ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি না দিতে ইউরোপীয় দেশগুলোকে ইসরাইলি আল্টিমেটাম

জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪৭ সদস্যই ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা সংস্থাটির মোট সদস্য সংখ্যার ৭৫ শতাংশেরও বেশি। এর মাঝে গাজায় ইসরাইলিদের চলমান গণহত্যা ও আগ্রাসন শুরুর পর স্পেনসহ ইউরোপের বেশকিছু দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ইসরাইলের জন্য যা এক ভয়াবহ ক্ষতি।
এরই মাঝে প্রভাবশালী ফ্রান্সসহ ইউরোপের আরো বেশকিছু দেশ নিকট ভবিষ্যতেই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার কথা ভাবছে। বিষয়টি এগিয়ে নিতে জোরালো তৎপরতা চালাচ্ছে ইউরোপ ও আরব বিশ্বের দেশগুলো। এর অংশ হিসেবে ২৫ মে মাদ্রিদে স্পেনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশেষ এক সম্মেলন। এতে অংশ নেয় ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সৌদি আরব, কাতার ও ব্রাজিল। সম্মেলনের আলচ্যসূচিতে ছিল, গাজা যুদ্ধ বন্ধ, আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ায় ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দান।
সব মিলিয়ে ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ব্যাপক মাত্রায় বাড়ছে। এই চাপ সামাল দিতে এবারে ইউরোপ ও আরব দেশগুলোর উদ্দেশে ভয়াবহ এক আল্টিমেটাম দিয়েছে দেশটি। এসব দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি জানিয়েছে তারা।
এ ব্যাপারে ইউরোপের দেশগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে তেল আবিব বলছে, তাদের সম্মতি ছাড়া ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়া হলে পশ্চিম তীরের একাংশ ইসরাইলের মানচিত্রের সাথে যুক্ত করা হবে। এরই মাঝে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যকে এই সতর্কবার্তা জানিয়েছেন ইসরাইলের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার রন ডার্মার। একই সাথে পশ্চিম তীরে ইসরাইলের অননুমোদিত সেনা চৌকিগুলোকে বৈধতা দেয়ার হুঁশিয়ারি জানানো হয়েছে।
প্রভাবশালী গণমাধ্যম ইসরাইল হেয়ম জানিয়েছে, ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়েন সারও ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে একই ধরনের বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, অন্যরা পদক্ষেপ নিলে ইসরাইলও পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। তাদের পদক্ষেপ একপেশে হলে, প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ইসরাইলের পদক্ষেপও একপেশে হবে। সে ক্ষেত্রে পশ্চিম তীরের যেসব অঞ্চল ইহুদি দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে, ইসরাইল সেগুলোকে নিজের আওতাভুক্ত করবে। একই সাথে জর্ডান উপত্যকাকেও মানচিত্রের সাথে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন গিডিয়েন সার।
ইসরাইলের মতে, এখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার মধ্য দিয়ে মূলত হামাসকেই পুরস্কৃত করা হবে। পুরস্কৃত করা হবে ৭ অক্টোবর ইসরাইলে তাদের হামলাকে।
অন্যদিকে স্পেনের সাম্প্রতিক সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে মানুয়েল আলবারেজ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের একমাত্র সমাধান হলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। এরই মাঝে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে আগামী মাসেই জাতিসংঘে একটি সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে ফ্রান্স। যুক্তরাষ্ট্র ওই সম্মেলনে অংশ না নেয়ার কথা জানিয়েছে। অন্যদিকে দুইভাগ ইউরোপের দেশগুলো। স্পেন ও মাল্টা ওই সম্মেলনের পক্ষে থাকলেও জার্মানি, হাঙ্গেরিসহ কিছু দেশ এর বিরোধিতা জানাচ্ছে।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: