• NEWS PORTAL

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

হিরো আলমের অভিযোগ ভিত্তিহীন: ইসি রাশেদা

প্রকাশিত: ১৮:১৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ১৮:৩৭, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
হিরো আলমের অভিযোগ ভিত্তিহীন: ইসি রাশেদা

বগুড়া-৬ (সদর) ও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) সংসদীয় আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের তোলা অভিযোগের ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। হিরো আলমের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, রেজাল্ট হান্ড্রেড পারসেন্ট সঠিক। এসব নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা থাকলে পর্যবেক্ষণ করতে ভালো হয় বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

রাশেদা সুলতানা বলেন, ভোটের আগে যে প্রক্রিয়াগুলো বা আচরণবিধি যে, খুব একটা ভঙ্গ হয়েছে তা আমাদের কাছে মনে হয়নি। কোনো কিছু আমার নোটিশে আসলে সঙ্গে সঙ্গে আমি ডিসি, এসপিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দৃষ্টিতে দিয়েছি। কোনো প্রার্থী কিন্তু কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেননি। নির্বাচনের পূর্বের প্রস্তুতি ভালো ছিলো। আর ভোটের দিন ব্যাপক কি, কোনো অনিয়মই হয়নি আমার দৃষ্টিতে। বিশেষ করে নর্থ বেঙ্গলে বড় ধরণের কারচুপি, ভেতরে ভোট ডাকাতি বা এর ভোট ও দিয়েছে এ রকম কিছু হয়নি। আমার মনে হয় পুরো ভোটটা সন্তুষ্টজনক হয়েছে।

তিনি বলেন, পত্রিকায় যেটুকু দেখেছি হিরো আলম সাহেব তার একটু আপত্তি বা উনি একটু অসন্তুষ্ট হয়েছেন। গণমাধ্যমে আসার পর আমরা মূলত এটা নিয়েই সকাল থেকে আমলে নিয়ে রেকি করার চেষ্টা করেছি। বগুড়ার ডিসির সাথে কথা বলা, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিসার, টিএনও সাহেবের প্রত্যেকের সাথে আমরা কথা বলেছি। স্যার (সিইসি) নিজে কথা বলেছেন। ডিসি সাহেব আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে, রেজাল্ট হান্ড্রেড পারসেন্ট সঠিক।

এই নির্বাচনের বিষয়ে আর তদন্তে যাবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের কাছে যে রেজাল্ট শিট আছে,আমরা নিজেরাও একটু ক্যালকুলেট করে দেখলাম যে, কোথাও কোনো ব্যত্যয় নেই। আমাদের দেশের কালচারটা কিন্তু এরকমই যে, একজন প্রার্থী যখন হেরে যায় তখন নানান ধরণের প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রবণতা দেখা যায়। শুধু হিরো আলম সাহেব না, আমরা যতগুলো নির্বাচন করলাম সব জায়গাতেই এই ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করেছি।

হিরো আলমের এজেন্টকে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল দেওয়া হয়নি। এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি যে, উনি নন্দিগ্রামে এজেন্ট দেননি।  ডিসি সাহেবের সঙ্গে আমার যেটা কথা হয়েছে, তিনি আমাকে বলেছেন যে স্যার আমি নিজে কেন্দ্র ভিজিট করেছি অনেকগুলা। উনার কোনো এজেন্ট পাইনি। কাহালুতে উনার কিছু এজেন্ট ছিলো। সেখানে অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট নাই বা রেজাল্ট দেওয়া হয়নি এমন কোনো অভিযোগ কিন্তু নাই। উনি (হিরো আলম) হেরে গেছেন, উনার কষ্ট হয়েছে। কষ্ট নানানভাবে প্রকাশ করছেন। উনি এটা করতেই পারেন। একজন মানুষ বললেই তো আর সেটা হয়ে যায় না। প্রমাণ তো থাকতে হবে।

ওয়েব সাইটে ফলাফল প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো সরকারিভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। আমরা যেটি পেয়েছি সেটি বেসরকারিভাবে। আসার পরে আমরা ওয়েবসাইটে দিয়ে দেবো।  

অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকেই মুখে বলে ঝড় তোলে কিন্তু প্রমাণ নিয়ে আমাদের কাছে আসে না। আমাদের কালে যত নির্বাচন হয়েছে তারা কেউ আদালতে গেছে বলে আমার তো জানা নেই। কুমিল্লা (কুমিল্লা সিটি করপোরেশন) নিয়ে এতো কথা হলো। কই উনারাতো আদালতে গেলেন না। উনি (হিরো আলম) বলেছেন যাবো, গেলে যাবেন। আমি তো অনেক কথাই মুখে বলতে পারি। তা প্রমাণ তো হতে হবে। অভিযোগ দেওয়া আর অভিযোগ প্রমাণ করা দুইটার মধ্যে কিন্তু অনেক ফারাক।

ইভিএমের ভোটে রেজাল্ট দিতে দেরি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর কিন্তু অনেক কাজ থাকে। চারটা, পাঁচটা রেজাল্ট শিট তৈরি করতে হয়। সবগুলো যখন কম্পাইল্ড করতে যায় বা দিতে যায়  বারে বারে কিন্তু তা চেক ক্রস চেক করতে হয়।  তা নাহলে হুট করে যদি একটা ভুল হয়ে যায়, ভুল হতেই পারে। এ জন্য মিলাতে সময় লেগে যায়। সবগুলো মিলিয়ে প্রস্তুত করতে সময় লেগে যায়। আর একটা জিনিস আমি বলবো সব মানুষের এক ধরণের ক্যাপাসিটি থাকে না। নতুনদের কাজগুলো রপ্ত করতে সময় লাগে। সবাই হান্ড্রেড পারসেন্ট দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারবে এটা আশা করা যায় না।

সিসি ক্যামেরা না থাকার কারণে ভোট পর্যবেক্ষণে সমস্যা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ডিরেক্ট একটা জিনিস আমি দেখতে পাচ্ছি। সেটা যে ধরণের আর ভায়া মাধ্যম হয়ে আসতে এটার যে অসুবিধা এটা তো থাকবেই। আমি স্বীকার করলেই কি আর না করলেই কি। এটা তো অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। সিসি ক্যামেরা থাকলে অবশ্যই ভালো হয়। সিসি ক্যামেরা থাকলে আমরা নিজের চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছি। তাই যদি না হবে তা হলে সব মহল থেকে কেনো বলবেন যে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করেন। আমি মনে করি সিসি ক্যামেরা থাকলে আরও অনেকবেশি স্বচ্ছভাবে কাজ করা সহজ হয়। এটি বলতে কোনো দ্বিধা নেই।

সামনের নির্বাচনগুলোতে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি নিয়ে আমি অনেকবার বলেছি। এটি নিয়ে নতুন করে কিছু বলতে চাই না।

আগামী নির্বাচনের জন্য এটি নেতিবাচক বার্তা বহন করবে কি-না জানতে  চাইলে তিনি বলেন, আমার মনে হয় না। আমি সব সময় নিজের ভেতর যদি নেতিবাচকটা খুঁজে বের করি তাহলে কিন্তু আমার জন্য সবকিছু নেতিবাচক। আর আমি যদি পজেটিভ চিন্তা করি, তাহলে আমি কিন্তু নেতিবাচক কিছু দেখবো না। যারা আমাদের কাজ পছন্দ করবে না, তারা কোনোদিনই করবে না।

যেগুলো নিয়ে অভিযোগ আছে সেগুলো আমরা অবশ্যই যাচাই বাছাই করবো। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে এটা মনে হচ্ছে না যোগ করেন তিনি।

বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয়টি (ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২) আসনের উপনির্বাচনে বুধবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন: 

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন: