ইরানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে আলোচনায় যে তিন প্রার্থী (ভিডিও)
ইরানের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ৬ প্রার্থীকে অনুমতি দিয়েছে ইরানের শক্তিশালী ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিল’। নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী হবেন ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার এ ছয় প্রার্থীর মধ্যে বাঘের গালিবাফ ও সাঈদ জালিলির মধ্যে হবে মূল লড়াই।
৬২ বছর বয়সী মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার। তিনি তেহরান শহরের সাবেক মেয়র। এ ছাড়া দেশটির ক্ষমতাধর প্যারামিলিটারি বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ডের সদস্য তিনি। রেভল্যুশনারি গার্ডের একজন সাবেক জেনারেল বাঘের গালিবাফ কট্টরপন্থী নেতা হিসেবেই দেশটিতে বেশি পরিচিত।
বাঘের গালিবাফের নাম ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১৯৯৯ সালের ছাত্র আন্দোলন কঠোরভাবে দমনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তিনি দেশটির পুলিশপ্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালে এ দায়িত্ব পালনকালে ছাত্রদের ওপর সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গালিবাফ এর আগে ২০০৫ ও ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু একবারও তিনি দেশটির গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমোদন পাননি। ২০১৭ সালে তিনি ইব্রাহিম রাইসিকে সমর্থন দিয়ে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ২০২১ সালের নির্বাচনে ইব্রাহিম রাইসি জিতেছিলেন। যদিও ওই সময় ভোট পড়ার হার সর্বনিম্ন ছিল। এবারের নির্বাচনী প্রচারনায় গালিবাফ ইরনের অর্থনৈতিক অবস্থাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি ইরানের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার কথা জানিয়েছেন। তার কাজের মূলমন্ত্র হবে ‘সেবা এবং অগ্রগতি’।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে বাঘেরের সাথে উঠে আসছে সাঈদ জালিলির নাম। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত জাতীয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পশ্চিমা সরকারগুলোর সঙ্গে পরমাণু বিষয়ক আলোচনায় নেতৃত্ব দেন সাঈদ। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে কয়েকবার তিনি ইরাক-ইরান যুদ্ধে অংশ নেন। সাঈদ জালিলি ১৯৮৯ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত বিষয়ক দপ্তরের প্রধান হন।
গালিবাফ ও জালিলি ছাড়াও প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াই জমিয়ে তোলার আভাস দিচ্ছেন ইরানের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি নির্বাচনে জয়ী হলে ইরানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফকে পুনরায় নিয়োগ দিতে পারেন। পেজেশকিয়ানের এই পদক্ষেপটিকে সংস্কারপন্থী এবং মধ্যপন্থী ভোটারদের সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য চূড়ান্তভাবে অনুমতি পাওয়া অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন মোস্তফা পুরমোহাম্মাদি, আলি রেজা যাকানি এবং সাইয়্যেদ আমির হোসেন হাশেমি। ইরানে বিমান দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ায় আগামী ২৮ জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে দেশটিতে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: