খামেনিকে আক্রমণ ট্রাম্পের, পরমাণু কর্মসূচি চালু হলে ইরানকে বোমা মারার হুঁশিয়ারি

ছবি: সংগৃহীত
আবারও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে উদ্দেশ্য করে কঠোর মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে খামেনি বলেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরান বিজয় অর্জন করেছে। এ বক্তব্যকে ঘিরে ট্রাম্প কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে খামেনির তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি মিথ্যা দাবি করছেন যে ইরান সদ্য শেষ হওয়া ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরাইলের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে। এসময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কার্যক্রম পুনরায় শুরু করে, তাহলে দেশটির উপর আবারও নিঃসন্দেহে বোমা হামলা করা হবে।
এসময় ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ইরানের ৩টি পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা খামেনিকে এক ভয়ঙ্কর ও অপমানজনক মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তবে এক ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ট্রাম্পের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলা হয়, মার্কিন হামলাগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস করতে পারেনি, বরং তা সাময়িকভাবে কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে।
এদিকে ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি জানতেন খামেনি কোথায় আত্মগোপনে আছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরাইল, যাদের তিনি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক শক্তি বলে মনে করেন, তাদেরকে তিনি খামেনিকে হত্যা করতে দেননি।
খামেনির বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করার কথা চিন্তা করছিলেন। তবে খামেনির ভাষণে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য থাকায় সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প আরও জানান, যদি ভবিষ্যতে প্রমাণ পাওয়া যায় যে সাম্প্রতিক হামলা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে থামাতে পারেনি, তাহলে আরও একটি হামলা চালানোর সম্ভাবনা জোরালোভাবে থেকে যাচ্ছে।
ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে বলেন, যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সত্যিই ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করতে চান, তাহলে তাকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সম্পর্কে অশালীন ও অগ্রহণযোগ্য ভাষা ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি তিনি ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেন, যেন তিনি ইরানের কোটি কোটি সমর্থকের আবেগে আঘাত না করেন।
পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে চূর্ণ-বিচূর্ণ হওয়া থেকে বাঁচতে বাবার কাছে দৌড়ে যাওয়া ছাড়া ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর আর কোনো উপায় ছিল না।
এদিকে পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার একটি বিল অনুমোদন করেছে ইরান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানিয়েছেন, বোমাবর্ষণের পর আইএইএ-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি যেভাবে পরিদর্শনের দাবি করেছেন, তা ভিত্তিহীন ও অসৎ উদ্দেশে করা হয়েছে।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরাইল কাটজ জানিয়েছেন, তাদের দেশ এখনো ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইসরাইল ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনিকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে চেয়েছিল, এবং এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতির প্রয়োজন ছিল না।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: