• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

সাড়া দেয়নি তিন দল: বাকিরা আনেনি কারিগরি বিশেষজ্ঞ টিম

ইভিএম দেখতে ইসির আমন্ত্রণ

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ১৯ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
সাড়া দেয়নি তিন দল: বাকিরা আনেনি কারিগরি বিশেষজ্ঞ টিম

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ডাকে সাড়া দিয়ে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) যাচাই করার জন্য ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ  ও আন্দালিব রহমান পার্থ’র বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি এর কোনো প্রতিনিধি অংশ নেয়নি। আর বাকি ১০টি দল অংশ নিলেও তারা কারিগরি বিশেষজ্ঞ টিম নিয়ে আসেনি। শুধু জাকের পার্টি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দলটির আইটি ম্যানেজার নিয়ে এসেছিলেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, দলগুলোর প্রতিনিধিদের ইভিএমের কারিগরি দিক দেখার বিষয়েও তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। জাতীয় পার্টি ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে মত দিয়েছেন। সভায় কেউ বলেছেন ইভিএম ব্যবহার করলে ৩০০ আসনেই করতে হবে। আর না করলে একটিতেও না। কেউ আবার ইভিএম তৈরির পেছনে যাদের অবদান রয়েছে তাদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেছেন, এখনই ইভিএম ব্যবহারের নয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এটি ব্যবহার করবে। কেউ কেউ বলেছেন, ইভিএম মেশিনের কোনো দোষ নেই, তবে এর পেছনের মানুষদের সৎ হতে হবে। 

রবিবার (১৯ জুন) ১৩টি দলকে কারিগরি টিমসহ ইভিএম নিয়ে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানায় ইসি। দলগুলোর মধ্যে ১০টি দলের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। 

বৈঠকে যেসব দল উপস্থিত ছিল সেগুলো হলো- জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি-জেপি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট- বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।

ইসি প্রতিটি দল থেকে সর্বোচ্চ চারজন করে প্রতিনিধি আমন্ত্রণ জানালেও কয়েকটি দলের এর চেয়ে বেশি সংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। যদিও সভায় বসার জায়গা সংকট হওয়ায় হট্টগোলও দেখা দেয়। যদিও এই জন্য দু:খ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। 

জাতীয় পার্টির মহাসচিবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এরমধ্যে দুই জন সংসদ সদস্য ও বাকি তিন জন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে পরিচয়ে লিখেছেন। 

জাতীয় পার্টি-জেপি থেকে এসেছিলেন চারজন সদস্য; ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপ থেকে চারজন; দলের আইটি ম্যানেজারসহ জাকের পার্টি’র চার সদস্য উপস্থিত ছিলেন; বাংলাদেশ মুসলিম লীগ থেকে চারজন উপস্থিত ছিলেন; গণফ্রন্ট থেকে এসেছিলেন ছয়জন; বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি থেকে চারজন; বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ চারজন; জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) থেকে তিনজন; বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) থেকে এসেছিলেন নয় জন, দলটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদকও প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন।

সভার শুরুতে সিইসি বলেন, আমরা দু:খিত আজকে একটু গাদাগাদি হয়েছে। কারণটা হচ্ছে আমাদের ৩৯টি দল। আমরা কোনো দলকে বাদ দিতে পারছি না। আমরা এই আলোচনাটা তিনটা ফেজে করতে চাচ্ছি। এই জন্য আমরা কমফোর্টেবলি আয়োজন করতে পারিনি, সেই জন্য আমি দু:খ প্রকাশ করছি। আপনারা ক্ষমতা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

সিইসি বলেন, আমাদের আজকের আলোচনা ইভিএমের মধ্যেই সীমিত থাকবে। আমরা আজকে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাইবো না। সেটার সুযোগ আপনারা আরো পাবেন। 

ইভিএম নিয়ে বিভিন্ন ধরণের কথাবার্তা মিডিয়ার মাধ্যমে হয়েছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, আমরা সকলকে জানিয়েছি যে, ইভিএম নিয়ে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। 

তিনি বলেন, ইভিএমটা যেহেতু আমরা ব্যবহার করছি। আমাদের উদ্দেশ্য ইভিএম সম্পর্কে আপনাদেরকে ধারণা দেওয়া। কিন্তু আপনাদের মতামত কি হবে, সেটা আপনাদের স্বাধীন মতামত হবে। আমরা কোনো মতামত কারো উপর চাপিয়ে দিতে পারি না, চাপিয়ে দেবো না, সেই ধরণের কোনো ইচ্ছাও আমাদের নেই। 

আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থাকে সেগুলো আপনারা উপস্থাপন করবেন।  এই বিষয়ে আমাদের এক্সপার্ট যারা আছেন তারা তার উত্তর দেবেন যোগ করেন সিইসি। 

দুই ঘণ্টার বেশি সময় সভা শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা উনাদের ইভিএম বিষয়ে বক্তব্য রাখার জন্য চিঠি দিয়ে বলেছিলাম। যে কোনো প্রস্তাবই কন্সট্রাকটিভ। আলোচনা মূল্য দিয়ে বিবেচনা করবো।.. ইভিএমের ব্যাপারে অনেকের বক্তব্য ইতিবাচক, আবার অনেকে বলেছেন ইভিএম ব্যবহার করা সমীচীন হবে না। কিন্তু ইভিএমের অনেক বিষয় উনাদের অজানা ছিল সেখানে আমাদের বিশেষজ্ঞরা বিষয়গুলো বুঝিয়ে বলেছেন।

দলগুলোকে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করার অনুরোধ করে সিইসি বলেন, আপনাদের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করাতে পারেন, আমরা স্বচ্ছ থাকতে চাই। এখানে এ জটিলতা আছে, দুর্নীতি আছে, অসততা আছে-আজও আপনারা দেখেন, পরেও এসে দেখতে পারেন। 

এরআগে বিকাল ৩টায় সভাটি শুরু হয়। সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.), বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর, বাংলাদেশ মিশন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড (বিএমটিএফ) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন, ইসির সাবেক ডিজি এনআইডি ও পিডি ইভিএম, বর্তমানে সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, ইভিএম প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসানসহ ইসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে যন্ত্রটি প্রদর্শন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কারিগরি বিষয়ে প্রশ্নোত্তর, মত বিনিময়ের জন্য এই ব্যবস্থা নিচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। এর মধ্যে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও ইভিএম নিয়ে মত বিনিময় করেছে কমিশন। 

এছাড়া অংশীজনের সঙ্গে ইসির চলমান সংলাপে ইভিএম নিয়ে পক্ষ বিপক্ষে মত এসেছে। কমিশনও বলছে, সবার মতামত পর্যালোচনা করেই ইভিএমের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নিবন্ধিত ৩৯টি দলকে তিনভাগে ভাগ করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে আগামী ২১ জুন বিএনপিসহ ১৩টি দল এবং ২৮ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ ১৩টি দলের সঙ্গে ইভিএম বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

বিভি/এইচকে

মন্তব্য করুন: