কেমন হবে ইরানের প্রতিশোধ? (ভিডিও)
ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর এখন তীব্র উৎকণ্ঠায় রয়েছে পুরো বিশ্ব। শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের বাংকার-বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করে। এর পরপরই ইরান প্রতিশোধের ঘোষণা দেয়। কিন্তু এই প্রতিশোধ ইরান ঠিক কীভাবে নিবে, সেটি নিয়েই চলছে আলোচনা।
বিবৃতি, নিন্দা আর উদ্বেগ--এই তিনেই আটকে আছে ইরানের পক্ষে বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া। মার্কিন-ইসরাইলি হামলার জবাব দিতে ইরানের পাশাপাশি তার বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা কী হবে— তা নিয়েই এখন উঠছে প্রশ্ন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর মধ্যপ্রাচ্যে ইরানই একমাত্র দেশ যাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের।
চমলান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য এরই মধ্যে মস্কো পৌঁছেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইরানি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, আব্বাস আরাঘচি প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ রাশিয়ান কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া বক্তব্যেও মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য দিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া।
ইরানের আরেক মিত্রদেশ চীনের অবস্থান কি হবে তা নিয়ে এখনো রয়েছে ধোঁয়াশা। বরাবরই মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে দেশটিকে। তবে সরাসরি সংঘাতে জড়ানোর সম্ভাবনা কম বলেই মত বিশ্লেষকদের। ফলে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের জন্য অন্ধকারে প্রদীপ হতে পারে রাশিয়া।
রাশিয়া ও ইরান উভয়ই বিশ্বের প্রধান তেল ও গ্যাস রপ্তানিকারক। তারা চায় পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে বাজারে প্রবেশ করতে এবং বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সংঘাতে জড়ানোর ক্ষেত্রে রাশিয়ার বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। রাশিয়া নিজেই ইউক্রেন যুদ্ধে এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত। সরাসরি মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে রাশিয়া প্রস্তুত নয়। তারা চাইবে ইরানকে সহায়তা করলেও, বড় সংঘর্ষ এড়িয়ে চলতে। ফলে যুদ্ধের মাঠে হয়ত ইরানকে একাই লড়তে হবে।
রাশিয়ার ফেডারেশন কাউন্সিলের ভাইস স্পিকার কনস্টান্টিন কোসাচেভ বলেছেন—ইরাক, লিবিয়া ও ইরানের মতো দেশগুলো পারমাণবিক শক্তি না থাকায় সহজে হামলার শিকার হয়েছে। কিন্তু ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া ও ইসরাইলের মতো অস্ত্রধারী দেশগুলোকে কেউ ছুঁয়ে দেখে না। আর এ থেকেই স্পষ্ট, আত্মরক্ষার জন্য পারমাণবিক শক্তি অর্জনই নিরাপত্তার একমাত্র ভরসা হয়ে উঠছে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: