• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

করোনার প্রভাব: স্থবির এইডসের চিকিৎসা ও  শনাক্ত, উদ্বেগ ইউনিসেফের

প্রকাশিত: ১৬:২১, ৩০ নভেম্বর ২০২২

আপডেট: ২০:০১, ৬ জানুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
করোনার প্রভাব: স্থবির এইডসের চিকিৎসা ও  শনাক্ত, উদ্বেগ ইউনিসেফের

গেল বছর দেশে অন্তত ৭২৯ জন নতুন এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে মারা গেছেন ১৮৮ জন। আর চলতি বছরে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। ২০২০ সাল থেকে করোনা মোকাবেলায় সব সেবাসংস্থা ব্যস্থ থাকায় এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যাহত হয়েছে এবং নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিরাও শনাক্তের আওতায় আসেনি। ফলে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশে এইডসের ঝুঁকি আশঙ্কাজনক হারে বাড়বে। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ। 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের এইডস/এসটিডি প্রোগ্রামের তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে আক্রান্তদের প্রায় ২৬ শতাংশ সাধারণ মানুষ, ২০ শতাংশ অভিবাসী, ৮ শতাংশ শিরায় মাদক সেবনকারী, ২৬ শতাংশ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, ৯ শতাংশ সমকামী জনসংখ্যার সদস্য, ৭ শতাংশ পুরুষ যৌনকর্মী, ২ শতাংশ হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্য এবং ২ শতাংশ নারী যৌনকর্মী। আবার এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৭ শতাংশ রয়েছে শিশু। কিন্তু এই আক্রান্তরা করোনার কারণে সঠিক চিকিৎসা পায়নি এবং করোনোর প্রভাবের কারণে রোগী শনাক্তও ছিল কম। যেকারণে এইডস সংক্রামন প্রতিরোধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ কর্তৃক শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা সংস্থা ইউনিসেফ। 

ইউনিসেফ বলছে, এইচআইভি আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর ৭ শতাংশ শিশু। এই  শিশু ও কিশোরীদেরএইডসজনিত কারণে মৃত্যু হয় ১৭ শতাংশ ও নতুন করে আক্রান্ত হয় ২১ শতাংশ। এই অবস্থায় ইউনিসেফ সতর্ক করে বলেছে, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এইডস নির্মূল করা প্রায় অসম্ভব একটি বিষয় হয়ে উঠছে। এইচআইভি আক্রান্ত শিশুর মোট সংখ্যা কমে গেলেও, শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের আওতার মধ্যে থাকা চিকিৎসা সুবিধার বৈষম্য বাড়ছে। এই বৈষম্য সৃষ্টির পেছনে মূলত করোনা ভাইরাস মহামারি ও অন্যান্য বৈশ্বিক সংকটকে দায়ী করা হয়েছে। কারণ এ সময় গর্ভবতী নারীদের রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা শুরু করা যায়নি।

ইউনিসেফের শিশু, এইচআইভি ও এইডস সংক্রান্ত সর্বশেষ বৈশ্বিক স্ন্যাপশট প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার শিশু ও কিশোর-কিশোরী (০-১৯ বছর বয়সি) এইডসজনিত কারণে মারা গেছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরো ৩ লাখ ১০ হাজার। ফলে ১৯ বছরের কম বয়সিদের মধ্যে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখে উন্নীত হয়েছে।

ইউনিসেফের এইচআইভি-এইডস বিষয়ক সহযোগী প্রধান আনুরিতা বেইনস বলেছেন,  শিশু, কিশোর-কিশোরী ও গর্ভবতী নারীদের এইচআইভি প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে গত তিন বছরে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখনো অনেক অঞ্চলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আগের পর্যায়ের চিকিৎসা সুবিধা ফিরে আসেনি। 

তিনি আরও বলেন, গত তিন বছরে এ বিষয়ে যে স্থবিরতা দেখা গেছে, তা নজিরবিহীন। ফলে অনেক কম বয়সি মানুষ নতুন করে অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়েছে। এজন্য অংশীজনদের আরও বেশি সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে দেশে প্রথম এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। ২০২১ সাল পর্যন্ত দেশে ৮ হাজার ৭৩২ জন সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। তাঁদের মধ্যে ২০৫ জন মারা গেছেন।

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন: