• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হার্টের চিকিৎসায় বাংলাদেশকে সম্ভাবনাময় দেশ বললেন বিদেশি চিকিৎসকরা

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ৬ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ১৭:৪১, ৬ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
হার্টের চিকিৎসায় বাংলাদেশকে সম্ভাবনাময় দেশ বললেন বিদেশি চিকিৎসকরা

কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের তরুণ কার্ডিয়াক সার্জনের নেতৃত্বে একটি টিম ফুটো করে হার্টের সফল অস্ত্রোপচার করে বেশ আলোচিত হন। এই ধরণের অস্ত্রোপচারে বুকের হাড় কাটতে হয় না। রোগীর ঝুঁকিও বেশ কম হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যাকে মিনিমালি ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি (এআইসিএস) বলা হয়ে থাকে। 

বিশ্বের অল্প কিছু দেশে যখন এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার হয় সেখানে ধীরে ধীরে দেশে সামনে এগুচ্ছে হৃদরোগের এমন চিকিৎসা। বাংলাদেশি চিকিৎসকদের এই কর্মকাণ্ডের কথা ছড়িয়ে পড়তে থাকে অন্যদেশের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মাঝে। 

সম্প্রতি বাংলাদেশে এসে এমআইসিএস পদ্ধতিতে চিকিৎসার অবস্থা সরেজমিন ঘুরে দেখে গেছেন কলকাতার এ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান কার্ডিয়াক সার্জন ও মেডিকেল পরিচালক ডা. সুসান মুখোপাধ্যায়।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে সরাসরি এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন ভারতীয় এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও আবাসিক সার্জন ডা. আশ্রাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে টিমের এমআইসিএস পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেখে মুগ্ধ হন ডা. সুসান মুখোপাধ্যায়। 

শুধু তাই নয়, সরকারি হাসপাতালে উন্নত ও আধুনিক অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম নিয়েও কথা বলেছেন এই চিকিৎসক। ভারতেও কিছু জায়গা ছাড়া এত উন্নত সরঞ্জাম নেই বলে জানান এই চিকিৎসক।

তারমতে, এই চিকিৎসার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা গেলে সিঙ্গাপুর, ব্যাংককসহ অন্য দেশ থেকেও বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে রোগী আসবে। 

জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে এমআইসিএস পদ্ধতির চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে কথা হয় ভারতের এ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান কার্ডিয়াক সার্জন ও মেডিকেল পরিচালক ডা. সুসান মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে তরুণ কার্ডিয়াক সার্জনরা, বিশেষ করে আশরাফুল সিয়াম যে উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন এবং কাজের যে পরিধি দেখলাম তা অত্যন্ত মানসম্মত। বিশেষত তরুণ সার্জনদের অনুপ্রাণিত করতে তাদের টিম খুব ভালো কাজ করছে। তাদের কাজ দেখে মনে হয়েছে এ খাতে খুবই উজ্জ্বল ভবিষ্যত আছে।

এই পদ্ধতিতে চিকিৎসায় ঝুঁকি কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে যেভাবে তারা কাজ করছে এতে ঝুঁকি অনেক কম। আমি মনে করি তারা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কাজটি করতে পারবে। যেগুলো অপারেশন করলে হয়তো ঝুঁকি থাকতো। কিন্তু ছিদ্রের মাধ্যমে তা করলে রোগীর ঝুঁকি অনেক কমে যায়। আর চিকিৎসকরা যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাদের মধ্যে কাজের স্পৃহা দেখেছি। তাই এটি খুব ভালোভাবে সামনে এগিয়ে যাবে বলে আশা করি। 

বিদেশ থেকেও কি রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসতে পারে কিনা- জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলেন, এতে দেশের বাইরে থেকেও রোগীরা বাংলাদেশে আসবে বলে মনে করি। যদি তারা ভালো সেটআপ ও প্রশিক্ষণের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে তাহলে এখন যেমন এখানের রোগীরা দেশের বাইরে যায়। তখন সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, ভারত থেকেও রোগীরা এখানে চিকিৎসা করাতে আসবে।

যখন দেশের অনেক রোগী উন্নত চিকিৎসা করাতে পাশের দেশ ভারতে যান তখন দেশটির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এমন কথায় আশার আলো দেখছে টিম আশ্রাফ সিয়াম।

টিম প্রধান ডা. আশ্রাফুল হক সিয়াম বলেন, চিকিৎসক হওয়ার পর অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়ে নতুন নতুন কাজ দেখতাম। নামীদামী চিকিৎসকদের সহচার্য্যে যেতাম। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও যখন এমআইসিএস (MICS) শুরু করলাম তখন স্বপ্ন দেখতাম হয়তো কোনো একদিন আমাদের এখানেও বিদেশি চিকিৎসক সার্জনরা কাজ শিখতে ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য আসবে। সেই স্বপ্নের প্রাথমিক ধাপ সম্পূর্ণ হলো কলকাতার এপোলো হাসপাতালের প্রধান কার্ডিয়াক সার্জন ও মেডিকেল ডাইরেক্টর ডা. সুসান মুখোপাধ্যায় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে আমাদের টিমের কাজ দেখলেন, প্রশংসা করলেন। সম্ভাবনার কথা তুলে ধরলেন।

হৃদরোগের উন্নত চিকিৎসার সরঞ্জাম বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালের সার্বিক খোঁজ রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবহার করা যাচ্ছে। 

ফুটো করে হার্টের অস্ত্রোপচারের সাফল্যের কথা গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশের জন্য গণমাধ্যমের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান আশ্রাফুল হক সিয়াম। 

তিনি বলেন, অল্পদিনের মধ্যে ইনশাআল্লাহ আরও কিছু সংখ্যক বিদেশি সার্জন আমাদের কাছে এমআইসিএস সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিতে বাংলাদেশে আসবেন।

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2