• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালুর সিদ্ধান্তে ভারতের উদ্বেগ (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৫:৩০, ২৮ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা লালমনিরহাট বিমানবন্দর। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানবন্দরটি ১৯৩১ সালে ব্রিটিশ সরকার নির্মাণ করে। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। একসময় এটি ছিল এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর।

সম্প্রতি বহু বছর ধরে পরিত্যক্ত লালমনিরহাট বিমানবন্দর পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু হলে, এটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে পারে। আর এই খবর চাউর হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছে নিকট প্রতিবেশী ভারত। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, লালমনিরহাট বিমানবন্দর ভারতের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে এবং কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ‘সিলিগুড়ি করিডর’ বা ‘চিকেনস নেক’-এর খুব কাছাকাছি অবস্থিত। ফলে বাংলাদেশের এমন উদ্যোগে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে ভারত সরকার।

ভারত আশঙ্কা করছে, লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালুর পেছনে চীনের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। ভবিষ্যতে সেখানে সামরিক অবকাঠামো—যেমন ফাইটার জেট, রাডার ও নজরদারি সরঞ্জাম স্থাপনের সুযোগ তৈরি হতে পারে, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। বিমানবন্দর চালু হলে সেখানে আন্তর্জাতিক যাত্রী ও কার্গো চলাচল শুরু হবে, যা ভারতের জন্য সীমান্ত নজরদারি ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বাড়াতে পারে। পাশাপাশি লালমনিরহাট বিমানবন্দর নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে আঞ্চলিক ট্রানজিট হাবে পরিণত হয়ে উঠতে পারে। এতে বাংলাদেশের আঞ্চলিক প্রভাব বাড়বে, যা ইতি ঘটাবে ভারতের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের।  

বাংলাদেশের এই পদক্ষেপের খবর প্রকাশের পরপরই পাল্টা উদ্যোগ নিচ্ছে ভারত সরকার। ত্রিপুরা রাজ্যের তিন দশক ধরে পরিত্যক্ত কৈলাশহর বিমানবন্দর পুনরায় চালু করার তোড়জোড় শুরু করেছে দেশটি। ইতোমধ্যে ত্রিপুরা সরকারের পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিমানবন্দরটি পরিদর্শন করেছেন। Alliance Air এবং Spirit Air নামক দুটি বেসরকারি বিমান সংস্থা কৈলাশহর বিমানবন্দর থেকে ছোট আকারের বিমান পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে অপারেশনাল পরিকল্পনা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। প্রথম পর্যায়ে, বিদ্যমান অবকাঠামোর সংস্কার করে কৈলাশহর থেকে আগরতলা ও কলকাতার মধ্যে ছোট বিমানের চলাচল শুরু করার লক্ষ্য রয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হয়েছে, লালমনিরহাট বিমানবন্দর একটি জাতীয় সম্পদ, এবং জাতীয় স্বার্থেই এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। তবে ভারতীয়দের অনেকে এটিকে কৌশলগত হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছেন। আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর চালু করতে গেলে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষা সংক্রান্ত সমঝোতা দরকার হয়। এছাড়া বিমান চলাচলের রুট, সময়, নিরাপত্তা কোড এ সব কিছুতেই সমন্বয় প্রয়োজন হয়। ফলে লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালু করার উদ্যোগে ভারত নিরাপত্তাজনিত আপত্তি তুলবে নাকি সহযোগিতা করবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
 

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন: