• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

সব দলকে সংলাপে আনার প্রচেষ্টা থাকবে: ইসি আহসান হাবিব খান

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ১০ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
সব দলকে সংলাপে আনার প্রচেষ্টা থাকবে: ইসি আহসান হাবিব খান

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দেখে মতামত দেওয়ার জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া এই সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় বিএনপিসহ ১১টি দল ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৭ জুলাই থেকে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। আর এই সংলাপে সবাইকে আনার জন্য সত্যিকার অর্থে কমিশনের চেষ্টা থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.)।

তিনি বাংলাভিশনকে বলেন, ১৭ জুলাই থেকে আমরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসবো। সংলাপে আমরা প্রত্যেক নিবন্ধিত দলের সঙ্গে আলাদা আলাদভাবে বসে মতবিনিময় করবো। অবশ্যই তাদের ইচ্ছা, পরিকল্পনার কথা আমরা শুনবো। যুক্তিসঙ্গত প্রত্যেকটি জিনিস মেনে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে। 

চিঠির বাইরেও বিএনপিকে সংলাপে আনার জন্য আপনাদের আরও কোনো উদ্যোগ থাকবে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব দলের কাছে পাঠানো চিঠিতে সময় ও তারিখ উল্লেখ করা হবে। তাদেরকে আমাদের আলোচনার টেবিলে বসানোর জন্য চেষ্টা এবং সদিচ্ছার অভাব নেই। আপনারা দেখেছেন যে, কোনো কোনো দল ইতিপূর্বে আমাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। যদিও আমরা ব্যক্তিগতভাবেও যোগাযোগ করেছিলাম। ভবিষ্যতে যদি কোনো দল এই ডাকে সাড়া দিতে না চান বা না আসেন। সত্যিকার অর্থে তাদের আনার চেষ্টা থাকবে। প্রয়োজনে আমি বা আমরা তাদের সাথে দেখা করতে পারি, টেলিফোনে কথা বলবো যে- আসেন, দেখেন, সিদ্ধান্ত আপনাদের। একটি ফরমাল টেবিলে আপনাদের মতটা প্রকাশ করেন। এই অনুরোধটা করবো। সিইসির সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে যে, তিনিও ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ জানাবেন। তারপর উনাদের ব্যাপার। শুধু আপনারা খেয়াল রাখবেন যে, আমাদের প্রচেষ্টার কোনো অভাব আছে কিনা।

ইভিএমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইভিএম একটি বহুল আলোচিত বিষয়। আপনারা জানেন যে, সেই প্রথম থেকে বিগত চার মাসে আমরা অনেকগুলো সংলাপ, মতবিনিময় করলাম। সর্বশেষ আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের টেকনিক্যাল প্রতিনিধি নিয়ে ইভিএম সম্পর্কে জানার জন্য দাওয়াত দিয়েছিলাম। অনেকেই এসেছিলেন, কেউ কেউ আসে নাই। অনেকেই সমালোচনা করছেন, আলোচনা করছেন। কিন্তু এটা আশ্চর্যের বিষয় যে, আমরা যখন ইভিএম টেস্ট করার জন্য তাদেরকে (রাজনৈতিক দল) ডাকলাম। তখন কিন্তু বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল তাদেরকে (টেকনিক্যাল পারসন) আনেনি। মাত্র দুই-তিন বা তিন-চারটা দল এনেছিল। আর যারা এসেছিলেন তারা তেমন একটা ভূমিকা রাখেননি বা ইভিএম তেমন একটা চেক করেননি। বরং আমি মনে করি ড. জাফর ইকবাল স্যারদের মতো যারা আসছিলেন, তারা কিন্তু আরো গভীরভাবে ইভিএম পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন। তবুও কিন্তু কেউ কেউ (রাজনৈতিক দলের) বিরোধীতা করছেন, কেউ কেউ পক্ষে আছেন, কেউ কেউ পক্ষে আছেন মোডিফিকেশন করার পরে। এভাবে আমাদের সংলাপগুলো শেষ হলো। এখন আমার মনে হয়, আসলে বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা করছে, না সত্যি বিরোধীতা করছে। যদি তাদের ইচ্ছা থাকতো জিনিসটা চেক করার। তারা কিন্তু অবশ্যই সেই সুযোগটা নিতে পারতেন।

আমাদের সমস্ত অডিও এবং ভিডিও রেকর্ড আছে। কে কি বলেছেন, সেগুলো আমরা পর্যালোচনা করছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে সংসদে একটি আসনও নাই। কিন্তু তারা বলছেন আমরা ১৮ কোটি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছি। এটিই রাজনীতি। রাজনৈতিকভাবে তারা অনেক কিছু বলতে পারেন। যন্ত্রের উপর আমাদের কোনো সন্দেহ নেই, আমার কোনো সন্দেহ নেই। যাদের আমাদের উপর আস্থা কম, সেই আস্থা অর্জনের জন্যই কিন্তু আমরা ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা অবশ্যই একদিন হয়তো সুফল দেখতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা কিন্তু এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি যে, কতটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করবো। গত কয়েকমাসের পর্যবেক্ষণ এবং চার মাসে আমরা ১৭০টির বেশি নির্বাচন করেছি। যেগুলো আপনারা নিজেরাই পর্যবেক্ষণ করেছেন, বিশেষ করে কুমিল্লা এবং অন্যান্য পৌরসভা নির্বাচনের আমরা সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করে পর্যবেক্ষণ করেছি। আপনারা অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। একটি হাউজ থেকে চার-পাঁচজনও ছিলেন। আপনাদের কাছে যদি বলি নির্বাচন কেমন দেখলেন, তাহলে অবশ্যই আপনারা বলবেন ভালো হয়েছে।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা যদি ইভিএম এবং ব্যালটের সঙ্গে তুলনা করি, তাহলে আপনারা নিজেরাও জানেন ব্যালটে কিভাবে ভোট দেওয়া যায়, আর এটাও জানেন ইভিএমে কিভাবে ভোট দেওয়া যায়। ইভিএমে কি আমার ভোট আরেকজন দিতে পারবে? অবশ্যই পারবে, তবে আমার হাতের আঙুলের ছাপ নেওয়ার পরে অন্য কেউ যদি ব্যালট ইউনিটে চাপ দেয়। সেটির নিরাপত্তার জন্য কিন্তু আমরা ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি। সেটি নিরাপত্তার জন্য আমরা সাংবাদিকদের গোপন কক্ষ ছাড়া সব জায়গায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছি এবং সকল প্রকার দেশি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দিয়েছি। ভবিষ্যতেও এগুলো অনুমতি দেওয়া হবে। এভাবে আমরা সুপারভিশনের মাধ্যমে সিসি ক্যামেরা, আপনারা (গণমাধ্যম), নির্বাচন পর্যবেক্ষক, এছাড়াও আমরা আরো অনেককিছু চিন্তা করছি যে, কিভাবে আরও স্বচ্ছ ও ট্রান্সপারেন্ট করতে পারি। বিএনসিসি, স্কাউটদেরও ভোটের সময় ব্যবহার করার চিন্তা আমাদের আছে। স্কাউটের ছেলেরা যখন কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরবে, তখন যারা পথভ্রষ্ট ভোটার বা জোর করে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে, তারা শুধরে চলার চেষ্টা করবে। আরো প্রকেটশন আমরা নেবো। আমাদের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই। একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, অবাধ এবং সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই।

ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি, আমি সেই সিদ্ধান্তটা নেবো। যে সিদ্ধান্ত দ্বারা জনগণ উপকৃত হবে, যার ভোট সে দিতে পারবে, সন্ত্রাস মুক্ত, অনিয়ম মুক্ত একটি নির্বাচন হবে এবং যেইটার নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকবে।

আরপিও সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আরপিওতে কিছু কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। যেটি আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। যাতে করে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আরো বাড়ানো যায়। নির্বাচন কমিশন যাতে সঠিকভাবে কর্মপরিধী বাস্তবায়ন করতে পারে। কিছুকিছু জায়গায় যে দুর্বলতা ছিল, সেটি হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা নির্বাচনের কাজে যে সকল ব্যক্তিবর্গ নিয়োজিত থাকে, তারা যদি বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই বিষয়ে পরিস্কার কোনো বক্তব্য ছিল না। সেই ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তারা যেন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সেটি উল্লেখ করা হবে।

রোডম্যাপের বিষয়ে তিনি বলেন, কমিশন সচিবালয় থেকে একটি রোডম্যাপের খসড়া আমাদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমরা এটি বিচার বিবেচনা করবো। একটি যুযোগপযোগি রোডম্যাপ তৈরি করার চেষ্টা থাকবে। এই রোডম্যাপটা কিন্তু আগের মতো গতানুগতিক নয়। এটি হবে বিশ্লেষণধর্মী এবং রোডম্যাপই কথা বলবে যে, কিভাবে প্রত্যেকটা পদক্ষেপে আমরা নির্বাচনকে বাস্তবায়ন করবো।

বিভি/এইচকে

মন্তব্য করুন: