাতো কুরবানী ঈদ। আর কুরবানী ঈদে দেখা যায় ঈদের দিনটা কুরবানী নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়। আত্মীয় স্বজনদের বাসায় মাংস পাঠানো, গরীব দুঃখীদের মাঝখানে বিতরণ করা। তো এর মাঝখানেই কাটবে।

প্রশ্ন- এবার ঈদে তো আপনার পরিবারে নতুন একজন সদস্য যুক্ত হয়েছে। তাকে নিয়ে বিশেষ করে কোনো ভাবনা কিংবা তার জন্য ঈদের কেনাকাটা শেষ হয়েছে কি?

উত্তরঃ না, এখনো তার জন্য শপিং করতে পারিনি। আমরা চেষ্টা করছি তার জন্য শপিং করতে কিন্তু মাঝখানে এতো ব্যস্ততা গিয়েছে যে সেই সুযোগটা হয়ে উঠেনি। ইনশাআল্লাহ ঈদের আগে করে ফেলব।

প্রশ্ন- ছেলের নাম কি রেখেছেন?                                                                                                                                                   

উত্তরঃ জোরাইজ আহমেদ জায়ান।
 
প্রশ্ন- ঈদের দিন অবন্তী ভাবী কি নিজ হাতে রান্না করে আপনাকে খাওয়ায়?                                                                                   

উত্তরঃ সেটাতো অবশ্যই চেষ্টা করে। আম্মুও রান্না করে,আর অবন্তীও রান্না করে।

প্রশ্ন- কেমন লাগে অবন্তীর হাতের রান্না?

উত্তরঃ খুবই ভালো লাগে, একসেলেন্ট রান্না করে সে। 

প্রশ্ন- রাঁধুনী হিসেবে উনাকে দশে কত দিবেন?                                                                                                                                   

উত্তরঃ দশের অনেক উপরে দিব। আমাকে বাকী জীবন তার হাতে রান্না খেতে হবে। তাই দশ নম্বর তার জন্য খুব কম হয়ে যায়।

প্রশ্ন- আপনি তো এখন সিনেমায় নিয়মিত। এই মুহূর্তে নাটকের কোন অফার আপনার কাছে আসে কি? এলেও সেটা আপনি কিভাবে হ্যান্ডেল করছেন?

উত্তরঃ নাটকে অভিনয়ের অফার একেবারেই যে আসে না বিষয়টা এমন না। তবে খুব বেশি যে আসে এমন নয়। কাছের যে কজন মানুষ আছেন, যে নির্মাতারা রয়েছেন তারা মাঝে মাঝে জানতে চান আবার নাটকে অভিনয় করব এরকম কোন প্ল্যান আছে নাকি? আসলে ২০১৮ সালে সিনেমায় অভিষেক হবার পর থেকে ফিল্ম নিয়েই ব্যস্ততা গেল। এখনো ফিল্ম নিয়েই ব্যস্ততা আছে। ইনশাআল্লাহ যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে,যদি মনে হয় গল্পটা খুব  ইন্টারেস্টিং, এই নির্মাতার সাথে কাজ করতে চাই -তাহলে নাটক করা হতেও পারে। একদিন হয়তো কাজ হয়ে যাবে আবার। কারণ আমার মনে হয় যে আমি ওখান (নাট্যাঙ্গন) থেকেই এসেছি এবং এটা আমার আলাদা একটা পরিবার। সে পরিবারের জন্য কিছু করতে পাবলে, তাদের সাথে আবার কাজ করতে পারলে আমার মনে হয় খুব আনন্দ হবে। 

প্রশ্ন- আপনার গ্রামের বাড়ী তো পিরোজপুর। ঈদের সময় কি সেখানে যাওয়া হয় কখনো?

উত্তরঃ আগে ছোটবেলায় তো প্রায় ঈদ সেখানে কাটতো। দাদী ইন্তেকাল করার পর থেকে একটু কম যাওয়া হয়। এবার ঈদে যাওয়া মনে হয়না হবে। হয়তো ঈদের পর আমরা একটু চেষ্টা করতে পারি।

প্রশ্ন- এখনতো পদ্মা সেতু হয়ে গিয়েছে। আপনাদের যাতায়াতে অনেক সুবিধা হয়েছে। সেক্ষেত্রে পদ্মা সেতু নিয়ে আপনি কী বলবেন?                                                                                                                                                                                       

উত্তরঃ না। আপাতত পদ্মা সেতু আমি শুধুমাত্র মানুষজনের পোস্টেই দেখছি। ফিজিক্যালি পদ্মা সেতু দেখা এখনো সম্ভব হয়নি। সো যখন দেখতে পারব, তখন বলতে পারব।

প্রশ্ন - আপনি তো  ২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এটার সঠিক কারণটা কী?

উত্তরঃ আমি ২০১০ সালে একাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার সেকেন্ড সেমিস্টার থেকে আমি একাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম ও 'ল' নিয়ে একসাথে পড়ালেখা শুরু করি। ছয়মাস একসাথে দুটো বিষয় পড়ার পরে আমি বুঝতে পারি আসলে আমি পার্মানেন্টলি 'ল' বা আইন বিদ্যাকেই বেশি পছন্দ করছি । সেখানে আমার মন বেশি সায় দিচ্ছে। আর এক্ষেত্রে আমার মনে হয় পড়াশোনা কিংবা প্রফেশন যেটাই হোক যে জিনিসটা ভেতর থেকে আসে। যেটা করতে ভালো লাগে,যেটা করতে ইচ্ছে করে সেটাই করা উচিত। সে কারণেই আমি  ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনে শিফট করেছি। এটা আসলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না এটা ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন এর ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রাম ছিল।

প্রশ্ন- আপনার ইউকে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা কেমন?

উত্তরঃ আমার ইউনিভার্সিটি ছিল নিউ ক্যাসেলে। সেখানে একটা অদ্ভুত সময় পার করেছি আমি। আমরা যারা ওখানে গিয়েছিলাম একেকজনের অভিজ্ঞতা আসলে একেকরকম ছিল। আমার প্রথম কিছুদিন আসলে এডজাস্ট করতে অনেক প্রবলেম হয়েছে। কারণ ফ্যামিলিকে ছাড়া প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে ছিলাম। এর আগে কখনো একমাসও এমন যায়নি যে বাবা-মাকে না দেখে থেকেছি। সেখানে প্রায় বছর পার হয়ে যাচ্ছে, বাবা-মাকে দেখতে পাচ্ছি না। সব ধরনের অভিজ্ঞতা মানুষের কাজে লাগে। আমার জন্য এটা সুন্দর ও অদ্ভূত অভিজ্ঞতা ছিল আরকি।

প্রশ্ন- ওই সময় তো সেখানে ঈদ পালন করেছেন। বিদেশে ঈদের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

উত্তরঃ নিউ ক্যাসেলে আমার জন্য ঈদের সময়টা খুবই ভয়ংকর ছিল। যতটুকু আমার মনে পড়ে ঈদের পরদিন আমাদের পরীক্ষা ছিল।কোনোমতে আমরা সবাই একসাথে নামাজ পড়েছি। নামাজ পড়ে আসার পরে সবার মন খারাপ। কারণ ঈদের দিনে আমাদের দেশে নামাজে যাওয়ার আগে বা নামাজ পড়ে এসে সেমাই খাওয়া একটা ঐতিহ্য। স্পেশালি সেটা মায়ের হাতের তৈরি সেমাই হতে হবে। সেটা আমরা ওখানে কেউ পাচ্ছিলাম না বলে মন খারাপ হচ্ছিল। এছাড়া আমরা কেউ ভালো করে সেমাই রান্নাও করতে পারি না। আর পড়ালেখা নিয়ে সবাই তখন খুবই ব্যস্ত। পরেরদিন যখন আমার এক্সাম তখন বাকিদেরও তো এক্সাম ছিল। তাই কাউকে যে কেউ বলবে যে,তুই পারিস তুই রান্না কর'- এটাও বলা হচ্ছিল না কারণ সবাই পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত। তখন আমাদেরই এক ক্লাসমেট হিমু ভাই যদিও তিনি বয়সে আমাদের সিনিয়র ছিলেন তার বাসায় দাওয়াত দিলেন। আমরা নিউ ক্যাসেলে হিমু ভাইকে আমাদের মা বলে ডাকতাম কারণ উনার হাতের রান্না খুবই ভালো ছিল। সারাজীবন আমার এটা মনে থাকবে।

প্রশ্ন - তার মানে আপনার বিদেশে ঈদ কাটানোর অভিজ্ঞতাটা ভালো এবং খারাপ মিলিয়ে ছিল?

উত্তরঃ খারাপ তো আসলে কিছু না। যা হয়েছে তা ভালোর জন্য হয়েছে। আমরা জানতাম এই কষ্ট বা ফ্যামিলিকে ছাড়া কাটানো ঈদটা শুধুমাত্র এই বছরের জন্য। নিজেদেরকে এই বলেই স্বান্তনা দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ পড়াশোনা শেষ করে যখন ফিরে যাব তখন তো আব্বা আম্মার সাথে ঈদ কাটাব। এটা বলে নিজের মনকে বুঝিয়েছি।

প্রশ্ন- সিয়াম আহমেদ একজন ব্যারিস্টার। তো অভিনয়ের পাশাপাশি এই পেশাতে নিয়মিত হবার বা কাজ করার কোন ইচ্ছা আছে কি?

উত্তরঃ অভিনয়ের পাশাপাশি শুরু করেছিলাম। 'ল' একটা নোবেল প্রফেশন। এই পেশাতে যুক্ত থাকতে হলে যথেষ্ট পরিশ্রমের প্রয়োজন। এই যে আপনি জার্নালিজম প্রফেশনে আছেন, আপনার প্রফেশনে কতটা কষ্ট ও ডেডিকেশন প্রয়োজন সেটা আপনি বলতে পারবেন। আমার মনে হয় যে কোনো মানুষের কাছেই তার পেশাটা খুব আরাধ্য। সে জায়গা থেকে যখন আমি দেখেছি আমি শতভাগ সময় দিতে পারছিনা, কারণ আমি চেম্বারে কাজ করছি কিন্তু আমার মন পড়ে আছে নেক্সট যে প্রজেক্টে (সিনেমা বা নাটক) কাজ করব সেটার ওপরে। তখন আমার মনে হলো যে কাজই করিনা কেন সেটা আসলে ডেডিকেশন নিয়ে করা উচিত। 'ল' তে তখন খুব বেশি সময় দিতে পারছিলাম না। আর আমার অভিনয়ের কাজের প্রতি আরো ইন্টারেস্টেড হচ্ছিলাম। সেসময় অডিয়েন্স এরও ভালো সাড়া পাচ্ছিলাম। তখন মনে হয়েছে আমার অভিনয়কেই শতভাগ সময় দেয়া উচিত।

প্রশ্ন - ঈদ উপলক্ষে দর্শকদের জন্য কী বলবেন?

উত্তরঃ দর্শকদের জন্য সবসময় যেমন ভালোবাসা থাকে সেরকম থাকবে। আমার ,ফ্যামিলির জন্য দোয়া রাখবেন। আপনাদের পরিবারের জন্যেও আমার দোয়া থাকবে। এই ঈদে কোনো সিনেমা নিয়ে আপনাদের সামনে দেখা করতে পারছি না। এজন্য আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। এটাও সত্যি কথা আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। বাকি সবকিছু সবসময় আসলে আমাদের হাতে থাকে না।  তবে ঈদের কিছুদিন পরেই ইনশাআল্লাহ আবার আপনাদের সাথে দেখা হবে।

বিভি/জোহা

মন্তব্য করুন: