ইউক্রেনে বৃহত্তম রুশ হামলার পর পুতিনকে `বেপরোয়া` বললেন ট্রাম্প (ভিডিও)
ইউক্রেন যুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালালো রাশিয়া। এই হামলায় রুশ বাহিনী ইউক্রেনের একাধিক শহরে প্রায় ৩৬০টি ড্রোন ব্যবহার করেছে, যা এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ ড্রোন আক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
২৪মে রাতে রুশ বাহিনীর চালানো এই হামলায় কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণ, অগ্নিকাণ্ড এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের খবর পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের শব্দ, ধোঁয়া আর আগুনে ছেয়ে যায় কিয়েভ, খারকিভ, লভিভসহ একাধিক শহর। রাতভর এই সমন্বিত হামলায় মূলত বেসামরিক নাগরিক ও অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু ছিল। সিএনেনের প্রতিবেদন বলছে, হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৬০ জন।
এই হামলার চারদিন আগে রাশিয়ার কুর্স্ক ওব্লাস্ট অঞ্চলে ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হত্যা করতেই সেই হামলা চালিয়েছিলো ইউক্রেনের সেনারা। কেননা সেসময় পুতিনের হেলিকপ্টারটি ওই ড্রোন হামলার 'কেন্দ্রস্থলে' ছিল। পুতিনকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিশাল ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার মধ্যে আটকা পড়েছিলো। তবে হামলার সময় রুশ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ৪৬টি ড্রোন ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। ফলে অল্পের জন্য বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পেয়ে যান পুতিন।
এ ঘটনার পর রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লেভরভ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এসব হামলার ‘প্রত্যুত্তর’ অবশ্যই দেওয়া হবে। অনেকের মতে পুতিনকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের চালানো সেই হামলার উপযুক্ত জবাব দিতেই এত বড় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তবে বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, রাশিয়া চায় পশ্চিমা দেশগুলো যেন যুদ্ধ নিয়ে ক্লান্তি অনুভব করে এবং ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়া কমিয়ে দেয়। রাশিয়া চায় বিশ্বের প্রতিক্রিয়া যেন দুর্বল থাকে এবং তাদের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা না আসে। অর্থাৎ, এই ধরনের আক্রমণ কূটনৈতিক চাপ তৈরিরও একটি কৌশল।
এমন অবস্থায় ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়ার নেতৃত্বের ওপর কঠোর চাপ না দিলে তাদের বর্বরতা বন্ধ করা যাবে না। তার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের নীরবতা পুতিনকে উৎসাহিত করছে। অবশ্য রাশিয়ার তীব্র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুতিনকে 'বেপরোয়া' বলে আখ্যা দিয়েছেন। ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “আমি পুতিনের আচরণে সন্তুষ্ট নই। তিনি অযথাই প্রচুর মানুষ হত্যা করছেন। আমি বুঝতে পারছি না তার কী হয়েছে”।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখন নিয়ন্ত্রণ হারানোর পথে। ড্রোন যুদ্ধের এই নতুন অধ্যায় আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ইউক্রেনের মাটিতে এই সর্ববৃহৎ আক্রমণ বিশ্ববাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে—এই লড়াই এখনও শেষ হয়নি, বরং আরও ভয়ংকর রূপ নিতে চলেছে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: