নজিরবিহীন পর্যায়ে ইউরেনিয়াম মজুত করেছে ইরান, দুই সপ্তাহেই পরমাণু বোমা বানাতে সক্ষম!

ইরানের ইউরেনিয়াম মজুদ নিয়ে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা- আইএইএ’র বিস্ফোরক এক প্রতিবেদন প্রকাশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। এ নিয়ে যারপর-নাই আতঙ্কে ভুগছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যে কোনো মূল্যে ইরানকে থামাতে বিশ্বনেতাদের কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছেন তিনি। 

কী এমন বিস্ফোরক তথ্য আছে আইএইএ’র সর্বশেষ প্রতিবেদনে? এ নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক কৌতূহল। আইএইএ বলছে, গত তিন মাসে নাটকীয় হারে উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম পরিশোধন বাড়িয়েছে ইরান। এসব ইউরেনিয়াম পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রার খুব কাছাকাছি। 

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১৭ মে পর্যন্ত ইরানের কাছে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধিত ইউরেনিয়ামের মজুত ৪০৮ কেজিরও বেশি। পরমাণু অস্ত্রবিহীন কোনো দেশের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ নজিরবিহীন। সর্বশেষ তিন মাসে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে তারা। 

আইএইএ জানায়, ইরানের কাছে এতো বেশি পরিমাণ উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম থাকা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। হিসাব মতে, ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধিত ৪২ কেজি ইউরেনিয়ামকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধন করলেই একটি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। সে অনুসারে, ১০টি পরমাণু বোমা বানানোর কাছাকাছি পর্যায়ের ইউরেনিয়াম এখন ইরানের দখলে। এ নিয়ে গভীর উৎকণ্ঠা জানিয়েছেন আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রসি। 

এদিকে ওই প্রতিবেদনে ইরানের বিরুদ্ধে তিনটি গোপন স্থাপনায় পরমাণু কার্যক্রম চালানোরও অভিযোগ তুলেছে আইএইএ। ওইসব স্থাপনার কর্মকাণ্ড বিষয়ে কোনো তথ্য না থাকাও নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। 

এরই মাঝে মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ইরান বর্তমানে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে পরমাণু বোমা বানাতে সক্ষম। 

ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য জোরেশোরে কাজ করছে, আইএইএ’র প্রতিবেদন প্রকাশের পর এমনটিই দাবি করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইরানের পরমাণু কার্যক্রম মোটেই শান্তিপূর্ণ নয়, তাদের এই মুহূর্তেই থামানো জরুরি, বলছেন তিনি। 

এমন সময় আইএইএ’র বিস্ফোরক এই প্রতিবেদন প্রকাশ পেলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে ইরানের সাথে একটি চুক্তির কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্র। এরই মাঝে এই প্রতিবেদন নতুন জটিলতা তৈরি করে কিনা তাই দেখার বিষয়। 

এদিকে ইরান বরাবরই তাদের পরমাণু কার্যক্রমকে শান্তিপূর্ণ বলে উল্লেখ করে আসছে। কিন্তু তা বিশ্বাস করে না ইসরাইল। সার্বিক প্রেক্ষাপটে নিজের অস্তিত্বের জন্য গুরুতর হুমকি বিবেচনায় যে কোনো দিন ইসরাইল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে, বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা তথ্য তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে।