শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা

ছবি আল-জাজিরার
ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসে। শুক্রবার কারফিউ তুলে নেয়ার পর এই জরুরী অবস্থা জারির ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।
রাজাপাকসে জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, এমন পরিস্থিতিতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা প্রয়োজন। অশান্তির আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে, গ্রেফতার এবং সন্দেহভাজনদের আটক করতে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন ছিল।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতার পর ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার এই দেশটি এখন সবচেয়ে মন্দা অর্থনৈতিক অবস্থায় পড়েছে। দেশটির সরকারের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্য। এ কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানিসহ জরুরি পণ্য আমদানি করতে পারছে না সরকার। ডিজেল না থাকায় কয়েকদিন ধরে শ্রীলংকায় বাস চলাচল করতে পারেনি।
জ্বালানি সংকটে অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় বের করছেন না। দিনে ১৩ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। দেশটিতে এর আগে কখনোই এত বেশি সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার ঘটনা ঘটেনি। বিদ্যুৎ সংকটে পড়ে দেশটির প্রধান শেয়ারবাজারে লেনদেনও বন্ধ হয়ে গেছে। দেশটিতে হু-হু করে বেড়ে গেছে নিত্যপণ্যের দাম। কাগজের সংকটে অনুষ্ঠিত হয়নি পাবলিক পরীক্ষা। বন্ধ হয়ে গেছে দৈনিক পত্রিকার ছাপা সংস্করণ। প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে সরকারি বেশ কয়েকটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে শ্রীলঙ্কার সরকার বলেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে তারা আর্থিক সহায়তা চাইবে। ভারত ও চীনের কাছ থেকেও আরও ঋণ চেয়েছে দেশটি। করোনা মহামারির সময় পর্যটন খাত ও রেমিট্যান্সে বড় লোকসানের মুখে পড়ে শ্রীলংকা।
এদিকে চলমান বিক্ষোভ রাজধানীর কলম্বোর বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। নুওয়ারা এলিয়ার পার্বত্য শহরে, বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের স্ত্রী শিরন্থির ফুলের প্রদর্শনীর উদ্বোধনে বাধা দিয়েছে বলে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গল, মাতারা এবং মারাতুয়ায়ও সরকার বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। একইভাবে শ্রীলকঙ্কার উত্তরাঞ্চলীয় শহরগুলোতেও সরকার বিরোধী বিক্ষাভ হয়। এসব শহরের প্রধান সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: