ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভে উত্তাল আমেরিকা

ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী অভিযানের জেরে বিক্ষোভ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। সহিংস বিক্ষোভের কারণে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। এদিকে শহরে প্রায় ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাট নেতারা। এসব তোয়াক্কা না করে আবারও ১০ জুন আরও ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ও ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
লস অ্যাঞ্জেলেসে যখন ফেডারেল ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা বিপুল সংখ্যায় অবৈধ অভিবাসীদের আটক করতে শুরু করেন, তখন সাধারণ মানুষ এর বিরোধিতায় রাস্তায় নামেন। বিক্ষোভ শুরুতে শান্তিপূর্ণ থাকলেও পরে তা সহিংস রূপ নেয়। এদিকে বিক্ষোভকারীরা একটি মহাসড়ক অবরোধ করে ফেলেন। পড়ে তারা কিছু চালকবিহীন গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা অশ্বারোহী ইউনিটকে টার্গেট করে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্মকর্তারা ‘ফ্ল্যাশ ব্যাং’ গ্রেনেড ও ‘পিপার স্প্রে’ ব্যবহার করেন। এছাড়া, ওই এলাকায় লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েনের পর ক্যালিফোর্নিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। ১৯৬৫ সালের পর এই প্রথমবার কোনো অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের অনুরোধ ছাড়াই কেন্দ্রীয়ভাবে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক অভিবাসন সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলোকে দেশব্যাপী অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিবাসনবিরোধী অভিযান হিসেবে বিবেচনা করছেন। এদিকে, লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাসরত মানুষের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি বিদেশে জন্মগ্রহণ করায় এই অঞ্চলটি এমন অভিযানের জন্য অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
২০২৫ সালের মে মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) জানায়, তারা সেখানে এক সপ্তাহব্যাপী অভিযান চালিয়ে ২৩৯ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে। তবে এই সংখ্যা ট্রাম্পের প্রত্যাশার তুলনায় ছিল খুবই কম। তিনি আরও ব্যাপক ফলাফল দেখতে চেয়েছিলেন।
ফলে হোয়াইট হাউসের নির্দেশে আইসিই প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার অভিবাসীকে আটক করার কাজ শুরু করে। আগের চেয়ে এখন এই ধরপাকড়ের পরিসর আরও প্রসারিত হয়েছে। এদিকে রেস্তোরাঁ, দোকান ও অন্যান্য কর্মস্থলেও অভিযান চালানো হচ্ছে। এই বৃহৎ অভিবাসনবিরোধী অভিযানে যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাদের এল সালভাদরের একটি বড় কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। তবে জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে একজন বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন। ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই আইনি বিরোধিতার মুখে পড়েছে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: