ট্রাম্পের কাছে প্রকাশ্যে হেনস্তার শিকার বিশ্বনেতারা

ছবি: সংগৃহীত
ওভাল অফিসে আমন্ত্রণ পাওয়া যে কোনো বিশেষ সম্মানের বিষয় নয়, তা বর্তমানে বিশ্বনেতারা বুঝতে শুরু করেছেন। অনেক সময়ই এই বৈঠকগুলো উত্তেজনা ও বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে থাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রে ওভাল অফিসে সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টকে প্রকাশ্যে অপমান করলেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের জন্য এ ধরনের আচরণ নতুন কিছু নয়। এর আগেও তিনি বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতাকে ওভাল অফিসের বৈঠকে অপমান করেছেন।
২১ মে সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সঙ্গে ট্রাম্পের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ট্রাম্প যেন পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে অপমান করতে মঞ্চই তৈরি করে রেখেছিলেন। এদিন দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে কিছুটা স্বাভাবিক কথোপকথন হচ্ছিল। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে সাউথ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে কথিত নিপীড়নের একটি সুচিন্তিত ও সুসংগঠিত অভিযোগ উত্থাপিত হয়।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা সেই আলোচনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প সাউথ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের প্রতি হওয়া অত্যাচার নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ভিডিও ও ছবি দেখাতে থাকেন। তিনি বলেন, অনেক শ্বেতাঙ্গ কৃষককে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দিয়েছেন। তবে রামাফোসা এসব বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। ট্রাম্প এদিন রামাফোসার ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। যদিও প্রত্যাশিত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ওভাল অফিসে দেখা করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পও কয়েক মাস ধরেই কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য করার কথা বলে আসছেন। এই বৈঠকে ট্রাম্প আবারও প্রকাশ্যে বলেন, তার কাছে কানাডা দখলের ইচ্ছা এখনও আছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সীমান্তকে অর্থহীন একটি রেখা হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে কার্নির কাছে এটি প্রথম সুযোগ ছিল সরাসরি ট্রাম্পের সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে নিজের দেশের পক্ষে কথা বলার। এসময় প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, কিছু কিছু জায়গা কখনোই বিক্রির জন্য নয়।
২০২৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎকালের কিছু ঘটনা সোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। প্রথমত ট্রাম্প নিজে ম্যাক্রোঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হননি। পরবর্তীতে, ওভাল অফিসে জি-৭-এর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স চলাকালীন সময় ম্যাক্রোঁকে ট্রাম্পের ডেস্কের কোণে একটি ছোট চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়।
ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যেও তীব্র মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। ট্রাম্প প্রকাশ্যে তার এই বিদেশি অতিথিকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেন। পরে ট্রাম্প ও তার শীর্ষ উপদেষ্টারা একসঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন যে, জেলেনস্কি এখন আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত নন। তাকে সভা থেকে প্রস্থান করতে বলা হয়।
ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকটিও বেশ ভালো কাটেনি। সোশাল মিডিয়ায় অনেকেই বলছেন, এই বৈঠকে ট্রাম্প মোদীকে উপেক্ষা করেছেন। এদিকে, ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ কর্মসূচির অন্যতম মূল কৌশল হলো জনগণের ক্ষোভ ও অসন্তোষকে চাঙ্গা রাখা। ডোনাল্ড ট্রাম্প ভালোভাবে জানেন তার সমর্থকরা ঠিক কী ধরনের আচরণ ও বার্তা প্রত্যাশা করে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: