• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

আ.লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণের অভিযোগে সেনাবাহিনীর হেফাজতে মেজর সাদেক

প্রকাশিত: ২২:০৮, ৩১ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
আ.লীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণের অভিযোগে সেনাবাহিনীর হেফাজতে মেজর সাদেক

মেজর সাদেকের ক‍্যাপ্টেন থাকাকালীন ছবি

মেজর সাদেকুল হক সাদেক সেনাবাহিনীর হেফাজতে আছেন। তার বিষয়ে তদন্ত চলছে। দোষ প্রমাণ হলে সেনাবাহিনীর প্রচলিত নিয়মে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকা সেনানিবাসে অফিসার্স মেস-এ-তে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে সেনা সদর। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেনা সদরের সামরিক অপারেশনস পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা এসব কথা বলেন।

ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা জানতে চান, সম্প্রতি একটা ঘটনার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, মেজর সাদেক নামে একজন আওয়ামী লীগের লোকজনদের ট্রেনিং দিয়েছেন, এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান কী- এমন প্রশ্নের জবাবে ব্রিফিংয়ের প্রথমে কথা বলেন সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস পরিদপ্তরের (কর্নেল স্টাফ) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, মেজর সাদেকের বিষয়ে আমরা অবগত এবং তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে আমরা পুরোপুরিভাবে বলতে পারব। 

পরে সেনা সদরের সামরিক অপারেশনস পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, মেজর সাদেকের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। যদিও বিষয়টি তদন্তাধীন। তারপরও আমি বলব, এরকম একটা ঘটনার কথা জানার পর সেনাবাহিনীর হেফাজতেই সে আছে। তদন্ত চলমান আছে। তদন্তে তার দোষ প্রমাণিত হলে নিঃসন্দেহে সেনাবাহিনীর প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন, তাই এর বেশি এ মুহূর্তে বলা আমার মনে হয় সমীচীন হবে না।

গোপালগঞ্জের ঘটনার বিষয়ে নাজিম-উদ-দৌলা জানান, প্রত্যেকটি জীবন মূল্যবান। জীবনহানি কখনোই কাম্য নয়, আমরা আশাও করি না। গোপালগঞ্জে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা অবশ্যই দুঃখজনক। আমি আগেই বলেছি, প্রাণহানির ঘটনা আসলেই দুঃখজনক। কোন প্রেক্ষাপটে ঘটেছে, কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বল প্রয়োগ করতে হয়েছিল, সে বিষয়ে সরকারি পর্যায়ে একজন বিচারপতিকে (অবসরপ্রাপ্ত) প্রধান করে উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি খুঁজে বের করবে ঘটনাটি কীভাবে হয়েছে, কেন হয়েছে, প্রেক্ষাপট কী ছিল। আমরা সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি। 

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যেখানে সমস্যায় পড়েছে, সেনাবাহিনী গিয়ে প্রটেকশন দিয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের নাম বলেছেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে বিশেষভাবে কখনো সহায়তা করিনি। আমাদের দায়িত্বের মধ্যে আমরা কাউকে বিশেষভাবে দেখি না। আপনারা জানেন, গোপালগঞ্জে ওই রাজনৈতিক দলের অনেকেরই জীবননাশের হুমকি ছিল। তাদের জীবন বাঁচানোর জন্যই সেনাবাহিনী সহায়তা করেছে। এখানে জীবন বাঁচানোই মূল লক্ষ্য ছিল, অন্য কিছু না। 

তিনি জানান, যেকোনো রাজনৈতিক দল কোথায় তাদের সভা-মিটিং করবে, এটা বিশেষ করে স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশ বিষয়টি জানত। গোপালগঞ্জে হামলার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না। সেখানে একটা অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি ছিল। সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপই শুধু করা হয়নি, ককটেলও নিক্ষেপ করা হয়েছে। তখন সেখানে জীবননাশের হুমকি ছিল। আত্মরক্ষার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছিল, তারা বল প্রয়োগ করেছে, করতে বাধ্য হয়েছে। এখানে প্রাণঘাতী কোনো অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়নি। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বরাত দিয়ে গোপালগঞ্জের ঘটনায় সেনাবাহিনী আগে গুলি করেছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গোপালগঞ্জে কী হয়েছিল, সেটার সত্যতা উন্মোচনের জন্য একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করি, এই তদন্ত কমিটি সঠিক এবং সত্য ঘটনা উন্মোচনে সক্ষম হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে কোনো বার্তা দেওয়া হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে আমরা সরকার বা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি। তবে আমাদের একটা প্রস্তুতি আছে। পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী দলের মধ্যে কলহের বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন দুষ্কৃতকারী দল চাঁদাবাজি করছে, বিভিন্নভাবে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে। আমাদের অভিযান চলমান আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের বর্তমান যে ক্যাম্প আছে, ট্যাম্পরারি অপারেটিং বেইজ থেকেও আমরা অভিযানগুলো পরিচালনা করছি। যাতে এ ধরনের চাঁদাবাজির ঘটনা কমে আসে। 

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে একত্রে কাজ করতে হবে। সেনাবাহিনীর কথা বলতে গেলে আমাদের যে ম্যাজেস্ট্রিসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে, সেটার যে ধারাগুলো তাতে আমরা শুধু তল্লাশি ও অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পারি। অপরাধীদের গ্রেফতারের পর বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করার পর আমাদের আর করার কিছু থাকে না। এজন্য বলছি যে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাধিক কাজ করবে, তাদের আরও কার্যকর হতে হবে।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: