• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বিঘ্নিত এনআইডি সংশোধন ও ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম, সার্ভারও ক্রাশ করছে

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ১১ জুলাই ২০২২

আপডেট: ১৭:২৭, ১১ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
বিঘ্নিত এনআইডি সংশোধন ও ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম, সার্ভারও ক্রাশ করছে

ইন্টারনেটের গতি কম থাকাসহ নানান করণে মাঠপর্যায়ে বিঘ্নিত হচ্ছে চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদের নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন কার্যক্রম। এছাড়া মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন অফিসের সার্ভারও ক্রাশ করছে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সমন্বয় সভায় বিষয়টি তুলে ধরেন মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। সভায় এসব সমস্যা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে গত ২৭ জুন সমন্বয় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, ওই সভায় ময়মনসিংহের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান যে, জেলায় বিদ্যমান ল্যাপটপের মাধ্যমে কোন রকমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে। ইসি থেকে পাঠানো ল্যাপটপে ইউএসবি পোর্ট সংখ্যা কম থাকায় হাবের মাধ্যমে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, সিগনেচার প্যাড, ক্যামেরা, প্রিন্টার সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে সংযোগ বিঘ্নিত হওয়ায় রেজিস্ট্রেশন কর্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। 

সভায় বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যমান সার্ভারগুলো প্রায় ক্রাশ করছে। ইতোমধ্যে বরিশাল অঞ্চলের ছয়টি সার্ভার ক্রাশ করেছে। অনেক সময় মেরামত করার পরেও সার্ভার ক্রাশ করছে। এভাবে সার্ভার ক্রাশ করলে অনেক ডাটা মিসিং হতে পারে। 
 
ল্যাপটপ, ক্যামেরার পাশাপাশি প্ল্যাস্টেক স্ক্যানারের স্বল্পতার কারণেও ভোটার রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম (প্রুফ রিডিং) বিঘ্নিত হচ্ছে সভায় জানান ঢাকার সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। তিনি জানান, এছাড়া হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তাই প্রতি উপজেলায় টিম ভিত্তিক জেনারেটর সরবরাহ করা প্রয়োজন। 
   
সভায় তিনি আরও জানান, মাঠপর্যায়ে পাঠানো হাবগুলো নিম্নমানের হওয়ায় ভোটার রেজিস্ট্রেশনের যন্ত্রপাতি (ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, সিগনেচার প্যাড, ক্যামেরা, প্রিন্টার) সঠিকভাবে সংযোগ পায় না। 

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রাজশাহী জানান, রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে অনেকসময় বিদ্যুৎ না থাকায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। তাই প্রতিটি রেজিস্ট্রেশন টিমে জেনারেটর সরবরাহ করা প্রয়োজন। 

এই বিষয়ে বাজেট শাখার উপসচিব জানান, এরআগে শুধুমাত্র বরিশাল অঞ্চলে জেনারেটর কেনার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।    

এরপর বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান যে, ২২টি উপজেলায় জেনারেটর কেনার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জেনারেটরগুলো বড় হওয়ায় বহনযোগ্য নয়। সেই সঙ্গে জ্বালানী খরচ অনেক বেশি (৫ লিটার/ঘণ্টা)। 

সভায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর বলেন, এনআইডি সংশোধন কার্যক্রমে সকল ক্যাটাগরির পেন্ডিং আবেদন দ্রুত নিষ্পন্নসহ সেবা প্রার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। 

সেই সঙ্গে ‘ক’ ক্যাটাগরির কোন আবেদন যেন পেন্ডিং না থাকে, সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। 

এছাড়া কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় গতি কম থাকায় এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে পেন্ডিং আবেদন দিন দিন বাড়ছে। 

সভায় নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) মহাপরিচালক মো. আব্দুল বাতেন জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদ শীর্ষক প্রশিক্ষণের সময় প্রশিক্ষণার্ণীরা ইন্টারনেট কানেকটিভিটি/গতি সংক্রান্ত সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছিলেন আইসিটির সিস্টেম ম্যানেজার। 

ইটিআইয়ের মহাপরিচালক আরও জানান, এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম তথা ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে ইন্টারনেট কানেকটিভিটি/গতি অতি গুরুত্বপূর্ণ। 

এই বিষয়ে সিনিয়র মেইনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার বেগম ফারজানা আক্তার জানান, সকল উপজেলায় বিটিসিএল ক্যাবল পুলিংয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে রাউটার কনফিগারেশনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। রাউটার কনফিগারেশনের কার্যক্রম সম্পন্ন হলে উপজেলা পর্যায়ে একইসঙ্গে ভিপিএন এবং মডেমের মাধ্যমে কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে। তখন ইন্টারনেট কানেকটিভিটি/গতি সংক্রান্ত সমস্যা থাকবে না। 

ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর থেকে এনআইডি সেবা ফ্রি ছিল। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে হারানো এনআইডি তোলা ও সংশোধন সেবায় ফি নেওয়া শুরু করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

ইসি সূত্র জানায়, ২০০৭-২০০৮ সালের ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর ২০০৯, ২০১২, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৭ এবং সর্বশেষ ২০১৯-২০২০ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। বর্তমানেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারতের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

সর্বশেষ গত ২ মার্চ ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন নারী এবং ৪৫৪ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।

বিভি/এইচকে

মন্তব্য করুন: