সড়কপথে গাজা অভিমুখে রওনা দিয়েছেন হাজারো অধিকারকর্মী (ভিডিও)

গাজার দীর্ঘ অবরোধের অন্ধকারে আলো জ্বালাতে, শত শত সাহসী মানবাধিকার কর্মী সড়কপথে গাজার দিকে রওনা দিয়েছেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতীকী এই অভিযানের মাধ্যমে গাজার ওপর আরোপিত অবরোধ ভাঙা এবং আন্তর্জাতিকভাবে সচেতনতা সৃষ্টি করা। ফলে এই বহর শুধু একটি যাত্রা নয়, বরং মানবতার প্রতি এক অবিচল সংকল্প ।

গত ৯ জুন ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ইসরাইলের অবরোধ ভাঙতে তিউনিশিয়া থেকে সড়কপথে গাজা অভিমুখে রওনা দিয়েছেন শত শত অধিকারকর্মী। ‘ক্বাফিলাতুস্ সুমুদ’ নামের এই বহরটিতে শতাধিক গাড়ি এবং কয়েক ডজন বাস রয়েছে। এই দলটিতে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ লোক রয়েছে। তারা আলজেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মরক্কো, ও তিউনিশিয়ার নাগরিক। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতীকী এই অভিযানের মাধ্যমে গাজার ওপর আরোপিত অবরোধ ভাঙা এবং আন্তর্জাতিকভাবে সচেতনতা সৃষ্টি করা।

১১ জুন বহরটি এখন লিবিয়ার জাউইয়া শহরে পৌঁছায়। লিবিয়া থেকে আরও অনেক লোক এই বহরে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। লিবিয়ায় বহরটি পৌঁছানোর পর তাদের অভিবাদন জানান হাজার হাজার মানুষ। এছাড়া বহরের গাড়িগুলোকে নিরাপত্তা দেয় সেখানকার পুলিশ।
সট- ''এই আন্দোলনের একটি স্পষ্ট লক্ষ্য রয়েছে। আর সেটি হলো, ফিলিস্তিনের মুক্তি এবং গাজায় আমাদের ভাইদের উপর অবরোধ ভেঙে ফেলা। তাদেরকে নির্মূল করা হচ্ছে। ক্ষুধার্ত অবস্থায় তাদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে এবং নির্যাতন করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্যের শেষ বিন্দুতে পৌঁছানো পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।''

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১২ জুন লিবিয়া থেকে বহরটি মিশরের কায়রোতে যাওয়ার চেষ্টা করবে। এরপর আগামী ১৫ জুন গাজা সীমান্তবর্তী রাফা ক্রসিংয়ে পৌঁছাবে। তবে মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজা সংলগ্ন সীমান্ত এলাকায় আরিশ শহর এবং রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং রয়েছে। সেখানে যাওয়ার আগে যেকোনো বিদেশি প্রতিনিধিদলকে অনুমতি নিতে হবে। 

এদিকে ফিলিস্তিনের দিকে যাত্রা করা বিশাল বহর নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে ইসরাইল। দখলদার ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ঘোষণা দিয়েছেন, বহরটিকে গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কারণ এতে তাদের সেনারা ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। ফলে বহরটির যাত্রা আটকাতে মিসরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গত সপ্তাহে অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন পরিচালিত ম্যাডলিনা জাহাজে পরিবেশবাদী গ্রেটা থানবার্গসহ ১২ অধিকারকর্মী গাজার ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ নিয়ে ইতালি থেকে রওনা করেছিল। কিন্তু জাহাজটি আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা থেকে দখলে নিয়ে নেয় ইসরাইলি নৌবাহিনী। পরে তাদের ইসরাইলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে চারজনকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হলেও বাকিরা এখনো ইসরাইলেই রয়েছেন।