• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

এখনো তালিকায় ৫ লাখ ৩০ হাজার দ্বৈত ভোটার

প্রকাশিত: ১৬:৩৮, ১০ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
এখনো তালিকায় ৫ লাখ ৩০ হাজার দ্বৈত ভোটার

এখনো নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তালিকায় প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার দ্বৈত ভোটার রয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উদ্ভুত সমস্যাসমূহ নিরসনের উপায় নির্ধারণ শীর্ষক কর্মশালায় এই তথ্য জানানো হয়। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর।

কর্মশালায় গত ২৪ মার্চ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে সংরক্ষিত ডাটাবেইজের তথ্যানুসারে মূল প্রবন্ধে জানানো হয়,  দ্বৈত ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখ ২৯ হাজার ৯৯১ জন এবং একই সময়ে ইসির সার্ভারে ম্যাচ ফাউন্ড ভোটারের সংখ্যা ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭৩২।  

দ্বৈত ভোটার হওয়ার কারণে উল্লেখ করা হয়- অজ্ঞতা; ভোটার হিসাবে নিবন্ধনের পর এনআইডি কার্ড মুদ্রণ ও বিতরণ মীর্ঘসূত্রিতা অর্থাৎ সঠিক সময়ে এনআইডি কার্ড হাতে না পাওয়া; দ্বৈত ভোটার হওয়া দন্ডনীয় অপরাধ- এতদবিষয়ে যথেষ্ট প্রচার প্রচারণার অভাব; বিবাহজনিত কারণে (মহিলা ভোটারদের পিত্রালয়ে ভোটার হওয়া এবং পরবর্তীতে স্বামী.শশুর বাড়িতে পুনরায় ভোটার হওয়া); তালাকপ্রাপ্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে স্বামীর নাম গোপন করে ভোটার হওয়া; ভাসমান ভোটার; বিভিন্ন অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করা যেমন-বিদেশ গমন, সরকারি চাকরি লাভ, অন্যের সম্পতি দখল; অপরাধ সংঘটনের পর তা হতে মুক্তিলাভ।

ম্যাচ ফাউন্ডের ধরণ সম্পর্কে বলা হয়, নিজের সাথে ম্যাচ ফাউন্ড (এগুলোই সাধারণত দ্বৈত ভোটার); অন্যের সাথে ম্যাচ ফাউন্ড (দ্বৈত ভোটার নয়); ক্ষেত্রমতে, অ্যাফিস ম্যাচিংয়ে ধরা না পড়লে অর্থাৎ ম্যাচ ফাউন্ড না হলে দ্বৈত ভোটার হওয়া সত্ত্বেও দুটি এনআইডি ডাটাবেইজে অ্যাকটিভ থাকে।

দ্বৈত ভোটার সংক্রান্ত গৃতীত কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়, ২০১২ সালে মাঠপর্যায়ে প্রথমবারের মত উপজেলা ভিত্তিক দ্বৈত ভোটারের তালিকা সরবরাহের মাধ্যমে উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস কর্তৃক নোটিশ করে দ্বৈত ভোটারের শুনানী গ্রহণ ও অঙ্গীকারনামা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ভোটার কর্তৃক ক্ষমা প্রার্থনার আবেদনের ভিত্তিতে সুপারিশ করা হয়; ২০১৭ সালে দ্বৈত ভোটার হলে প্রথমটি বহাল থাকবে এবং দ্বিতীয়টি ডিলিট স্ট্যাটাসে থাকবে সিদ্ধান্ত হয়; ২০১৯ সারে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসার কর্তৃক বিদ্যমান ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ এবং জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০ এর সংশ্লিষ্ট ধারা অনুসারে দ্বৈত ভোটারদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়; ২০২১ সালে দ্বৈত ভোটার হওয়ার প্রবণতা রোধকল্পে সুপারিশমালা প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়; প্রস্তুতকৃত সুপারিশমালার বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.) এর নেতৃত্বে গঠিত ‘জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ কমিটির সভায় আলোচনা হয়।

সর্বশেষ এই বিষয়ে বিগত কমিশনের ৭৮তম সভায় নিম্নরুপ সিদ্ধান্ত হয়; যারা দ্বিতীয়বার ভোটার হয়েছেন এবং এনআইডি নিয়েছেন, সেসব ভোটারের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া অ্যাফিস ম্যাচিংয়ের ব্যবস্থা থাকার পর ও যেসকল কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে দ্বৈত ভোটার হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; দ্বৈত ভোটার অন্তর্ভূক্তিরোধে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে; কারিগরি দিক বিবেচনা করে মাঠ কার্যালয়ে ভোটার নিবন্ধনের সময় অ্যাফিস ম্যাচিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণের উগ্যোগ নিতে হবে; ভোটার কর্তৃক দ্বিতীয়বার অন্তর্ভূক্তির বিষয়টিসহ জাতীয় পরিচয় সংক্রান্ত অন্যান্য অনিয়ম নিষ্পত্তির জন্য উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে আহ্বায়ক এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্র বিশিষ্ট কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটি যথাযথ শুনানী গ্রহণ করে আইন সম্মত সুপারিশ প্রদান করবে। সে আলোকে কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

দ্বৈত ভোটারের আবেদন নিষ্পত্তির সুপারিশের জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসের কমিটি: সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহ্বায়ক, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সদস্য সচিব, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ও ওসি অথবা তার প্রতিনিধি সদস্য।

দ্বৈত ভোটারের আবেদন নিষ্পত্তির সুপারিশের জন্য থানা নির্বাচন অফিসের কমিটি: সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা আহ্বায়ক, থানা নির্বাচন অফিসার সদস্য সচিব, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, প্বার্শবর্তী যেকোনো থানা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ওসি সদস্য।

বিশেষ এলাকার জন্য প্রযোজ্য কমিটি: কমিশন কর্তৃক এরআগে গঠিত সংশ্লিষ্ট উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বাধীন গঠিত বিশেষ কমিটি এক্ষেত্রে বলবৎ থাকবে।

দ্বৈত ভোটার সমস্যার সমাধানের বিষয়ে এর আগে ইসি'র অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছিলেন, মাঠ পর্যায়ে কমিটি করে দ্বৈত ভোটারের বিষয়ে শুনানি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সর্বশেষ গত ২ মার্চ ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন নারী এবং ৪৫৪ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।

প্রথম থেকে এনআইডি হারানো ও সংশোধন সংক্রান্ত সেবা বিনামূল্যে দিলেও ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ফি নেওয়া শুরু করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

বিভি/এইচকে

মন্তব্য করুন: