• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

দেশে নারী চেয়ারম্যান ৪৫ জন

প্রকাশিত: ২২:৫১, ৮ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
দেশে নারী চেয়ারম্যান ৪৫ জন

সদ্যসমাপ্ত স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে তৃণমূল পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ৪৫ জন নারী চেয়ারম্যান জয় লাভ করেছেন। আগেরবার ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২৬ জন নারী চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। সেই ক্ষেত্রে এবার আগেরবারের চেয়ে ১৯ জন নারী চেয়ারম্যান বেশি বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে এইসব তথ্য জানা গেছে।   

সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় ধাপে মোট ৪ হাজার ৮৭টি ইউপিতে ভোট হয়। আর এতে ২৬ ইউপিতে নারী চেয়ারম্যান বিজয়ী হন। আর ২০২১ সালের ২১ জুন থেকে ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪ হাজার ৫৮টি ইউপিতে ভোট হয়। এরমধ্যে ৪৫টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নারী চেয়ারম্যান।

দলীয় প্রতীকের এই নির্বাচনে বিজয়ী ৪৫ নারী চেয়ারম্যানের মধ্যে ছয়জন স্বতন্ত্র, একজন জাতীয় পার্টি এবং বাকি সবাই সরকার দলীয় মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। 

৪৫ নারী চেয়ারম্যানঃ
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান যারা: ঢাকার নবাবগঞ্জের আগলা ইউপিতে শিরিন চৌধুরী এবং জয়কৃষ্ণপুরে রেশমা আক্তার, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের তেলিগাতী ইউপিতে মোরশেদা আক্তার, নওগাঁর সদর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউপিতে মোছা. আলফাতুন নেছা, মাগুরা সদরের মঘী ইউপিতে হাচনা হেনা, পটুয়াখালী সদরের বদরপুর ইউপিতে তানজিন নাহার সোনিয়া, শেরপুর সদরের ভাতশালা ইউপিতে নাজমুন নাহার, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের দেউলী ইউপিতে দেওয়ান তাহমিনা হক। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের নাসিরনগর ইউপিতে পুতুল রানী দাস, কক্সবাজারের রামুর দক্ষিণমিঠাছড়ি ইউপতে খোদসেতা বেগম রীনা, বরিশালের উজিরপুরের জল্লা ইউপিতে বেবী রাণী দাস, ঝালকাঠির রাজাপুর উপেজলার শুক্তগগের বিউটি শিকদার, নলসিটি উপজেলার সিদ্ধকাঠি ইউপিতে জেসমিন আক্তার, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়ায় শারমিন জাহান, বরগুনা জেলার আমতলির আড়পাঙ্গাশিয়া ইউপিতে সোহেলী পারভীন। 

পাবনার ভাংগুড়ার অষ্টামনিষা ইউপিতে সুলতানা জাহান, মাগুরার শ্রীপুরের সব্দালপুর ইউপিতে পান্না খাতুন, নড়াইলের লোহাগড়ার লোহাগড়া ইউপিতে নাজমিন বেগম, মু্ন্সিগঞ্জের সিরাজদীখানের মালখানগর ইউপিতে সানজিদা আক্তার, রাজবাড়ী সদরের বানীবহ ইউপিতে মোছা. শেফালী আক্তার, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার আমতলী ইউপিতে রাফেজা বেগম, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার বর্নি ইউপিতে মোছা. মিলিয়া আমিনুল, ফেনীর সোনাগাজীর সোনাগাজী ইউপিতে উম্মে রুমা। 

টাঙ্গাইলের গোপালপুরের হাদিরা ইউপিতে বিলকিছ জাহান, ময়মনসিংহের ভালুকার মেদুয়ারী ইউপিতে মোছা. জেসমিন নাহার রানী,  ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের বৈরচুনা ইউপিতে মোছা. টেলিনা সরকার হিমু, বগুড়ার ধনুটের নিমগাছী ইউপিতে মোছা. সোনিতা নাসরিন, সিরাজগঞ্জের বেলকুচির রাজাগঞ্জ ইউপিতে মোছা. ছনিয়া সবুর, পাবনার চাটমহরের নিমাইচরা ইউপিতে নুরজাহান বেগম, যশোরের শার্শায় লক্ষণপুর ইউপিতে মোছা. আনোয়ারা খাতুন, নড়াইলের কালিয়ায় হামিদপুর ইউপিতে পলি বেগম, মাউলী ইউপিতে রুজি হক, কক্সবাজারের চকরিয়ার পূর্ববড়ভেওলা ইউপিতে ফারহানা আফরীন মুন্না, খাগড়াঝড়ির দীঘিনালায় মেরুং ইউপিতে মাহমুদা বেগম।

বগুড়ার আদমদিঘীর সান্তাহার ইউপিতে মোছা. নাহিদ সুলতানা, যশোর সদরের ইছালী ইউপিতে মোছা. ফেরদৌসী ইয়াসমিন, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের দত্তের বাজার ইউপিতে মোছা. রোকসানা বেগম, নান্দাইলের মোয়াজ্জেমপুর ইউপিতে মোছা. তাছলিমা আক্তার, গাজীপুরের শ্রীপুরে রাজাবাড়ী ইউপিতে মোছা. হাছিনা মমতাজ, রাজবাড়ীর পাংশায় কলিমহর ইউপিতে মোছা. বিলকিছ বানু ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউপিতে নাসরিন সুলতানা দিপা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও বিজয়ী হয়েছেন যারা: নরসিংদীর বেলাবোয় বাজনাব ইউপিতে সুলতানা রাজিয়া স্বপ্না, সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার জয়নগর ইউপিতে বিশাখা সাহা, রংপুরের পীরগঞ্জের বড় দরগা ইউপিতে মোছা. মাফিয়া আকতার, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউপিতে মৌসুমী হক সুলতানা, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নে মনোয়ারা বেগম এবং বরিশাল সদরের টঙ্গিবাড়িয়া ইউপিতে নাদিরা রহমান বিজয়ী হয়েছে।

জাতীয় পার্টি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর ইউপিতে জাতীয় পার্টির মনোনীত একমাত্র নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী মোছা. সাফিয়া পারভীন জয় লাভ করেছেন।  

ইসি সূত্র জানায়, এইবার আট ধাপের ইউপি নির্বাচনে ৭১ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ৩৮৯টি এবং বাকি ইউপিতে ব্যালটে ভোট হয়। আট ধাপে চেয়ারম্যান পদে মোট ৩৭২ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।  

দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগ ছাড়া ভোটে তেমন প্রভাব দেখা যায়নি ইসির নিবন্ধনে থাকা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর। ইসির নিবন্ধনে বর্তমানে ৩৯টি রাজনৈতিক দল রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ১০টি দলের মনোনীত প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন। স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে ২৯টি দলের কোনো চেয়ারম্যান নেই। এই নির্বাচনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে।

এক নজরে চেয়ারম্যান পদে জয়ীদের চিত্র-

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগঃ ২১৩৯ (বিনাভোটে ৩৬৮)

প্রথম ধাপে ২২৫ টি (বিনাভোটে ৭১), দ্বিতীয় ধাপে ৪৮৫ (বিনাভোটে ৭৯), তৃতীয় ধাপে ৫২৫ (বিনাভোটে ৯৯),  চতুর্থ ধাপে ৪১১ (বিনাভোটে ৪৬), পঞ্চম ধাপে ৩৪১ (বিনাভোটে ৪৭), ষষ্ঠ ধাপে ১১৭ (বিনাভোটে ১২), সপ্তম ধাপে ৪০ (বিনা ভোটে ১১) এবং অষ্টম ধাপে ৭ (বিনা ভোটে ৩)।

স্বতন্ত্রঃ ১৭৯১ (বিনাভোটে ৬)

প্রথম ধাপে ৮৮, দ্বিতীয় ধাপে ৩৩০ (বিনাভোটে ২), তৃতীয় ধাপে ৪৪৬ (বিনাভোটে ১), চতুর্থ ধাপে ৩৯৮ (বিনাভোটে ২), পঞ্চম ধাপে ৩৪৬ (বিনাভোটে ১), ষষ্ঠ ধাপে ৯৫, সপ্তম ধাপে ৮৬ এবং অষ্টম ধাপে ২।

জাতীয় পার্টিঃ ৪৪

প্রথম ধাপে ৩, দ্বিতীয় ধাপে ১০, তৃতীয় ধাপে ১৭, চতুর্থ ধাপে ৬, পঞ্চম ধাপে ২, ষষ্ঠ ধাপে ৩ এবং সপ্তম ধাপে ৩।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশঃ

প্রথম ধাপে ১, দ্বিতীয় ধাপে ৪, তৃতীয় ধাপে ১ এবং চতুর্থ ধাপে ২।

জাতীয় পার্টি-জেপিঃ

প্রথম ধাপে ৩, দ্বিতীয় ধাপে ১, চতুর্থ ধাপে ১, ষষ্ঠ ধাপে ১ এবং সপ্তম ধাপে ১।

এছাড়া বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে একটি করে মোট ২টি, খেলাফত মজলিশ দ্বিতীয় ধাপে ১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) দ্বিতীয় ধাপে ১টি ও তৃতীয় ধাপে ১টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ তৃতীয় ধাপে ১টি ও পঞ্চম ধাপে ২টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি দ্বিতীয় ধাপে ১টি ও পঞ্চম ধাপে ১টি এবং জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী চতুর্থ ধাপে ১টি ইউপিতে জয় পেয়েছেন।

বর্তমানে দেশে মোট ইউপির সংখ্যা ৪ হাজার ৫৭৪টি। এরমধ্যে ৪ হাজার ১৩৭টি ইউপিতে ভোটের জন্য তফসিল দিলেও ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে ৪ হাজার ৫৮টি ইউপিতে। আইনি জটিলতাসহ ও অন্যান্য নানান কারণে ভোট হয়নি ৫১৬টি ইউপিতে। নির্বাচন উপযোগী ইউপিতে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিভি/এইচকে

মন্তব্য করুন: