• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

যেসব বিষয় থাকছে ইসি’র নতুন রোডম্যাপের খসড়ায়

প্রকাশিত: ২২:৫০, ৭ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
যেসব বিষয় থাকছে ইসি’র নতুন রোডম্যাপের খসড়ায়

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রোডম্যাপের খসড়া প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়। এই খসড়া রোডম্যাপে নয়টি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সাতটি বিষয় উল্লেখ করে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছিল কেএম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন। ১৭ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে সংলাপের পর এই রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনকেন্দ্রিক কর্মপরিকল্পনায় সাতটি করণীয় ঠিক করে ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই রোডম্যাপ ঘোষণা করেছিল কেএম নূরুল হুদা কমিশন। ইসির সেই কর্মপরিকল্পনার মধ্যে ছিল- আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার; নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ; সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ; নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ; বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন; নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ। 

নতুন রোডম্যাপের খসড়ায় যা আছে:
আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার; নির্বাচন প্রক্রিয়া সময়োপগীকরণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ; সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ; নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ; বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন; নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা; সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ; নির্বাচনে অধিকতর প্রযুক্তির ব্যবহার; এবং পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন ও নবায়ন কার্যক্রম। 

রোডম্যাপের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) বাংলাভিশনকে বলেন, কমিশন সচিবালয় থেকে একটি রোডম্যাপের খসড়া আমাদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমরা এটি বিচার বিবেচনা করবো। একটি যুযোগপযোগি রোডম্যাপ তৈরি করার চেষ্টা থাকবে। এই রোডম্যাপটা কিন্তু আগের মতো গতানুগতিক নয়। এটি হবে বিশ্লেষণধর্মী এবং রোডম্যাপই কথা বলবে যে, কিভাবে প্রত্যেকটা পদক্ষেপে আমরা নির্বাচনকে বাস্তবায়ন করবো। 

তিনি বলেন, ১৭ জুলাই থেকে আমরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসবো। সংলাপে আমরা প্রত্যেক নিবন্ধিত দলের সঙ্গে আলাদা আলাদভাবে বসে মতবিনিময় করবো। অবশ্যই তাদের ইচ্ছা, পরিকল্পনা আমরা শুনবো। যুক্তিসঙ্গত প্রত্যেকটি জিনিস মেনে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে।  
 
রোডম্যাপের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন,  রোডম্যাপের খসড়া মুটামুটি তৈরি করা হয়ে গেছে। এখন শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করা হয়ে গেলে এটি চূড়ান্ত করা হবে। 

দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নাকি আগে রোডম্যাপ তৈরি করে সংলাপে বসবেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা খসড়াটা করে ফেলেছি, এটি নিয়ে যখন উনাদের সঙ্গে বসবো। আমরা উনাদের কথা শুনবো।  যদি তাদের মতামতের সাথে মিলে যায়, তখন আমরা বলবো আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপনাদের সঙ্গে মিলে গেছে। যেটি মিলবে না, সেটির সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করে উনারা আমাদেরকে কনভিনজড করার চেষ্টা করবে। উনারা যে প্রস্তাব দেবেন সেটি যে আমরা মেনে নেবো সেটি নাও হতে পারে। তখন আমরা তাদেরকে বলবো এইটা করলে এই এই সমস্যা আছে, এই এই সুবিধা আছে। 

আপনাদের রোডম্যাপে বিশেষত্ব কি থাকছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটু পার্থক্য আছে, কারণ আগের কমিশনগুলো রোডম্যাপ তৈরি করে রাজনৈতিক দল বা সুধীজনের সঙ্গে সংলাপে বসেছেন। আমরা কিন্তু তা করিনি। আমরা রাজনৈতিক দল বা সুধীজনের সঙ্গে প্রথমে আলোচনা করেই কিন্তু রোডম্যাপ করছি। অর্থাৎ এতে বুঝা যায় যে, তাদের কথাবার্তার অনেক রিফ্ল্যাকশন এই রোডম্যাপে থাকবে। আমরা রোডম্যাপটি করার জন্য উনাদের পরামর্শ নিয়েছি। এরপর যখন চূড়ান্তটা করবো তখন উনাদের সঙ্গে কথা বলেই। তার মানে এই রোডম্যাপ আমাদের না। এই রোডম্যাপ রাজনৈতিক দলের। 

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নতুন কমিশন নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি অফিস শুরু করে কাজী হাবিবুল আউয়ায় কমিশন। এরপর ১৩ মার্চ দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী, ২২ মার্চ নাগরিক সমাজ, ৬ এপ্রিল প্রিণ্ট মিডিয়ার সম্পাদক/সিনিয়র সাংবাদিক, ১৮ এপ্রিল ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধান নির্বাহী/প্রধান বার্তা সম্পাদক/সিনিয়র সাংবাদিক, ৯ ‍জুন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধি এবং ১২ জুন নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সাথে মতবিনিময় করে কমিশন। 

এছাড়া প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ইভিএম নিয়ে ইতোমধ্যে মত বিনিময় করেছে কমিশন। এখন আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে যন্ত্রটি প্রদর্শন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কারিগরি বিষয়ে প্রশ্নোত্তর, মত বিনিময়ের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে ১৯, ২১ ও ২৮ জুন তিন দফায় নিবন্ধিত ৩৯ টি দলকে ডেকেছিল কমিশন। সেই মতবিনিময় সভায় ২৮ টি দল অংশ নেয়। বাকি ১১টি দল ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি। 

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর প্রথম সংসদ অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ প্রথম অধিবেশন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। সেই হিসেবে ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান সংসদের মেয়াদ রয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংবিধানে সংসদের মেয়ার শেষ হওয়ার আগের নব্বই দিনের কথা বলা হয়েছে। সেই হিসেবে ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বিভি/এইচকে

মন্তব্য করুন: