কাবা শরীফের আদলে ঢাকায় ৩শ’ কোটি টাকার মসজিদ
চোখধাঁধানো এই মসজিদের নাম মসজিদ আল মুস্তাফা। এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ সামনের দিকে কালো রংয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পবিত্র কাবা শরীফের আকৃতি। দেয়ালে সোনালী রং দিয়ে লেখা হয়েছে আল্লাহ তায়ালার পবিত্র নাম আল্লাহ এবং তার প্রিয় বান্দা শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর নাম। যা সৌন্দর্য দূর থেকেই অবলোকন করা যায়।
ভেতরে মেম্বরের দেয়ালের ডিজাইনও একই। উপরের দিকে বড় করে সোনালী রং দিয়ে লেখা হয়েছে-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুল্লাহ (স.)। ইউনাইটেড গ্রুপের আইকনিক এই প্রজেক্ট মসজিদ আল মুস্তাফায় বেশ কিছু ভিন্নতা দেখা গেছে। নামাজের সাড়িতে বেশ কয়েকটি বেঞ্চ রাখা হয়েছে। যা অন্য কোনো মসজিদে দেখা যায় না। কেউ ক্লান্ত হলে বসতে পারেন। আবার কেউ হেলানও দিতে পারেন।
মসজিদটি রাজধানীর ১০০ ফিটে মাদানি এভিনিউয়ে ইউনাইটেড সিটিতে অবস্থিত। এটি ইউনাইটেড গ্রুপের একটি আইকনিক প্রজেক্ট। পাঁচতলা বিশিষ্ট এই মসজিদে আলাদা কোনো জানালা নেই। এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, যা প্রাকৃতিক আলোয় ভরপুর। দেশের অন্যকোনো মসজিদের প্রতিটি ফ্লোর থেকে ইমাম বা খতিব দেখা যায় না। কিন্তু মসজিদ আল মুস্তাফার প্রতিটি ফ্লোর থেকেই ইমাম বা খতিবকে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, নারীদের জন্য রয়েছে আলাদা নামাজের জায়গা। পুরুষ-নারী মিলিয়ে এক সাথে প্রায় ১১ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।
দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য্যের কারণে এটি এখন শুধুমাত্র মসজিদই নয়, পরিণত হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রে। দেশের বিভিন্ন এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন দেখতে আসেন এই মসজিদের অপরুপ সৌন্দর্য্য। মসজিদের চারপাশে চারটি আরবের খেজুর গাছ লাগানো হয়েছে। যার কোনোটিতে খেজুরও দেখা যায়। রয়েছে চোখ জুড়ানো পানির ফোয়ারা। দর্শনার্থীরা বিমোহিত হয় এর গঠন কাঠামো আর চারপাশের সবুজে ঘেরা প্রকৃতির ছোঁয়ায়।
মসজিদ আল মুস্তাফায় রয়েছে দুটি চলন্ত সিড়ি। ১৬ লাখ টাকা ব্যায়ে লাগানো হয়েছে ঝাড় বাতি। যা এখনো চালু হয়নি। চীন থেকে আনা হয়েছে মেঝেতে বিছানোর কার্পেট। লাগানো হয়েছে উন্নত মানের সাউন্ড সিস্টেম। একটি সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনের মাধ্যমে শীতল রাখা হয় মসজিদকে। আকর্ষনীয় করে তৈরা হয়েছে মসজিদের ওজুখানা। যেখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি বেসিনও। যারা গাড়ি নিয়ে নামাজে আসেন তাদের জন্য রয়েছে স্বস্তি। কারণ মসজিদের নিচে বিশাল পার্কিংয়ে ১০৫ টি গাড়ি রাখা যায়। জনশ্রুতি আছে- মসজিদ আল মুস্তাফার নির্মাণ খরচ তিনশ’ কোটি টাকার বেশি।
সুউচ্চ বিশেষ ধরনের একটি গম্বুজ রয়েছে। যার রং সোনালী। গম্বুজ ও পাশে থাকা বিশাল উচ্চতার মিনারের কাজ এখনো শেষ হয়নি। তারপর গম্বুজ ও মিনারটি মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
রাতে যখন মসজিদের সব বাতি জ্বলে ওঠে, তখন যেন তৈরী হয় বিমুগ্ধতায় ছোয় এক অপার্থিব পরিবেশ। যে পরিবেশে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে সৎ পথে চলতে। সততা আর বিবেক দিয়ে গড়তে নতুন জীবন।
বিভি/এনএম
মন্তব্য করুন: