• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতে সংখ্যা ৩৮০০ ছাড়িয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ০৭:২৪, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতে সংখ্যা ৩৮০০ ছাড়িয়েছে

তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বহু অংশে এক প্রবল ভূমিকম্পে অন্তত ৩৮৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কেবল তুরস্কেই মৃতের সংখ্যা ২৩৭৯ জন এবং আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৪৮৩ জন। আহতের দুই দেশ মিলে আহত বেড়ে হয়েছে ১৭ হাজারের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩৮০০০ হাজার মানুষ।  

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান সোমবারের এই ভূমিকম্পকে ১৯৩৯ সালের আরজিনক্যান ভূমিকম্পের পর ‌'সবচেয়ে বড় বিপর্যয়' হিসেবে অভিহিত করেছেন। আগের ওই ভূমিকম্পে ৩৩ হাজার লোক মারা গিয়েছিল।

দুটি দেশেই দুর্গত এলাকাজুড়ে এক বিশাল উদ্ধার অভিযান চলছে। সোমবার রাতের বেলাতেও চলে উদ্ধারকাজ। তবে গ্রাম ও শহরগুলোয় উদ্ধারকর্মীদের ধ্বংসস্তূপ অনুসন্ধানের সাথে সাথে এই সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। হাজার হাজার মানুষ এই ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

তুরস্ক সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক আবেদন জানানোর পর বিশ্ব নেতারা সাহায্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সিরিয়ায় নিহতদের মধ্যে অনেকেই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায়। এই অঞ্চলটির সীমান্তের উভয় পাশে শিবিরগুলোতে লক্ষাধিক সিরীয় শরণার্থীর আবাসস্থল।

বিবিসি সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, সোমবার ভোররাতে গাজিয়ানটেপের কাছে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। তখন সব মানুষ ঘুমে। স্থানীয় সময় আনুমানিক বেলা দেড়টায় সেখানে ৭.৫-মাত্রার নতুন এক কম্পন আঘাত হানে।

তবে কর্মকর্তারা বলেছিলেন, সেটা 'আফটারশক নয়।'

ভূমিকম্পে দুটি দেশেই শত শত ভবন ধসে পড়ার পর ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষকে বাঁচাতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তুরস্ক ও সিরিয়া ছাড়াও লেবানন, সাইপ্রাস এবং ইসরাইলজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ এর কম্পন অনুভব করেন।
এরপর তুরস্কের একই অঞ্চলে আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, যার কেন্দ্রস্থল ছিল কাহরামানমারাস শহরের কাছে।

দুর্গত এলাকা থেকে যেসব মর্মান্তিক ছবি পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বাসাবাড়ি ও সড়কে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া লোকদের সন্ধানকারী উদ্ধারকারী দলগুলোকে মরীয়া হয়ে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।

তুরস্কের ১০টি শহর ও প্রদেশের স্কুল এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি হাতায়, মারাশ এবং আন্তেপের বিমানবন্দরগুলো বন্ধ বা আংশিকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল প্রতিবেশী তুরস্কে হলেও সিরিয়াতেও বহু শত মানুষ মারা গেছে। এই দুর্যোগের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ভিডিও এবং ছবি উঠে আসছে।

আলেপ্পোর উত্তর-পশ্চিমে এক শহর থেকে পাওয়া এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে ভবনগুলো ধসে পড়ার সাথে সাথে ধুলোর বিশাল মেঘের মধ্য দিয়ে বাসিন্দারা পালিয়ে যাচ্ছে, চিৎকার করছে।

ভূমিকম্পে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকা সরকারি নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই সেখানে চিকিৎসা সেবা এবং জরুরি সরবরাহের সুযোগ সীমিত।

সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কাজ করা একটি ত্রাণ সংস্থা হোয়াইট হেলমেট জরুরি সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছে।

এই জায়গায় কেন ভূমিকম্প?
তুরস্ক পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলগুলোর একটিতে অবস্থিত। এর আগে ১৯৯৯ সালে দেশটির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।

সর্বশেষ ভূমিকম্পটি ঘটেছে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিমমুখী ‘পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্ট’-এর চারপাশে। সিসমোলজিস্টরা দীর্ঘকাল ধরে বলে আসছেন যে এই ফল্টটি অত্যন্ত বিপজ্জনক, যদিও গত ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেখানে কোনো উল্লেখযোগ্য কিছু হয়নি। তবে অতীতে এই এলাকায় কিছু মারাত্মক ভূমিকম্প হয়েছে।

বিশেষ করে, ১৮৮২ সালের ১৩ অগাস্ট সেখানে ৭.৪-মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল, যা গতকালের রেকর্ড করা ৭.৮-মাত্রার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তা সত্ত্বেও, ১৯ শতকের ওই ভূমিকম্পে অনেক শহরের প্রচুর ক্ষতি হয়। আলেপ্পো শহরে ৭০০০ মানুষ মারা যায়। শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পের আফটারশক চলতে থাকে প্রায় এক বছর ধরে।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: