টেক্সাসে বন্যার জন্যে ট্রাম্পকে দায়ী করা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: হোয়াইট হাউস

ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে তাণ্ডব চালিয়ে গেছে ভয়াবহ বন্যা। প্রবল বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যাওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়েছে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ইতোমধ্যেই এই বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ, নিখোঁজ হয়েছেন অনেকে।
এখনও মেঘাচ্ছন্ন টেক্সাসের আকাশ। টেক্সাসবাসীর উপর প্রবল এই বৃষ্টি যেন নেমে এসেছিল বিশাল দুর্ভোগ হয়ে। এটি একটি আকস্মিক পরিস্থিতি, যেখানে প্রতিটি মানুষ লড়ছে অজানার মুখোমুখি হয়ে। এই দুঃসময় পেরিয়ে অনেকেই প্রাণপণে টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, টেক্সাসের বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ১০৪ জনে পৌঁছেছে। ২০টি বিপর্যস্ত এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কার অঞ্চল। সেখানে কমপক্ষে ৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ জনই শিশু।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর জুলাই মাসে কার অঞ্চলের গুয়াদালুপ নদীর তীরে গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। যা শুরু হয়েছিল ১৯৪৫ সালে। বর্তমানে এর সম্পূর্ণ তত্ত্বাবধানে রয়েছে ক্যাম্প মিস্টিক নামক একটি প্রতিষ্ঠান। ক্যাম্প মিস্টিকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বছর বন্যার কারণে গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে অংশ নেওয়া ২৮ জন কিশোরী ও তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ১০ জনের খোঁজ মেলেনি। এছাড়া একজন কাউন্সেলরও নিখোঁজ রয়েছেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আগামী ১১ জুলাই টেক্সাস সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি আবহাওয়া বিভাগে বাজেট কমানোর ফলে পূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে—এই অভিযোগ নিয়ে সমালোচনার জবাবে হোয়াইট হাউস তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে যে বন্যার জন্য দায়ী করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
অঞ্চলটিতে ৭ জুলাই টানা চতুর্থ দিনের মতো চলে উদ্ধার অভিযান। সেচ্ছাসেবী সংস্থা ও সরকারি বাহিনী উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালালেও পানির উচ্চতা ও আবহাওয়ার প্রতিকূলতার কারণে তা কিছুটা ব্যাহত হয়।
এদিকে টেক্সাসের সাম্প্রতিক বন্যায় প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ৭ জুলাই তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে জানান, শিশুদের মৃত্যুর খবরে মহাসচিব খুবই ব্যথিত। তিনি বলেন, এ মর্মান্তিক ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন মানুষ ছুটির দিনে উৎসব উদযাপন করছিল। তিনি আরও উল্লেখ করেন, মহাসচিব নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সকলের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।
বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ পর্যন্ত। হাজারো মানুষ এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কোথাও নেই বিদ্যুৎ, কোথাও আবার নেই খাবার কিংবা বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। এদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন চরম আবহাওয়া ও দুর্যোগ আগামীতেও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: