বিমানবন্দরে বাঁধা হলো ভারতীয় শিক্ষার্থীর হাত-পা (ভিডিও)
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো ১০৪জন অবৈধ ভারতীয়কে নিজ দেশে ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। হাতে হাতকড়া ও পায়ে শিকলের বেড়ি পড়িয়ে সামরিক বিমানে করে ভারতে ফেরত পাঠানোর সে ঘটনায় ভাটা পড়ে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে।
সেই ঘটনায় ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হলেও তাতে পাত্তা দেয় নি ট্রাম্প প্রশাসন। উল্টো সে মাসেই দ্বিতীয় ব্যাচে আরও ১১৬ জন ভারতীয়কে ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পরও ভারতীয় অভিবাসীদের শিকলে বেঁধেই ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজারেরও বেশি ভারতীয় নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এতদিন এমন অপমান শুধু অবৈধ ভারতীয়দেরই সহ্য করতে হতো। তবে সম্প্রতি ট্রাম্পের বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভিসাসংক্রান্ত নীতিমালার কারণে বিপাকে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসা ভারতীয় শিক্ষার্থীরাও। আর তারই জেরে এবার অমানবিক আচরণের শিকার হলেন এক ভারতীয় শিক্ষার্থী।
দেশে ফেরত আসার আগে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হলেন এক ভারতীয় শিক্ষার্থী। গত ৯জনু রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির নিয়ার্ক বিমানবন্দরে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীটিকে চেপে ধরে আছেন চার পুলিশ সদস্য। যার মধ্যে দুজন হাটু গেড়ে তার ওপর বসে ছিলেন। এরপর তারা তার হাত ও পা বেঁধে ফেলে।
এই ঘটনার একটি ভিডিও করেন ভারতীয়-আমেরিকান শিল্পপতি কুনাল জৈন। মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্স-এ ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে কুনাল জৈন লিখেন, “তরুণ ভারতীয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে অপরাধীর মতো আচরণ করা হয়েছে। এটি একটি মানবিক বিপর্যয়।”
আটক হওয়া সেই শিক্ষার্থীর অপরাধ কি ছিলো তা স্পষ্ট করে নি পুলিশ। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈধ পথেই এফ ওয়ান স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু নথিপত্রে ভুল তথ্য দেওয়ার কারণে পুলিশ তাকে আটক করে।
এই ঘটনায় ভারত জুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিউইয়র্কের ভারতীয় কনস্যুলেট জানিয়েছে, তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং ভারতীয় নাগরিকদের স্বার্থে তারা পদক্ষেপ নেবে। যদিও মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে আসা ব্যক্তিদের স্বাগত জানানো হয়। তবে অবৈধ প্রবেশ, ভিসার অপব্যবহার বা মার্কিন আইন লঙ্ঘন কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।
মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অনেকেই মার্কিন প্রশাসনের এসব কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানালেও, ট্রাম্প তার কঠোর অভিবাসন নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফলে দেশটিতে অবৈধ ও বৈধ দুই ধরনের ভারতীয় অভিবাসীরাই নিরাপত্তাহীনতার কারণে মানসিক চাপ ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। বাধ্য হয়ে আবার অনেকে স্বেচ্ছায় ফিরে যাচ্ছেন নিজ দেশে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: