• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

আবার আসছে চন্দ্র অভিযান, সম্প্রচার হবে সরাসরি

তৌফিকুল ইসলাম পিয়াস, যুক্তরাষ্ট্র থেকে

প্রকাশিত: ১৪:২৮, ২৫ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ১৪:২৯, ২৫ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
আবার আসছে চন্দ্র অভিযান, সম্প্রচার হবে সরাসরি

আমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখি, চাঁদ দেখে ঈদ উদযাপন করি। 
চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় রোমাঞ্চিত হয় না এমন মানুষ খুব কমই আছে। 
আমাদের এই পৃথিবীর মানুষ এই চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে তাও আজ অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেছে। আগামী ২ বছরের মধ্যে আমরা আবারও এই পৃথিবীর মানুষকে চাঁদের মাটিতে পা ছোয়াবার দৃশ্য সরাসরি উপভোগ করার প্রস্ততি নিচ্ছি। 
চাঁদ কি শুধু পৃথিবীরই আছে?

 

না, বলতে গেলে প্রায় সব গ্রহেরই অনেকগুলো করে চাঁদ রয়েছে বা থাকে। এমনকি এস্টরয়েড বেল্টে যে অতি ছোট ছোট হাজারো গ্রহানু রয়েছে, সেই অনেক গ্রহানুরও আবার রয়েছে খুবই ছোট ছোট উপ-গ্রহানু বা চাঁদ! 
মহাশূন্যের প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে অবাক করা সব বিস্ময়। 
আমাদের সৌরজগতের সবচে সুন্দর গ্রহটি হচ্ছে শনি। শনি সুন্দর এর বলয়ের জন্য। শনি আমাদের সোলার সিস্টেমের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ। বৃহস্পতি সবচে বড় গ্রহ হলেও এই শনি গ্রহটিরই কিন্তু রয়েছে সবচে বেশী চাঁদ - মোট ৮৩টি। যেখানে বৃহস্পতির রয়েছে ৮০টি চাঁদ। 
যাই হোক, ১৬৬৫ সালে ডাচ এস্ট্রোনমার ক্রিস্টিয়ান হাইজিন্স শনির একটি চাঁদ বা উপগ্রহ আবিস্কার করেন; এবং নাম দেন ‘টাইটান’। 
অদ্ভুৎ একটি চাঁদ - শনির এই উপগ্রহটি। 

পৃথিবীর মানুষ শনির এই টাইটান নামক চাঁদটিতে পৃথিবীর সাদৃশ্য বেশ কিছু বিষয় লক্ষ্য করতে থাকে এবং নাসার বিজ্ঞানীরা টাইটান নিয়ে ভীষন আগ্রহী হয়ে উঠে। মানুষ সন্দেহ করা শুরু করে যে টাইটান নামক চাঁদটিতে হয়তো বা প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে! 
এই সন্দেহ থেকেই নাসা টাইটানে একটি মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। এবং ক্যাসিনি-হাইজিন্স নামে একটি স্পেস প্রোব মিশন লন্স করে। 
সেটা ১৯৯৭ সাল। 


নাসার পাঠানো টাইটান মিশন ক্যাসিনি-হাইজিন্স রওয়ানা দেয় শনির চাঁদ টাইটানের উদ্দেশ্যে। জ্বি, দীর্ঘ ৭ বছর দ্রুত গতিতে উড়ে যায় ক্যাসিনি-হাইজিন্স; এবং অবশেষে ২০০৪ সালের ২৫শে ডিসেম্বর টাইটানের মাটিতে সফলভাবে ল্যান্ড করেছিলো পৃথিবী থেকে পাঠানো স্পেস-প্রোব ল্যান্ডারটি। 
শনি গ্যাসিয় গ্রহ হলেও তার টাইটান নামক চাঁদে পৃথিবীর মতোই শক্তপোক্ত মাটি রয়েছে; বয়ে চলছে বাতাস, রয়েছে পাহাড়-পর্বত, নদী। সেই নদীতে স্রোতও রয়েছে। এমনকি শনির এই চাঁদটিতে বৃস্টিও হয়। 
খুব অদ্ভুৎ নয় কি?


হ্যা, অবশ্যই অদ্ভুৎ। তবে, পৃথিবী সদৃশ্য হলেও টাইটানের বাতাসে রয়েছে মিথেনের আধ্যিক্য। নদীতে যে স্রোতধারায় তরল বয়ে চলছে সে তরল পানি নয়, সেটা তরল মিথেন। ঐ যে মেঘ উড়ে, বৃস্টি হয় সেটাও মিথেনেেরই ভারী ভারী বৃস্টির ফোটা। 
অবাক বিস্ময় সৃস্টি হয় পৃথিবীর গবেষকদের মনে। 

কিন্তু আজ থেকে ২০ বছর আগেও প্রযুক্তি আজকের মতো এতোটা উন্নত ছিলো না। এখন আমরা পৃথিবীতে বসে মঙ্গলে চলাফেরা করা পারসিভ্যাইরেন্স এর চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছি মঙ্গলের মাটি, বাতাস। মঙ্গলের হালকা বাতাসে উড়ছে ইনজুইনিটি নামের হেলিকপ্টারটি। কিন্তু তখন তো আর এতোটা উন্নত ছিলো না ক্যাসিনি-হাইজিন্স প্রোবটি। 
যাই হোক, সেই অপার বিস্ময়কে উম্মোচন করতে এবার নাসার গবেষকরা আবারও উঠেপরে লেগেছে। নাসা এবার ড্রাগনফ্লাই নামে শনির চাঁদে আরও একটি মিশন হাতে নিয়েছে। 


২০২৭ সালে ড্রাগনফ্লাই লন্স করা হবে শনির চাঁদে। 
ওটা শনির চাঁদ টাইটানের মাটিতে ল্যান্ড করবে গিয়ে ২০৩০ সালের মাঝামাঝি। আগের বার ৭ বছর লাগলেও এবার অর্ধেক সময়ে অর্থাৎ মাত্র ৩ বছরেই আমরা শনির চাঁদে পৌছে যাবো। 
ড্রাগনফ্লাই-এ থাকবে একটি হেলিকপ্টার সাদৃশ্য রোবটিক ড্রোন; যা এবার টাইটানের বাতাসে উড়ে উড়ে যাবে এবং ভিন্ন ভিন্ন লোকেশনে ল্যান্ড করবে। প্রচুর ছবি তুলবে, ভিডিও পাঠাবে। 
আর আমরা এই পৃথিবীতে বসেই তা নিজ চোক্ষে অবলোকন করবো। 
সেই দিনটির অপেক্ষায় প্রহর গুনছি।

মন্তব্য করুন: