কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন অর্থনীতি বিটের সাংবাদিকরা

ছবি: সংগৃহিত
অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) নেতৃবৃন্দরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘সাংবাদিকরা জনগণ ও সরকারের সহায়ক হিসেবে কাজ করেন। তাই অর্থনৈতিক এ সংকটের সময়ে এখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশের ওপর বিধি-নিষেধ তুলে নিতে হবে। তা না হলে আগামীতে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
বুধবার (১৫ মে) রাজধানীর পুরানা পল্টনে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) অনুষ্ঠিত এক সভায় সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। ‘সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা আরোপ বিষয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে অবহিতকরণ’ বিষয়ক এ সভার আয়োজন করা হয়। জাতীয় প্রেসক্লাব, বিভিন্ন সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা এতে বক্তব্য রাখেন। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
ইআরএফ সভাপতি বলেন, গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে তথ্য সংগ্রহে বাধা ও অবাধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে কী করতে পারি এ বিষয় পরামর্শ ও মতামত নিতে এ আয়োজন করা হয়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে সাংবাদিকদের স্বার্থে সবাইকে পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানান ইআরএফ সভাপতি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। কারণ বর্তমান যুগে তথ্য গোপন রাখা সম্ভব নয়। যে কোনো উপায়ে তথ্য-ফাইল বের হবেই। রিজার্ভের যে অর্থ চুরি হয়েছে সে সময় চোরকে কি বাংলাদেশ ব্যাংকে আসতে হয়েছে? চোরকে তো বাংলাদেশের সীমানায় আসতে হয়নি। এখন সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে লুটপাটের তথ্য আড়াল করা যাবে না।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শুকুর আলী শুভ বলেন, সাংবাদিক যদি বাংলাদেশে থাকে তথ্য তাকে দিতেই হবে। যখনি তথ্য দেবে না তখনি লুকোচুরির বিষয় থাকবে, বলেই আমরা ধরে নেব। আমাদের অধিকার আমাদের আদায় করে নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গেট বন্ধ করে অবস্থান নেব, প্রয়োজনে প্রেস ক্লাবের রাস্তা বন্ধ করে অবস্থান-কর্মসূচী পালন করব।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাংবাদিকদের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে শুধু ব্যাংক রিপোর্টার বা অর্থনীতির রিপোর্টারদের অসম্মান করা হচ্ছে না, এটি পুরো গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরা হচ্ছে। আমাদের সবার উচিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অবস্থান নেওয়া। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তার দুর্নীতির ফাইল জমা হয়ে আছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করলে তারা নিজেরাই আমাদের কাছে চলে আসবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ইআরএফের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ইআরএফের সাবেক সভাপতি মনোয়ার হোসেন, বেসরকারি বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের (ইউএনবি) উপদেষ্টা সম্পাদক ফরিদ হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন- ডিইউজের (একাংশ) সভাপতি সোহেল হায়দায় চৌধুরী, সাজ্জাদ আলম খান তপু, ডিইউজের অপর অংশের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, ইআরএফের সিনিয়র সদস্য সোহেল মঞ্জুর, ইআরএফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, এস এম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: