ন্যাটোর সদস্য হয়েও ব্রিকসে যোগ দিচ্ছে তুরস্ক! (ভিডিও)
মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ হিসেবে বিশ্ব রাজনীতিতে নিজেদের শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে তুরস্ক। কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সক্ষমতার পাশাপাশি সামরিক খাতেও পিছিয়ে নেই এরদোয়ানের নেতৃত্বাধীন দেশটি। সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হিসেবেও শক্তি-সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে তুরস্ক।
তবে সম্প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠতা কমিয়ে বিশ্ব দরবারে নতুন করে নিজেদের চেনাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে তুরস্ক। আর সেই প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে যোগ দিতে চেয়েছিলো দেশটি। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকস গ্রুপে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছে তুরস্ক। ফলে বিশ্বব্যাপী নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর যাত্রায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো তারা। কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন ন্যাটোর সদস্য হওয়ার পরও কেনো ব্রিকসে যোগ দিচ্ছে তুরস্ক? এর পেছনে লাভ-ক্ষতির হিসেব টাই বা কি?
বিশ্বের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র: ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে গঠিত অর্থনৈতিক জোট ব্রিক্স। ২০১০ সালে একত্রিত হয়ে কাজ শুরু করা এই ব্রিক্স একাই বিশ্বের ৩ বিলিয়ন মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্রিকস দেশগুলি সম্মিলিত ভাবে বিশ্ব রফতানির ১৮ শতাংশ পরিচালনা করে। ব্রিকসের সদস্য দেশগুলির মধ্যে রফতানির বৃদ্ধির হার চমকে দিচ্ছে বিশ্বকে। ফলে অনেক দেশই এখন এই উদীয়মান জোটের সদস্য হতে চাইছে।
ব্রিকসের প্রধান আকর্ষণ নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা এনডিবি, যা বিশ্বের অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিকল্প হিসেবে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ব্রিক্সের সদস্য না হয়েও এনডিবির সদস্য হয়ে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে অনেক দেশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ন্যাটো যেমন বিশ্বের সামরিক অঙ্গনে অপ্রতিরোধ্য শক্তি হয়ে উঠেছে, ঠিক তেমনই অর্থনীতিতে বিশ্বের মোড়ল হয়ে উঠছে এই ব্রিকস।
তুরস্ক বর্তমান কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে বিশ্বে সব পক্ষের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে উৎসাহী। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হতে কয়েক দশকের চেষ্টা চালায় তারা। কিন্তু তাতে কোন অগ্রগতি না হওয়ার ব্রিকসে যোগদানের আবেদন করেছিল তুরস্ক। সূত্রমতে সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই তুরস্ককে ব্রিকসে যোগ দিতে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। আর ব্রিকসে যোগ দিলে সেটি হবে তুরস্কের জন্য বিশ্ব রাজনীতির আবহে নতুন এক সম্ভাবনার হাতছানি।
ব্রিকসে যোগ দেয়ার ব্যাপারে অবশ্য আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এরদোয়ান। সম্প্রতি এক ভাষণে এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক একটি শক্তিশালী দেশ হয়ে উঠতে পারে, সমৃদ্ধ ও সম্মানিত হতে পারে। আর এজন্য আমাদের পূর্ব ও পশ্চিমের সঙ্গে সমানভাবে সম্পর্ক বজায় রাখতে হেব। এক্ষেত্রে ব্রিকসের চেয়ে ভালো বিকল্প আর কি ই বা হতে পারে?
চলতি বছরের শুরুতে ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া এবং মিশর এই গ্রুপে যোগ দিয়েছে। সৌদি আরবকে সম্প্রতি যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হলেও এখনও তারা যুক্ত হয়নি। আগামী ২২ অক্টোবর রাশিয়ার কাজানে একটি শীর্ষ সম্মেলনে ব্রিক্সের নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: