ছেলেকে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন মা, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে আবেগঘন দৃশ্য

ছবি: সংগৃহীত
বিভিন্ন কারণে ভারতে বসবাস করা পাকিস্তানি নাগরিকরা এবার ফিরে যাচ্ছেন নিজ দেশে। গত ২৯ এপ্রিল ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে দেখা মেলে এক আবেগঘন দৃশ্য। এসব আবেগময় মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী করেন এএফপির এক আলোকচিত্রী। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০০-র বেশি পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ত্যাগ করে নিজ দেশে ফিরে গেছেন।
এদিন সীমান্তে বিদায়বেলায় দেখা যায় প্রিয়জনদের কান্না, আলিঙ্গন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘদিন থাকার পর এই বিদায় ছিল অনেকের কাছেই অত্যন্ত বেদনাদায়ক। কেউ বাবা-মাকে বিদায় জানালেন, কেউ সন্তানকে, কেউবা স্বামী বা স্ত্রীকে। এক পাকিস্তানি নাগরিক তার ভারতীয় পুত্রকে আলিঙ্গন করে কাঁদতে কাঁদতে বিদায় নেন। এক পাকিস্তানি বধূ তার ভারতীয় স্বামীকে বিদায় জানান। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
ভারতে আসা পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য স্বল্পমেয়াদি ১২টি ভিসার আওতায় দেশ ত্যাগের নির্ধারিত শেষ দিন ছিল ২৭ এপ্রিল। এদিকে, চিকিৎসা ভিসার জন্য সময়সীমা ছিল ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত। ফলে, ২৯ এপ্রিল সীমান্তের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
সীমান্ত চৌকিতে এদিন উপস্থিত বিএসএফ সদস্যরা পাসপোর্ট ও অন্যান্য নথি যাচাই করছিলেন। নথিপত্র যাচাইয়ের সময় সীমান্তের আবহ ছিল আবেগে ভরা। বিদায় জানিয়ে হাত নাড়ছিলেন অনেকেই। আর ফিরে তাকিয়ে কাঁদছিলেন প্রিয়জনদের দিকে।
এদিন আবেগ, ভালোবাসা ও বিচ্ছেদের মুহূর্তগুলো রাজনীতি থেকে অনেক উপরে উঠে এসে মানবিকতার উদাহরণ তৈরি করেছিল। সীমান্তের দুই পাশের মানুষ একে অপরকে দেখিয়েছিল সহানুভূতি ও সম্মান।
জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলার পর পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা সুবিধা বাতিল করে দেয় ভারত। পরদিন পাকিস্তানও ভারতীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থা নেয়। ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানি নাগরিকদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে, জম্মু ও কাশ্মিরের আকাশযাপন কেন্দ্রগুলো বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ভারত। বর্তমানে সেখানে ভারতীয় সেনাদের গণগ্রেপ্তার ও ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। ফলে, প্রায় ৪৮টি রিসোর্ট অস্থায়ীভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সেদিন, হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া পর্যটকদের দাবি, আক্রমকারীরা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আলাদা করে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করেছে। তবে, কিছু পর্যটক জানিয়েছেন, হামলাকারীরা দূর থেকে গুলি চালিয়েছিল। ফলে, এই ঘটনায় দুই ধরনের তথ্য উঠে আসছে।
জম্মু ও কাশ্মিরে ঘটে যাওয়া সশস্ত্র হামলাগুলোকে প্রায়ই ক্রস-বর্ডার ‘পাকিস্তানি সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ বলার চেষ্টা করে থাকে ভারত। তবে, পাকিস্তানও এই হামলাগুলোর সাথে নিজেদের সম্পর্ক থাকার কথা বরাবরই নাকচ করে আসছে।
২০১৯ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জম্মু-কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অঞ্চলটিকে কেন্দ্রের আওতায় নিয়ে আসে। এতে, সেখানে পর্যটন খাতের উন্নতি করার চেষ্টা করা হয়।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: